Site icon Jamuna Television

অক্সফোর্ড গ্রাজুয়েটের ঠিকানা রেলস্টেশনের প্লাটফরম!

বিশ্বের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ধরা হয় ব্রিটেনের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়কে। এখানে পড়তে হলে যেমন বিশেষ যোগ্যতা থাকতে হয়, তেমনি এখান থেকে পাশ মানুষও সমাজের মর্যাদার সাথে সুপ্রতিষ্ঠিত হয়ে থাকেন। তবে এর ব্যতিক্রম ধরা পড়েছে ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে। তার নাম রাজা সিং ফুল। সম্প্রতি ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে তার কাহিনী তুলে ধরেছেন দিল্লিরই বাসিন্দা অবিনাশ সিং।

অবিনাশ তার পোস্টে জানান, ৭৬ বছর বয়সী রাজা সিংয়ের ঠিকানা নয়াদিল্লি রেলস্টেশন। দিনভর জীবিকার অন্বেষনে শহরজুড়ে ঘুরেফিরে রাতে এসে মাথা গোঁজেন রেলের প্লাটফরমে। প্রায় ৪ দশক ধরেই নাকি তার এমন অবস্থা।

অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা শেষ করার পর বড় ভাইয়ের চাপাচাপিতে ষাটের দশকের শেষে রাজা দেশে ফিরে আসেন। মুম্বাইতে শুরু করেন মোটর পার্টসের ব্যবসা। কিন্তু ভাইয়ের অকাল মৃত্যুর পর সে ব্যবসায় ধস নামে। এরপর আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেননি।

জীবনের চরম দুঃসময়ে সন্তানরাও তাকে ছেড়ে গেছে। ঋণ করে অর্থ জোগাড় তাদের বিদেশে পাঠিয়েছিলেন উচ্চশিক্ষার জন্য। দুই ছেলেই এখন আমেরিকা আর বিলেতে থাকে। বাবাকে দেখার সময় তাদের নেই।

অভাব অনটনে রাস্তায় নামতে হলেও কখনও ভিক্ষা করেননি রাজা সিং। রাজধানীতে একটা ভিসা সেন্টারের আশেপাশে ঘোরাঘুরি করেন, আর কেউ চাইলে ভিসা ফরম পুরণে সহায়তা করেন। কখনও পঞ্চাশ, কখনও একশো রুপি পান। এতেই তার দিন চলে যায়।

অবিনাশ সিংয়ের ওই ফেসবুক পোস্ট দেয়ার সাথে সাথে তা ভাইরাল হয়ে যায়। পোস্টটি সাড়ে ৪ হাজারের বেশি শেয়ার হয়েছে, কমেন্টও পড়েছে হাজারের বেশি। ভাগ্যপীড়িত রাজা সিং ফুলের দিকে সহানুভূতি আর সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন অনেকে।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কল্যানে ৭৬ বছর বয়সী রাজা সিংকে এখন আর প্লাটফরমে ঘুমাতে হয় না। তার জায়গা হয়েছে দিল্লির রাজেন্দ্র নগরে গুরু নানক সুখশালা নামের এক বৃদ্ধাশ্রমে। মানুষের কাছ থেকে এমন সাড়া আর ভালোবাসা পেয়ে তিনি অভিভূত।

Exit mobile version