Site icon Jamuna Television

ক্ষমা বিন্দুর ‘নিজেকে বিয়ের পরিকল্পনা’ ঘি ঢালছে বিতর্কের আগুনে

ভারতীয় ব্লগার ক্ষমা বিন্দু। ছবি: সংগৃহীত

ভারতীয় তরুণী ক্ষমা বিন্দুর নিজেকে বিয়ে করা সিদ্ধান্তে দেশজুড়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক। বিবিসির এক প্রতিবেদন বলছে, বরবিহীন এই বিয়েতে পূর্ণ সমর্থন রয়েছে গুজরাটের এই তরুণীর বাবা-মায়েরও।

সংবাদমাধ্যমকে ক্ষমা বিন্দু বলেছেন, আমরা নিজেকে নিজে ভালোবাসতে পারি অথচ বিয়ে করতে পারবো না? আমি নিজেই নিজেকে সবচেয়ে বেশি ভালোবাসি এবং সেই বিষয়টি সবাইকে জানাতে আমার কোনো লজ্জা নেই। বিয়ের দিন ক্ষমা নিজের সাথে অঙ্গীকারবদ্ধ হবেন বলেও জানান। তিনি বলেন, সর্বদা নিজের পাশে থাকবো, যেমন জন্মেছি ঠিক তেমন করেই নিজেকে মেনে নেব। বিয়েতে এরচেয়ে বেশি আর কী চাওয়ার থাকতে পারে?

নিজেকে বিয়ে করার ধারণা প্রথমবার সামনে নিয়ে আসে জনপ্রিয় আমেরিকান সিরিজ সেক্স অ্যান্ড দ্য সিটির এক চরিত্র, ক্যারি ব্র্যাডশ। ২০ বছর আগের এই কমেডি ড্রামার পর বাস্তবেও দেখা গেছে এই ধারণার প্রতিফলন ও বাস্তবায়ন। পুরো দুনিয়ায় এমন একশোরও বেশি ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছে বিবিসির এক প্রতিবেদন। তবে এই ধারায় আরও বৈচিত্র্য এনে ৩৩ বছর বয়সী ব্রাজিলিয়ান এক মডেল নিজেকে বিয়ের ৩ মাস পরে ডিভোর্সও দিয়েছেন!

কিন্তু এমন ঘটনা ভারতের কাছে এতদিন ছিল অনেকটাই অজানা। চণ্ডিগড়ের পিজিআইএমইআর হাসপাতালের অধ্যাপক মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ড. সাবিতা মালহোত্রা বলেন, আমার কাছে এই ধারণাটি বেশ অদ্ভুত লেগেছে। কারণ, আত্মপ্রেম সবারই আছে। এর বহিঃপ্রকাশ বা প্রমাণের জন্য আলাদা করে কোনো কিছু করতে হবে এমনটি মনে হয়নি কখনো। আর বিয়ে তো দুটি সত্তার একত্র হওয়া।

এই ঘটনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও শুরু হয়েছে বিতর্ক। অনেকেই ক্ষমা বিন্দুর এই ধারণা ও পরিকল্পনাকে সাদরে গ্রহণ করে বলেছে, এই ঘটনা অনেকের জন্যই অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করবে। তবে এরচেয়ে অনেক বেশি সংখ্যক মানুষই এই ধারণাকে খুব বেশি মূল্য দেননি। টুইটারে এই নারী লিখেছেন, অন্য কেউ যখন আশেপাশেই নেই, তখন এই ভিন্নতার মানে কী! টুইটারে আরেক ব্যক্তি লেখেন, পরিবারের দায়িত্ব থেকে পালানোর জন্যই মিস বিন্দু এমন ফন্দি এঁটেছেন।

নিজেকে বিয়ে করার এই ধারণার প্রতি কয়েকজন বেশ কড়া ভাষায় সমালোচনা করেছেন। তাদের ভাষায় এটি ‘বিদঘুটে ও বিষণ্ণ কাজ’ ছাড়া কিছুই নয়। তাদের মতে, এতে আত্মপ্রেম বা নারসিসিজমই ক্রমাগত বাড়তে থাকবে।

তবে এসব সমালোচনাকে পাত্তা দিচ্ছেন না ক্ষমা বিন্দু। তাদের প্রতি একটি কথাই বলেছেন মিস বিন্দু, আমি কাকে বিয়ে করবো তা একান্তই আমার সিদ্ধান্ত। সেটা একজন পুরুষ হতে পারে, নারীও হতে পারে; কিংবা হতে পারে নিজেই। আর নিজেকে বিয়ের মাধ্যমে আমি সলোগ্যামির ধারণাকে স্বাভাবিক করতে চাই। আমি মানুষকে বলতে চাই, আমরা পৃথিবীতে একা আসি, চলেও যাই একা। তাই আমাকে আমার চেয়ে অন্য কেউ বেশি ভালোবাসবে, এমনটা মনে করি না। তাই আপনিও যদি এমনটা বোধ করেন, নিজেকে ভালো বোধ করানোর জন্য আপনিই যথেষ্ট।

আরও পড়ুন: সমকামী জুটিকে লিভইনের অনুমতি দিলো কেরালা হাইকোর্ট

/এম ই

Exit mobile version