Site icon Jamuna Television

‘মুক্তির পথ নেই, গ্রাস করে নিচ্ছে জীবন’, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের আত্মহত্যা প্রবণতার কারণ কী?

‘চোরাবালির মতো ডিপ্রেশন, বেড়েই যাচ্ছে, মুক্তির পথ নেই, গ্রাস করে নিচ্ছে জীবন, মেনে নিতে পারছি না….। মৃত্যুর আগে এভাবেই নিজের হতাশার কথা লিখে যান রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী সাদিয়া তাবাসসুম। ১৩ মে গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন তিনি।

বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের আত্মহত্যার প্রবণতা উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে। সম্পর্কের টানাপোড়েন, আর্থিক অনটন, পারিবারিক ও মানসিক সমস্যা থেকে আত্মহননের পথে পা বাড়াচ্ছেন তারা। পারিবারিক সম্পর্ক দৃঢ়করণ ও মানসিক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতের মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের পরামর্শ মনোবিজ্ঞানীদের।

গত বুধবার (১ জুন)  চিরকুট লিখে আত্মহননের পথ বেছে নেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী জাইনা হাবিব প্রাপ্তি। একই পথে হেঁটেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের অমিত কুমার বিশ্বাসও।

প্রায় প্রতিদিনই শিরোনাম হচ্ছে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আত্মহত্যার এমন ঘটনা। শুধু মে মাসেই আত্মহত্যা করেছেন ৬ জন শিক্ষার্থী। আঁচল ফাউন্ডেশনের গবেষণা বলছে, গেলো বছর এ সংখ্যা ছিলো শতাধিক।

গবেষণা থেকে আরও জানা গেছে, সম্পর্কের অবনতি, পারিবারিক সমস্যা, মানসিক যন্ত্রণা, আর্থিক সংকট; মোটাদাগে এগুলোই আত্মহত্যার প্রধান কারণ। সমাধানে পারিবারিক সম্পর্কে দৃঢ় করার পাশাপাশি সব বিশ্ববিদ্যালয়ে মানসিক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে ‘ওয়ানস্টপ ক্রাইসিস সেন্টার’ তৈরির পরামর্শ মনোরোগ বিশেষজ্ঞদের।

এভারকেয়ার হাসপাতালের সাইকোলজিস্ট তারানা আনিস মনে করেন, আত্মহত্যা প্রবণতা যাদের মধ্যে দেখা যায়, তাদের পাশে দাঁড়াতে হবে। বিপর্যস্ত অবস্থায় একজন মানুষের বিশেষজ্ঞের কাছে যাওয়ার মানসিকতায় থাকে না। তাই পাশে দাঁড়ানোর বিকল্প নেই, বলছেন তিনি।

শিক্ষার্থীরা বলছেন, বন্ধুকেও নিতে হবে বাড়তি খোঁজ খবর। সমালোচনা কিংবা না পাওয়ার কষ্টকে জয় করে নিজের মতো ভালোলাগার জগৎ তৈরির ওপর প্রাধান্যও দিচ্ছেন কেউ কেউ। বন্ধুর সাথে কথা বলার কোনো বিকল্প নেই, বলছেন তারা।

/এডব্লিউ

Exit mobile version