Site icon Jamuna Television

ব্যাংকের চোখ ফাঁকি দিয়ে প্রতারণা, অপকর্ম করে আটক দম্পতি

আটক প্রতারক দম্পতি।

ব্যাংকের চোখ ফাঁকি দিয়ে ক্যাশ ডিপোজিট মেশিনের অপব্যবহার করছে একটি চক্র। সেই সুযোগ নিয়ে বিভিন্ন কোম্পানি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে টাকা ও পণ্য হাতিয়েও নিচ্ছে চক্রটি। প্রযুক্তির দুর্বলতার সুযোগে দীর্ঘদিন ধরে ওই দম্পতি অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে বলে তথ্য পেয়েছে ডিবি পুলিশ। বেশ কয়েকটি মামলার পর অবশেষে গোয়েন্দার জালে ধরা পড়েছে প্রতারক দম্পতি।

মোবাইলে একজন ক্রেতার কল পেয়ে পণ্য বিক্রি করতে রাজি হন রাজধানীর বায়তুল মোকাররম মার্কেটের ইলেকট্রনিকস ব্যবসায়ী তারেক। সেই ক্রেতা ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে দেড় লাখ টাকায় কিছু পণ্য কেনে। তারেকের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে টাকা জমা হয়েছে এমন এসএমএস পেয়ে পণ্য দিয়েও দেন। কিন্তু পরে দেখা যায়, অ্যাকাউন্টে টাকা জমার এসএমএস আসলেও টাকা আর জমা হয়নি। ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী তারেক বলেন, ৫৫ ইঞ্চি টিভি কেনার কথা নিশ্চিত করে তারা। অ্যাকাউন্টে টাকা প্রবেশের চেষ্টাও করে। একটা এসএমএসও আসে। সিডিএম মেশিনে খালি খাম প্রবেশ করা হয়। পরে জানা যায় টাকা ঢোকেনি।

এ নিয়ে জিডি ও মামলার পর দীর্ঘ তদন্ত করে জাহিদ হাসান রনি ও উম্মে হাবিবা নামের দম্পতির খোঁজ পায় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের সাইবার ক্রাইম ডিভিশন। পুলিশ বলছে, রনি ও হাবিবা প্রথমে পুলিশ কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে আস্থা অর্জন করে। পরে শুরু হয় তাদের প্রতারণা। যেসব ব্যাংকের এটিএম ক্যাশ ডিপোজিট বুথে কাগজে লিখে টাকা জমা দিতে হয়, সেখানে শুধু সংখ্যায় এক লাখ বা ৫০ হাজার লেখা হয়। আদতে খামের মধ্যে রাখা হয় এক হাজার বা ৫০০ টাকা। এরপর উল্লিখিত অ্যাকাউন্টে পরিমাণ দেখায় এক লাখ কিন্তু, টাকা যায় ৫০০।

এক ভুক্তভোগী বলেন, ফেব্রুয়ারির ২২ তারিখ বিকেল ৪টায় এক ব্যক্তি ফোন করে বলে, আপনার একটি ক্যামেরা নেবো আমি। ক্যামেরার মূল্য কত? ৫৫ হাজার টাকা মূল্যের কথা জানাই আমরা। ডিবি পুলিশের পরিচয় দেয় সে প্রথম থেকেই।

আরেক ভুক্তভোগীর ভাষায়, পণ্যের দাম এসেছে ৩০ হাজার টাকা। সেই ব্যক্তি ৩৯ হাজার টাকা আমাদের অ্যাকাউন্টে দিয়েছে। ব্যাংকের যে সিডিএম মেশিনে সে টাকা দিয়েছে, সেখানে ৫০০ টাকা দিয়ে ৩৯ হাজার টাকা ডিপোজিট করেছে।

ঢাকায় এরকম বেশ কয়েকটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে এই চক্রের প্রতারণার দায়ে ৭টি থানায় মামলা ও জিডি হয়েছে। অবশেষে, গোয়েন্দা জালে ধরা পড়েন রনি ও হাবিবা। ডিএমপির ডিবি সাইবার ক্রাইম ডিভিশনের উপ-কমিশনার তারেক বিন রশিদ বলেন, এমনটা তো আছেই। তার সাথে আরও আছে। যেমন, প্লেনের টিকিট করে দেয়া বা হোটেল রুম বুক করে দেয়ার মতো যেসব ক্ষেত্রে অনলাইনে টাকা ট্রানজেকশনের সুযোগ থাকে, সেখানে টাকা আত্মসাতের ঘটনাগুলো ঘটে।

এসব প্রতারণা রুখতে সচেতনতার পাশাপাশি বুথগুলোতে আধুনিক ক্যাশ ডিপোজিট মেশিনের ব্যবহার বাড়ানো দরকার বলে মনে করে পুলিশ। জমা দেয়ার পূর্ণাঙ্গ নিশ্চয়তা পাওয়ার আগে কোনো ধরনের পণ্য সরবরাহ না করার জন্যও ব্যবসায়ীদের আহ্বান জানান ডিবি সাইবার ক্রাইম ডিভিশনের উপ-কমিশনার তারেক বিন রশিদ।

এম ই/

Exit mobile version