Site icon Jamuna Television

অভাবের সাথে লড়াই করা অদম্য শাহিন এখন বিসিএস ক্যাডার

৪০তম বিসিএসে কৃষি ক্যাডারে উত্তীর্ণ হয়েছেন টাঙ্গাইলের মো. শাহিন।

দোকানে বেঁচাকেনা করছেন এক যুবক, সামনে রয়েছে বই। কাজের ফাঁকে সময় পেলেই মন দিচ্ছেন পড়ায়। আর এভাবেই ৪০তম বিসিএসে কৃষি ক্যাডারে উত্তীর্ণ হন টাঙ্গাইলের গোপালপুরের তামাকপট্টি এলাকার মো. শাহিন।

অদম্য ইচ্ছাশক্তি আর মায়ের সেলাই মেশিনের উপার্জিত টাকায় লেখাপড়া করে টাঙ্গাইলের গোপালপুরের মুদি দোকানি শাহিন এখন বিসিএস ক্যাডার। এরই মধ্যে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা হিসেবে। তবে ভুলে যাননি সেই ফেলে আসা দিন। সময় পেলে এখনও হাত দেন পুরোনো পেশায়।

সময় পেলেই বাবার ছোট্ট দোকানে বসেন শাহিন। দোকানের সামান্য আয়েই চলতো ৪ ভাই এক বোনসহ ৭ জনের সংসার। এক পর্যায়ে ছেলেকে লেখাপড়া করাতে হাতে সেলাই মেশিন তুলে নেন শাহিনের মা, বিক্রি করেন জমি। অবশেষে মায়ের আশা পূরণ করে ছেলে এখন বিসিএস ক্যাডার।

শাহিন বলেন, মা খুব কষ্ট করে ৩ শতাংশ জমি কিনে সেখানে গাছ লাগিয়েছিলেন। ২০১২ সালে যখন যখন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হবো তখন মা ওই গাছগুলো কেটে আমার অ্যাডমিশনের খরচ দিয়েছিলেন। শৈশব-কৈশোর খুবই কষ্টে কেটেছে, তবে আল্লাহর কাছে লাখো শুকরিয়া যে এখন আমাদের কষ্টের অবসান হয়েছে।

শাহিনের মা নূরজাহান বেগম বলেন, ওর বাবা দোকানের সামান্য আয়ে বাজার করে আনতেন আর আমি সেলাই করে ওদের পড়ালেখার খরচ জোগাড় করতাম। ও যখন এসএসসিতে গোল্ডেন এ প্লাস পায় আমি আমার সব কষ্ট ভুলে গিয়েছিলাম। আমার ছেলে এখন বিসিএস ক্যাডার এজন্য লাখো শুকরিয়া যে আল্লাহ আমাকে কষ্টের ফল দিয়েছেন।

শাহিনের বড়ভাই তাওহীদ বলেন, শাহিন যখন মাইমেনসিং থেকে আসে তখন দোকানে বসে আমাকে কাজে সাহায্য করতো। ও খুব কষ্ট করে লেখাপড়া করেছে। ওর ইচ্ছা ছিল বড় কিছু হওয়ার। ওর অদম্য ইচ্ছাশক্তি ওকে এই অবস্থায় এনেছে।

২০১৭ সালে ময়মনসিংহের বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যানতত্ত্ব বিভাগ থেকে অনার্স এবং মাস্টার্স শেষ করেন শাহিন। অভাবের মাঝেও কষ্টকে ছাপিয়ে শাহিনের এই অর্জনে খুশি পরিবার ও এলাকাবাসী।

/এসএইচ

Exit mobile version