Site icon Jamuna Television

মরতে বসেছে মানুষ, ওষুধ সঙ্কটে বিপর্যস্ত শ্রীলঙ্কা

চন্দ্রপাল বীরসুরিয়া মনে করতে পারছে না তিনি শেষ কবে ওষুধ খেয়েছিলেন। ৬৭ বছর বয়সী শ্রীলঙ্কার গাম্পাহা জেলার এই বাসিন্দা তার বংশগত স্নায়ু রোগের জন্য সর্বদা একটি ওষুধ খেতেন। ওষুধটি না খেতে পারলে মাথা ব্যথাসহ হাঁটতেও সমস্যা হয় তার। কিন্তু ওষুধটি শেষ হয়ে যাওয়ার পর থেকে তিনি আর সেটি কিনতে পারছেন না। কারণ ওষুধটি শ্রীলঙ্কার কোথাও আর মিলছে না। খবর দ্য গার্ডিয়ানের।

চন্দ্রপাল বেশ বিরক্ত হয়েই বললেন, আমি ভয় পাচ্ছি যদি আমি পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে পড়ি তবে আমাকে দেখাশোনা করার মতো কেউ নেই। আমি এবং আমার স্ত্রী সব কাজ একাই করি। আমরা আমাদের ঘরের কাজ ভাগাভাগি করে নিয়েছি। আমার স্ত্রীর হাঁটুতে ব্যথা থাকার কারণে চলাফেরা করতেও সমস্যা হয় তার।

স্বাধীনতার পর থেকে শ্রীলঙ্কা তার ইতিহাসের সবচেয়ে খারাপ ও উদ্বেগজনক স্বাস্থ্য সংকটে ভুগছে। সরকারের কোষাগার এ যাবত কালের সবচেয়ে সর্বনিম্ন স্তরে নেমে এসেছে। এছাড়া গত সপ্তাহে দেশটি তার ইতিহাসে প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক ঋণখেলাপি হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ বৈদেশিক মুদ্রা ছাড়া খাদ্য, জ্বালানি এবং ওষুধের মত প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র আমদানি করতে পারছে না দেশটি।

শ্রীলঙ্কা তার ব্যবহৃত প্রায় ৮০ শতাংশ চিকিৎসা সরঞ্জামাদি আমদানি করে থাকে। এখনও প্রায় ২০০ ধরনের চিকিৎসা সামগ্রীর ঘাটতি রয়েছে, যার মধ্যে আছে ৭৬টি অত্যাবশ্যকীয় জীবন রক্ষাকারী, হার্ট অ্যাটাক এবং স্ট্রোকের রোগীদের রক্ত পাতলাকারী অ্যান্টিবায়োটিক, জলাতঙ্কের ভ্যাকসিন এবং ক্যান্সারের কেমোথেরাপির ওষুধ।

জরুরি অস্ত্রোপচারের সরঞ্জাম এবং এনেস্থেশিয়া এত দ্রুত শেষ হয়ে যাচ্ছে যে এ সপ্তাহে শুধুমাত্র জরুরি অস্ত্রোপচারগুলো সম্পন্ন করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল। পাশাপাশি কিছু সরকারি হাসপাতালে শুধুমাত্র জরুরি রোগীদের ভর্তি করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

এর আগে নবনিযুক্ত প্রধানমন্ত্রী, রনিল বিক্রমাসিংহে সতর্ক করে বলেছিলেন, পরিস্থিতি খারাপের দিকেই যাবে। রোববার ভারত দেশটিকে ২৫টন চিকিৎসা সামগ্রী সরবরাহ করেছে। এছাড়া ফ্রান্সও কিছু প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম দান করেছে। তবে স্বাস্থ্যসেবায় চিরকাল অনুদানের ওপর নির্ভর করতে পারে না একটি দেশ।

এটিএম/

Exit mobile version