Site icon Jamuna Television

স্ত্রীকে হত্যায় ভাড়া করা খুনিদের হাতেই মৃত্যু দম্পতির, সেই ৬ আসামির মৃত্যুদণ্ড ঘোষণা

দণ্ডপ্রাপ্ত ৬ আসামির মধ্যে ৩ জন। বাকি ৩ আসামি পলাতক।

সিনিয়র করেসপনডেন্ট, নারায়ণগঞ্জ:

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে স্বামী-স্ত্রীকে হত্যার দায়ে ছয় আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। দাম্পত্য কলহের জেরে নিজের স্ত্রী খাদিজাকে হত্যার জন্য এই আসামিদেরই ভাড়া করেছিলেন আব্দুর রহমান। তবে খাদিজাকে হত্যার পর চুক্তিমতো টাকা না দেয়ায় এবং ঘটনা ফাঁস হয়ে যাওয়ার ভয়ে আব্দুর রহমানকেই গলা কেটে হত্যা করে ভাড়াটে খুনিরা। দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের মধ্যে তিনজন পলাতক।

সোমবার (৬ জুন) দুপুরে নারায়ণগঞ্জের নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনাল আদালতের বিচারক নাজমুল হক শ্যামল এই রায় ঘোষণা করেন। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন, লোকমান, শফিক, সুমন, আরিফুল, মো. সুমন ও জামাল। তাদের মধ্যে সুমন, লোকমান ও সফিক পলাতক রয়েছে।

মামলার এজাহারের বরাত দিয়ে নারায়ণগঞ্জ কোর্ট পুলিশের ইন্সপেক্টর আসাদুজ্জামান জানান, রূপগঞ্জের দেবই এলাকার আনোয়ার হোসেনের মেয়ে খাদিজার সাথে আব্দুর রহমানের বিয়ে হয়। অভাব অনটনের কারণে তাদের পরিবারে দাম্পত্য কলহ চলছিল। এ কারণে খাদিজা বাবার বাড়ি চলে এসে একটি কারখানায় কাজ নেয়।

২০০৯ সালের ১১ আগষ্ট খাদিজা কারখানার কাজ শেষে রাতে সহকর্মী আমেনা বেগমের সাথে বাসায় ফিরছিল। পথে গাউছিয়া কটন মিলের পেছনে স্বামী আব্দুর রহমানের সাথে দেখা হলে একটি বেবী টেক্সিযোগে স্বামীর সাথে চলে যায় খাদিজা। পরে ১৬ আগষ্ট সকাল ১১টার দিকে বোচার বাগ এলাকায় রমিজউদ্দিনের ডোবায় খাদিজা ও আব্দুর রহমানের মৃতদেহ দেখতে পান স্থানীয়রা।

এ ঘটনায় খাদিজার বাবা আনোয়ার হোসেন মিয়া বাদী হয়ে রূপগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। জোড়া খুনের মামলা তদন্ত করেন রূপগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) কৃষ্ণ সরকার আসামি আরিফুল, মো. সুমন ও জামালকে গ্রেফতার করে। পরে জিজ্ঞাসাবাদে বেরিয়ে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য।

স্বামী আব্দুর রহমান স্ত্রীকে হত্যার পরিকল্পনা করেছিলেন। সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী ছয়জন খুনির সাথে ১০ হাজার টাকার চুক্তিও করেন তিনি। সে অনুযায়ী ১১ আগষ্ট রাতে খাদিজাকে গণধর্ষণের পর ডোবার পানিতে চুবিয়ে হত্যা করে তারা। পরে স্বামী আব্দুর রহমান চুক্তি অনুযায়ী ১০ হাজার টাকা না দেয়ায় এবং ঘটনা ফাঁস করে দিতে পারে সন্দেহে তাকে গলা কেটে হত্যা করে স্বামী-স্ত্রীর লাশ ডোবার পানিতে ফেলে পালিয়ে যায় তারা।

এ ঘটনায় ওই বছরই ২৭ ডিসেম্বর পুলিশ ছয়জনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে। আদালত মামলায় ১২ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরা শেষে ছয়জনকে মৃত্যুদণ্ডের রায় প্রদান করেন।

এসজেড/

Exit mobile version