Site icon Jamuna Television

বিশ্বব্যাপী নতুন আতঙ্ক মাংকিপক্স: জেনে নিন এর লক্ষণ ও উপসর্গ

ছবি: সংগৃহীত।

করোনাভাইরাসের পর বিশ্বব্যাপী নতুন আতঙ্কের নাম মাংকিপক্স। আশঙ্কাজনকহারে ছড়াচ্ছে বিরল এই রোগ। প্রথমে যুক্তরাষ্ট্রে শনাক্তের খবর মিললেও ইউরোপ-আমেরিকার বিভিন্ন দেশ আর অস্ট্রেলিয়ায় মিলছে আক্রান্ত ব্যক্তি। স্বাস্থ্যবিদরা বলছেন, ছোঁয়াচে কম হওয়ায় মৃত্যুঝুঁকি নেই। তবে, আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে থাকায় সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তারা। সিএনএন ও দ্য টেলিগ্রাফে প্রচারিত প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে বিরল এই রোগের লক্ষণ, উপসর্গ ও বিস্তারের পথ।

মধ্য ও পশ্চিম আফ্রিকায় কখনো কখনো দেখা মেলে মাংকিপক্সের। কিন্তু, গেলো সপ্তাহে প্রথমবার যুক্তরাষ্ট্রে শনাক্ত হয় বিরল রোগটি। এরপর ধীরে ধীরে ছড়িয়েছে ইউরোপ, লাতিন আমেরিকা ও অস্ট্রেলিয়াতেও। করোনা মহামারি না যেতেই এই রোগ নিয়ে নতুন আতঙ্ক তৈরি হয়েছে মানুষের মাঝে। ভিক্টোরিয়ার মুখ্য স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রেট সাটন বলেন, পশ্চিম আফ্রিকার বাইরে বহু বছর পর মিললো এই বিরল রোগ। তবে, মাংকিপক্স প্রথম শনাক্ত হয়েছিল ১৯৫৮ সালে। গেলো দু’সপ্তাহে ইউরোপ, আমেরিকার বিভিন্ন দেশে আক্রান্ত ব্যক্তির সন্ধান পাওয়া গেছে।মূলত, গুটিবসন্তের টিকাদান থেকে বহুদিন আমরা দূরে থাকায় বিস্তার বাড়ছে রোগটির।

চিকিৎসকরা জানান, মাংকিপক্সের মূল উপসর্গ হচ্ছে জ্বর। সাথে মাথা ও মাংসপেশীতে ব্যথা অনুভূত হয়। তিন দিনের ব্যবধানে শরীরে জলবসন্তের মতো ফুঁসকুড়ি দেখা দেয়। এই অবস্থায় দু’ থেকে চার সপ্তাহ অসুস্থ থাকতে পারেন রোগী। ছোঁয়াচে না হলেও শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনে সংক্রমণের সম্ভাবনা রয়েছে। ম্যাসাচুসেটস কেন্দ্রীয় হাসপাতালের মুখ্য চিকিৎসক এরিকা শিনয় বলেন, ১২ তারিখ হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগী রয়েছেন কঠোর পর্যবেক্ষণে। কারণ, গেলো কয়েকমাসে তিনি ঘুরতে যাননি কোথাও। রোগটি ছড়াতে সক্ষম, এমন কোনো প্রাণীর সংস্পর্শেও যাননি। তবে তিনি জড়িয়েছেন শারীরিক সম্পর্কে।

পর্তুগালের স্বাস্থ্যবিদ মার্গারিদা ত্যাভেরেস বলেন, পর্তুগালে কেউ হাসপাতালে ভর্তি নন; এছাড়া অবস্থাও গুরুতর নয়। জ্বর, ক্লান্তি, মাংসপেশী ও মাথাব্যথার মতো প্রাথমিক উপসর্গ ছিল। পরে দেখা যায় ফুঁসকুড়ি। কয়েকজন রোগী বলছেন, আক্রান্ত ব্যক্তির সাথে শারীরিক সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন তারা। সেটাকেই রোগ ছড়ানোর একটি সম্ভাবনা হিসেবে ধরছি।

গবেষকদের দাবি, প্রাণী থেকে মানবদেহে ছড়ায় রোগটি। তবে, এতে মৃত্যুহার কম। হাসপাতালে ভর্তি হওয়ারও প্রয়োজনীয়তা খুব একটা নেই। ব্রিটেনের সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ জিমি হুইটওর্থ বলেন, ছোট স্তন্যপায়ী প্রাণী বা আফ্রিকান ইঁদুরের মাধ্যমে ছড়ায় রোগটি। তারপরই, কোনোভাবে প্রবেশ করে মানবশরীরে। কিন্তু রোগ বিস্তারের জন্য এটা নির্ভরযোগ্য তথ্য নয়। কারণ, খুব বেশি মানুষ তাতে আক্রান্ত হন না। তাছাড়া, উপযুক্ত চিকিৎসার মাধ্যমে সেটির নির্মূল সম্ভব। আফ্রিকার বাইরে যেহেতু প্রথমবার বিস্তারলাভ করছে, তাই সতর্ক থাকা ভালো।

১৯৫৮ সালে গবেষণার জন্য আলাদা রাখা দুটি বানরের শরীরে দেখা যায় রোগটি। সেখান থেকেই ‘মাংকিপক্স’ নামের শুরু। তারপর ১৯৭০ সালে মানবদেহে প্রথম শনাক্ত হয় এর সংক্রমণ। ২০০৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রে ৪৭ জন এ রোগে আক্রান্ত হন। তবে, সর্বোচ্চ সাড়ে চারশ’ মানুষ ভুগেছেন নাইজেরিয়ায়, ২০১৭ সালে।

আরও পড়ুন: পশ্চিমা দেশগুলোতে ছড়িয়ে পড়ছে বিরল রোগ মাংকিপক্স

/এম ই

Exit mobile version