Site icon Jamuna Television

৯ গ্রামের ভরসা একটি বাঁশের সাঁকো!

পাবনা প্রতিনিধি

পাবনা সদর উপজেলার সাদুল্লাপুর ইউনিয়নের কামারডাংগা-চরপাড়া সংলগ্ন ছোট নদীর উপর দিয়ে প্রতিদিন চলাচল করে হাজার হাজার মানুষ। ৯ গ্রামের প্রায় ৫০ হাজার মানুষের যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম বাঁশের সাঁকো। এ এলাকার মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি, এ নদীর উপর একটি ব্রীজ নির্মাণের।

কামার ডাংগা, ঢালি পাড়া, মোল্লা পাড়া, চরপাড়া, দাসপাড়া, বেড়পাড়া, মুন্সীপাড়া, ফারাদপুর, শাঁখারী পাড়ার জনগণ এ সাঁকোর উপর দিয়ে যাতায়াত করে। নদীতে ব্রীজ না থাকায় গ্রামের জনগণ ১ হাজার ফুট লম্বা বাঁশের সাঁকো দিয়েই রাত-দিন যাতায়াত করতে হয়।

এ এলাকার স্কুল-কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থী, চাকুরীজীবি, ব্যবসায়ী, কৃষক, দিনমুজুর ও স্থানীয় জনগণসহ বাঁশের সাঁকো দিয়ে, প্রতিদিন পাড় হচ্ছে হাজার-হাজার মানুষ। দীর্ঘদিন ধরে এ সমস্যায় জর্জড়িত এ এলাকার ভুক্তভোগী জন সাধারণ, অসুস্থ ব্যক্তিদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হয় এ বাঁশের সাঁকো দিয়ে।

এ বাঁশের সাঁকো ওপর দিয়ে চলতে গিয়ে প্রায়ই দুর্ঘটনায় পড়তে হচ্ছে কোমলমতি স্কুলের শিক্ষার্থীদের। এ ব্রীজটি না হওয়ার কারণে এ এলাকার জনগণ চিকিৎসা, শিক্ষা, জমি চাঁষাবাদ ও জরুরী প্রয়োজনে ফায়ার সার্ভিসের সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ যাতায়াত করে এই সাঁকো দিয়ে। বিশেষ করে দুবলিয়া হাজী জসিম উদ্দিন ডিগ্রী কলেজ, ফজিতুন্নেছা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, দুবলিয়া উচ্চ বিদ্যালয়, সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ও কিন্ডার গার্টেনের শিক্ষার্থীরা লেখাপড়া করার জন্য প্রতিদিন এই সাঁকোর উপর দিয়ে তাদের যাতায়াত করতে হয়। এ কারণে মাঝে মধ্যেই ঘটে দুর্ঘটনা।

এলাকার কৃষক আলম হোসেন জানান, মাঠ থেকে কৃষি পণ্য ঘরে তুলতে যাবতীয় মালামাল পারাপার করতে হয় এ বাঁশের সাঁকো দিয়ে, যা একজন কৃষকের জন্য অনেক কষ্টের কাজ।

কামার ডাংগা গ্রামের মোজাহার আলী প্রামানিক জানান, এই সাঁকো দিয়ে একা একাই পাড় হওয়া যায় না, তার উপর কৃষি ক্ষেত খামার থেকে ফসল ঘরে তুলতে ব্রীজ না থাকায় খুবই কষ্টকর হয়ে পড়ে। বাঁশের সাঁকো দিয়ে চলাচলের সময় অনেক কৃষকই পড়ে গিয়ে হাত-পা ভেঙ্গে গিয়েছে বলে তিনি জানান।

চরপাড়া গ্রামের আলহাজ্ব আব্দুল গফুর প্রামানিক জানান, স্বাধীনতার পর থেকে আজ পর্যন্ত বাঁশের সাঁকোটি তৈরি করার জন্য এলাকার বাড়ি বাড়ি থেকে বাঁশ ও টাকা তুলে আমরা এ বাঁশের সাঁকো তৈরি করে আসছি। প্রতি বছর এ বাঁশের সাঁকোটি তৈরি করা আমাদের জন্য কষ্টকর হয়ে যায়। তিনি আরও জানান আমাদের এই দুর্ভোগ দেখার কেউ নেই। নির্বাচনের সময় আসলেই বিভিন্ন প্রার্থীরা প্রতিশ্রুতি দেয়, কিন্তু পরবর্তীতে ব্রীজ নির্মাণের তাদের আর খোঁজ থাকে না। সাঁকো নির্মানের জন্য অর্থ চাইলেও তাদের কাছ থেকে কোন সহযোগিতা পাওয়া যায় না।

এ বিষয়ে সাদুল্লাপুর ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল কুদ্দুস মুন্সি জানান, ব্রীজটি নির্মাণের জন্য উর্দ্ধতন কর্মকর্তা কে জানানো হয়েছে। আশা করছি আগামী বছরের শুরুতেই ব্রীজটি নির্মাণ করা হবে।

Exit mobile version