Site icon Jamuna Television

বর্ষার আগেই ব্রহ্মপুত্রের ভাঙন, আতঙ্কে নদী পাড়ের মানুষ

জিল্লুর রহমান পলাশ, গাইবান্ধা

গাইবান্ধার বুক দিয়ে বয়ে গেছে ব্রহ্মপুত্রসহ বেশ কয়েকটি নদী। বর্ষা আসলেই রাক্ষুসি রুপ ধারণ করে নদীগুলো। বিলীন হয়ে যায় অসংখ্য বসতবাড়ি, ফসলি জমিসহ বিভিন্ন স্থাপনা। ভাঙন আতঙ্কে থাকেন নদী পাড়ের মানুষগুলো। তবে এবার বর্ষার আগেই দেখা দিয়েছে ব্রহ্মপুত্রের ভাঙন। এরেইমধ্যে ভাঙন রোধে পানি উন্নয়ন বোর্ড বালু ভর্তি জিও ব্যাগ ফেলার কাজ শুরু করলেও স্থানীয়দের অভিযোগ, অপরিকল্পিতভাবে জিও ব্যাগ ফেলে কোন ভাবেই ভাঙনে ঠেকানো সম্ভব নয়।

ব্রহ্মপুত্র নদের কোল ঘেষে অবস্থিত গাইবান্ধার সদর উপজেলার কামারজানির গো-ঘাট ও সুন্দরগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ শ্রীপুর গ্রাম।
সরেজমিনে গিয়ে স্থানীয়দের কাছে জানা যায়, বিগত কয়েক বছরে ব্রহ্মপুত্রের রাক্ষুসী থাবায় বিলীন হয়েছে মসজিদ, মন্দির, বসতবাড়ি ও আবাদি জমিসহ বিস্তীর্ণ জনপদ। শুধু তাই নয়, ভাঙনে নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে এলাকার একমাত্র প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবনও। ভিটেমাটি আর সহায়-সম্বল হারিয়ে নিঃস্ব হাজারো পরিবার বসত গড়েছেন বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ আর অন্যের জায়গা-জমিতে।

স্থানীয় আবুল কাশেম জানান, প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙন ভয়াল রুপ ধারণ করে। কিন্তু এবার বর্ষার আগেই শুরু হয়েছে ব্রহ্মপুত্রের ভাঙন। ভাঙনে ইতোমধ্যে বিলীন হয়েছে দক্ষিণ শ্রীপুর গ্রামের প্রায় এক কিলোমিটার এলাকার ফসলি জমি। হুমকির মুখে নদীর তীরবর্তী শতশত বসতবাড়ি, আবাদি জমি, কামারজানি বাজার, বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ আর একটি সুইস গেটসহ বিভিন্ন স্থাপনা। ভাঙন আতঙ্কে রয়েছেন নদী পাড়ের বাসিন্দারা।

এদিকে, ভাঙন রোধে প্রাথমিকভাবে দক্ষিণ শ্রীপুরে এক কিলোমিটার মিটার এলাকায় তিনটি প্যাকেজে ৬ কোটি ৭০ লাখ টাকা ব্যয়ে ২৫০ কেজি ওজনের বালু ভর্তি জিও ব্যাগ ফেলার কাজ হাতে নেয় পানি উন্নয়ন বোর্ড। টেন্ডার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কাজ পায় দুটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। এরেইমধ্যে বালু ভর্তি জিও ব্যাগ ফেলার কাজ প্রায় শেষ করেছে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটি।

কিন্তু স্থানীয়দের অভিযোগ, ভাঙন ঠেকাতে স্থায়ী পদক্ষেপ না দিয়ে শুধু বালু ভর্তি জিও ব্যাগ ফেলে দায়সারা কাজ করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। নদীর ভাঙন অব্যহত আর ঝুঁকিপূর্ণ জায়গাতে জিও ব্যাগ না ফেলে ফেলানো হচ্ছে অন্য জায়গাতে। এতে কোন ভাবেই ভাঙন ঠেকানো সম্ভব নয়।

তবে এলাকাবাসীর অভিযোগ অস্বীকার করে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মাহাবুবুর রহমান বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা চিহ্নিত করেই ভাঙন রোধে জিও ব্যাগ ফেলার কাজ চলছে। এছাড়া নতুন করে উজানে আরও ২০০ মিটার ভাঙন রোধে পরিকল্পনার বিষয়ে আবেদন করা আছে’।

নদী ভাঙনের শিকার মানুষরা বলছেন, দফায় দফায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাসহ সরকারের উচ্চ পর্যায়ের কর্তা ব্যক্তিরা ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করলেও কার্যকরী কোন পদক্ষেপ নেই। প্রতি বছরেই শুধু বালু ভর্তি জিও ব্যাগ আর বাঁশের পাইলিং দিয়ে ভাঙন ঠেকানোর চেষ্টা করে সরকারের কোটি কোটি টাকার অপচয় হচ্ছে। তাই দ্রুত ভাঙন রোধে স্থায়ী পদক্ষেপ নিবে সরকার এমনটাই প্রত্যাশা এলাকাবাসীর।

Exit mobile version