এতোদিন বড়ভাই নওয়াজ শরিফের ছায়ায় থাকা শাহবাজ শরিফ নিজেই এবার পাকিস্তানের রাজনীতির মূল চরিত্রে। শরিফ পরিবারের দ্বিতীয় ব্যক্তি হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর আসনে বসা অনেকটা নিশ্চিত তার। অবশ্য প্রশাসনে দীর্ঘ অভিজ্ঞতা শাহবাজের। তিনবার ছিলেন পাকিস্তানের সবচেয়ে জনবহুল রাজ্য পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী। দক্ষ প্রশাসক হিসেবে খ্যাতি থাকলেও দেশ পরিচালনায় কতোটা সফল হন সেটাই দেখার বিষয়।
পাঞ্জাবে মুখ্যমন্ত্রী দায়িত্ব পালনের সময় নিজের সক্রিয়তার জন্যই সবার নজর কেড়েছেন শাহবাজ খান। তার শাসনামলে অবকাঠামোগত ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে রাজ্যটিতে। প্রশাসনিক দক্ষতার জন্য কাজের মানুষ তকমা পেয়েছেন শাহবাজ।
নওয়াজ শরিফ জাতীয় রাজনীতিতে নেতৃত্ব দিলেও শাহবাজ এতোদিন পড়ে ছিলেন পাঞ্জাবের আঞ্চলিক রাজনীতি নিয়েই। মূলত তিনবারের প্রধানমন্ত্রী বড়ভাই দুর্নীতি মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়ে দেশ ছাড়ার পরই দায়িত্ব নেন পাকিস্তান মুসলিম লিগের। যার ধারাবাহিকতায় এখন দায়িত্ব নিতে হচ্ছে পুরো দেশের।
পাকিস্তানের অন্যতম ধনী ব্যবসায়ী পরিবারের সদস্য শাহবাজের রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শুরু ১৯৮৮ সালে প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য হওয়ার মাধ্যমে। ৯৭ সালে প্রথম দফায় নির্বাচিত হন পাঞ্চাবের মুখ্যমন্ত্রী। অবশ্য বেশিদিন স্থায়ী হয়নি সেই ক্ষমতা। ১৯৯৯ সালে সেনা অভ্যুত্থানের পর তাকে দেশ ছেড়ে পালাতে হয়।
সৌদি আরবে দীর্ঘ ৭ বছর নির্বাসনে থেকে দেশে ফিরলেও পাঞ্জাবে জনপ্রিয়তা কিংবা প্রভাব কমেনি মোটেও। ২০০৮ ও ২০১৩-র নির্বাচনে পরপর দুবার পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচিত হন শাহবাজ।
প্রধানমন্ত্রী কিংবা বিরোধী দলীয় নেতা, সব ভূমিকাতেই ভাই নওয়াজ শরিফের বিশ্বস্ত সহযোদ্ধা ছিলেন শাহবাজ। দুজনের রাজনৈতিক দর্শনও অভিন্ন। যদিও বিশ্লেষকরা মনে করেন কাজ আদায় ও রাজনৈতিক সমঝোতার দক্ষতায় ভাইয়ের চেয়েও এগিয়ে শাহবাজ শরিফ। বলা হয়, নওয়াজের তুলনায় সেনাবাহিনীর সাথে তার সম্পর্ক ভালো। চীনের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত শাহবাজের সুসম্পর্ক আছে পশ্চিমাদের সাথেও।
অবশ্য, নওয়াজের মতোই শাহবাজের ব্যাপারে অভিযোগ রয়েছে ব্যবসায়ীদের স্বার্থ রক্ষার। আছে দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগও। সৌদি আরব, লন্ডন এবং দুবাইয়ে বিপুল সম্পত্তি রয়েছে তার। অভিজাত ব্যবসায়ী ও রাজনীতিবিদ পরিচয় ছাপিয়ে শাহবাজের ব্যক্তিজীবন নিয়েও আছে নানা রসালো গুঞ্জন। ৭০ বছর বয়সী এ নেতা তিনবার বসেছেন বিয়ের পিড়িতে।
/এডব্লিউ
Leave a reply