Site icon Jamuna Television

গজ রেখেই সেলাই, চিকিৎসকের ভুলে পেটে পচন প্রসূতি মায়ের

ভুক্তভোগী নারী ও তার বাবা।

বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসকের অবহেলায় মরতে বসেছেন ৩ সন্তানের এক জননী। প্রায় দেড় মাস আগে সিজারে সন্তান জন্ম দেওয়ার পর তার পেটে গজ রেখেই সেলাই করে দেন এক চিকিৎসক। ধীরে ধীরে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে পুনরায় অস্ত্রপচার করে তা অপসারণ করা হয়। তবে এতোদিনে সেখানে পচন ধরে ক্ষতের সৃষ্টি হয়েছে। বিষয়টি তদন্তে কমিটি গঠন করেছে হাসপাতাল প্রশাসন।

ভুক্তভোগী এই নারীর নাম শারমিন আক্তার। হাসপাতালের বিছানায় প্রতিটি মুহূর্ত তার কাটছে যন্ত্রণায়। আর দেড় মাস বয়সী সন্তানকে বাড়িতে রেখে এত দূরে থাকার কষ্ট তো রয়েছেই। গত ১৬ এপ্রিল সিজারের মাধ্যমে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেলে কন্যা সন্তানের জন্ম দেন ঝালকাঠীর নলছিটির বাসিন্দা শারমিন আক্তার। অস্ত্রোপচারের পর থেকে পেটে ব্যাথা অনুভব করছিলেন তিনি। এজন্য সার্জারি বিভাগে চিকিৎসাও দেয়া হয় তাকে। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরার কিছু দিন পর শুরু হয় প্রচণ্ড পেট ব্যথা। সম্প্রতি পেট ফুটো হয়ে বের হয় পুঁজ। এরপর ভর্তি করা হয় হাসপাতালে।

পরীক্ষা-নীরিক্ষার পর দেখা যায় শারমিনের পেটের ভেতর রয়ে গেছে গজ। পরে ২২ মে পুনরায় অস্ত্রোপচার করে তা বের করেন শের-ই বাংলা মেডিকেলের সার্জারি বিভাগের প্রধান ডা. নাজিমুল হক। তিনি জানান, দীর্ঘ দিন গজ থাকায় পেটের ভিতরে পচন ধরে নাড়ি ফুটো হয়ে গেছে শারমিনের। পুনরায় অস্ত্রপচার করে সেগুলো ঠিক করে দেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।

তবে চিকিৎসকের ভুলে স্ত্রীর এমন ভোগান্তিতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শারমিন আক্তারের স্বামী জিয়াউল হাসান। তিনি বলেন, চিকিৎসকের কাছে আমরা আসি সুস্থ হওয়ার জন্য। আর সেই চিকিৎসকই আমার স্ত্রীকে অসুস্থ করে দিয়েছে। এতে পুরো পরিবারের সুখ ধ্বংস হয়ে গেছে বলেও আক্ষেপ করেন জিয়াউল হাসান।

অভিযুক্ত চিকিৎসকের পরিচয় পাওয়া যায়নি। ঘটনা তদন্তে ৩ সদস্যের কমিটি গঠন করেছেন হাসপাতাল পরিচালক। অভিযোগ প্রমাণিত হলে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দেন তিনি।

এসজেড/

Exit mobile version