Site icon Jamuna Television

বসতভিটা দখল করতে চা বিক্রেতাকে গাছে বেঁধে নির্যাতন, ১৪ মাসেও দাখিল হয়নি চার্জশিট

বসতভিটা দখল করার জন্য প্রভাবশালীরা ভাড়াটে সন্ত্রাসী এনে এক চা বিক্রেতাকে গাছে ঝুলিয়ে চালিয়েছেন মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন। যার ফলে দুই পা আর মেরুদণ্ডের হার ভেঙে গেছে তার। সম্প্রতি এই নির্যাতনের ভিডিও ভাইরাল হয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। এদিকে ঘটনার চৌদ্দ মাস পার হয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করতে পারেনি পুলিশ। ইতোমধ্যে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পরিবর্তন হয়েছেন ৩ জন।

ঘটনা উপজেলার তারাবো পৌরসভার কর্নগোপ গ্রামের। এই ভয়াবহ নির্যাতনের ভিডিও ভাইরাল হয়েছে সামাজিক যোগযোগ মাধ্যমে। মধ্যযুগীয় এমন ভয়াবহ নির্যাতনের দৃশ্য দেখে আঁতকে উঠবেন যে কেউ। চা বিক্রেতা ফারুকের অভিযোগ, সরকারি এক টুকরো জমি লিজ নিয়ে তিনি ও তার পরিবার বসবাস করেন। সে জমি আত্মসাত করতে প্রভাবশালীদের নির্দেশে ভাড়াটে গুন্ডা দিয়ে করা হয়েছিল এই নৃশংস নির্যাতন। শুধু তাই নয়, নির্যাতনের পর পুরো পরিবারের বিরুদ্ধে চাদাবাজির মামলা করে প্রভাবশালী মহলটি। চিকিৎসা আর মামলার কারণে গত এক বছর পালিয়ে ছিলেন পুরো পরিবার। গত দুমাস পূর্বে বাড়ি ফেরার পর আবারও হুমকি দেয়া হচ্ছে বাড়ি থেকে উচ্ছেদের।

এদিকে এই ঘটনায় সে বছরের ১৪ মার্চ রূপগঞ্জ থানায় মামলা করেন ফারুকের স্ত্রী মাজেদা বেগম। এর মধ্যে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পরিবর্তন হয়েছেন তিনজন। কিন্ত গত ১৪ মাসেও আদালতে মামলার অভিযোগপত্র দাখিল করতে পারেনি পুলিশ। নারায়ণগঞ্জের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (গ-অঞ্চল) মো. আবির হোসেন বলছেন, হাসপাতাল থেকে ডাক্তারি সদনপত্র না পাবার কারণে অভিযোগপত্র দিতে পারছেন না তারা। তবে ফারুকের দাবি নির্যাতনকারীরা প্রভাবশালী হওয়ায় তাদের পক্ষ নিয়েছে পুলিশ। এতে বিলম্বিত হচ্ছে মামলার তদন্তকাজ।

এদিকে, অর্থাভাবে বর্তমানে ফারুকের চিকিৎসাও বন্ধ রয়েছে। পড়াশোনা বন্ধ করে সংসারের হাল ধরতে কাজ করতে শুরু করেছেন তার ছোট ছেলেও।

ফারুকের জীবনের দুঃস্বপ্নের মতো শেষ ভয়াবহ দিনটির কথা মনে হলে এখনও মধ্যরাতে ভয়ে ঘুম ভেঙে যায় তার। তারপরও সবকিছু ভুলে থাকতে চান তিনি। ক্ষমা করে দিতে চান সবাইকে। বিনিময়ে সমাজের শেষ আশ্রয়টুকু তার ভিটিতে নির্ভয়ে বসবাসের সুযোগ চান তিনি। আর চান মিথ্যা চাদাবাজি মামলা থেকে অব্যাহতি।

এদিকে, নির্যাতনকারী হিসেবে অভিযুক্ত খানজাহান আলী ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করে বলেন এই ঘটনায় ফারুকের চিকিৎসা ব্যয় থেকে শুরু করে সব ধরনের ক্ষতিপূরণ দিয়েছেন তিনি। ঘটনাটি স্থানীয়ভাবে আপস-মীমাংসা হয়েছে দাবি করে খানজাহান আলী বলেন, নতুন করে তাকে হুমকি দেয়ার বিষয়টি সঠিক নয়। স্থানীয় এক ব্যক্তির প্ররোচনায় ফারুক তাকে ফাসাঁনোর ষড়যন্ত্র করছেন বলে দাবি করেন তিনি।

/এডব্লিউ

Exit mobile version