ডুবো তেলে ভাজা আলু, আর মশলায় মাখা মাছ ভাজা; হালকা নাস্তা কিংবা উদরপূর্তির জন্য ব্রিটেনজুড়ে জনপ্রিয় ডিশ ফিশ অ্যান্ড চিপস। বহু বছর ধরেই ব্রিটেনের অঘোষিত জাতীয় খাবার হিসেবে পরিচিত এটি। তবে ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ হানা দিয়েছে দেশটির ভোজনরসিকদের খাবার টেবিলেও। রুশ-ইউক্রেনের যুদ্ধের কারণে খাবার তৈরির প্রধান উপাদান কড ও হ্যাডক মাছ এবং ভোজ্য তেলের সরবরাহ কমে যাওয়ায় সংকটে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা। বন্ধ হওয়ার উপক্রম এই ব্যবসার সাথে জড়িত এক তৃতীয়াংশ রেস্তোরাঁ।
ব্রিটেনে রেস্টুরেন্ট ব্যবসায়ীরা বলছেন, প্রথমে বাড়লো মাছের দাম। এরপর তো তেলের দাম বেড়েই চলেছে। অন্যদিকে সরবরাহ কমে যাওয়ায় আলুর দামও বেড়েছে। ফলে আমরাও বাধ্য হয়েছি খাবারের দাম বাড়াতে। এতে ক্রেতার সংখ্যাও তলানিতে চলে এসেছে বলা যায়। অবস্থা এখন এতটাই খারাপ, যেকোনো দিন রেস্তোরাঁগুলো বন্ধ করে দিতে হবে।
ফিশ অ্যান্ড চিপসের জন্য মূল উপাদান কড এবং হ্যাডক মাছ যার প্রায় ৪০ শতাংশ আসে রাশিয়ার জলসীমা থেকে। আর ডুবো তেলে মাছ ভাজার জন্য প্রয়োজনীয় সূর্যমুখী তেলের অর্ধেক আসে ইউক্রেন থেকে। রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বন্ধ মাছের সরবরাহ আর তেলের দাম বেড়েছে প্রায় ৮৩ শতাংশ। ফলে স্থান ভেদে ৪ থেকে ৫ পাউন্ড দাম বেড়েছে প্রতি প্লেট ফিশ অ্যান্ড চিপসের।
ক্রেতারা বলছেন, ১১ পাউন্ড খরচ করে এক প্লেট ফিশ অ্যান্ড চিপস খাওয়া সম্ভব না। একবার ভাবুন, ৬ জন যদি রেস্তোরাঁয় খেতে যান তাহলে এই এক প্লেট খাবারেই খরচ ৬৬ পাউন্ড। একটা আইটেমেই এত অর্থ খরচ করা সম্ভব না। একবছর আগেও এটা ছিল শ্রমিকদের উপযোগী খাবার। কিন্তু এখন দুই প্লেট কিনতে গেলেই খরচ পড়ছে ২২ থেকে ২৩ পাউন্ড।
ব্রিটেনজুড়ে ফিশ অ্যান চিপসের এমন প্রায় ১০ হাজারের মতো দোকান রয়েছে। চলমান সংকটে বন্ধ হওয়ার পথে এক তৃতীয়াংশ রেস্তোরাঁ। দেশটির রেস্তোঁরা মালিকরা বলছেন, করোনার ধাক্কা সামলে যখন কেবল ব্যবসা গুছিয়ে আনতে শুরু করেছি তখন এলো মূল্যস্ফীতির সংকট। আর এখন ইউক্রেনের যুদ্ধের কারণে তেল, মাছ এবং আলুর অতিরিক্ত দাম। অনেক ব্যবসায়ীই হাল ছেড়ে দিয়েছেন। ব্যবসা বন্ধ করার কথাও চিন্তা করছেন অনেকে।
১৮৬০ সালের দিকে ব্রিটেনে প্রথমবারের মতো চালু হয় ফিশ অ্যান্ড চিপসের দোকান। দ্রুত দেশজুড়ে তা ছড়িয়ে পরে। বিশেষ করে শিল্পায়নের ব্যাপক বিস্তারের সঙ্গে সঙ্গে কারখানা শ্রমিকদের খাবার হিসেবে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে এই ডিশ।
/এডব্লিউ

