Site icon Jamuna Television

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নির্যাতিত চাকরিপ্রত্যাশীর বিরুদ্ধে জিডি, ভীতি প্রদর্শন করে হাসপাতাল ছাড়া

অভিযুক্ত ডেপুটি কালেকটর কিশোর কুমার দাশ ও নির্যাতিত চাকুরীপ্রার্থী কাজী মোশারফ হোসেন। (ছবি: সংগৃহীত)

স্টাফ করেসপনডেন্ট, ব্রাহ্মণবাড়িয়া:

চাকরিপ্রার্থীকে নির্যাতনের ঘটনার দায় এড়াতে অপকৌশলের আশ্রয় নিয়েছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসন। জানা গেছে, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানায় কাজী মোশারফ হোসেন নামের ওই চাকরিপ্রার্থীর বিরুদ্ধে একটি সাধারণ ডায়েরী (জিডি) করা হয়েছে। জিডি নং-১২৮২, তারিখ দেখানো হয়েছে ১১.০৬.২০২২।

এদিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মোশারফকে ভয়ভীতি দেখিয়ে হাসপাতাল ত্যাগে বাধ্য করা হয়েছে। আতঙ্কে মোশারফ ও তার পরিবারের কেউ মুখ এখন খুলছেন না। মোশারফ জানিয়েছেন,তার শরীরের অবস্থাও ভাল নয়।

জানা গেছে, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক পল্লব কুমার চক্রবর্তীর করা সাধারণ ডায়েরিতে বলা হয়, ১০ জুন আনুমানিক বেলা ৩.৪৫ এ জেলা ট্রেজারির সামনে একজন অপরিচিত যুবক (বয়স আনুমানিক ২৮ বছর) সন্দেহজনকভাবে ঘুরাফেরা করার সময় ট্রেজারিতে ডিউটিরত পুলিশ সদস্য তাকে সতর্ক করে স্থান ত্যাগ করতে অনুরোধ করেন। একপর্যায়ে ওই যুবক পুলিশের সাথে তর্ক করতে শুরু করলে ডিউটিরত পুলিশ তাকে বুঝিয়ে শুনিয়ে তার নাম ঠিকানা রেখে জেলা ট্রেজারি অফিসের সামনে থেকে বিদায় করে দেয়।

এর কিছুক্ষণ পর, বিকেল আনুমানিক ৪.১৫ এ ওই যুবক আরও কয়েকজন লোক নিয়ে জেলা ট্রেজারির সামনে উচ্চবাচ্য করতে থাকলে ট্রেজারি অফিসে ডিউটিরত পুলিশ সদস্যরা ট্রেজারির নিরাপত্তার স্বার্থে তাদেরকে সেখান থেকে সরিয়ে দেন।

তিনি আরও জানান, ডায়েরিতে উল্লেখিত যুবকের নাম কাজী মোশারফ হোসেন। তার বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা থানার চাপিয়া গ্রামে বলে জানা যায়। এই বিষয়ে আমি আমার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাই। রোববার (১২ জুন) জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার রাজস্ব ও সাধারণ প্রশাসনে তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারী নিয়োগ পরীক্ষা সংক্রান্ত কাজে সারাদিন ব্যস্ত ছিলাম বিধায় জিডি এন্ট্রি করতে বিলম্ব হয়েছে। তবে চাকুরীপ্রত্যাশী প্রার্থী কাজী মোশারফের নাম কোথাও লেখা হয়নি বলে জানান তিনি।

এ ব্যাপারে সদর মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) সোহরাব আল হোসাইন জানান, আমরা এ সংক্রান্ত একটি জিডি পেয়েছি। তদন্ত করে খতিয়ে দেখছি।

উল্লেখ্য, শুক্রবার (১০ই জুন) জেলা প্রশাসনের নিয়োগের লিখিত পরীক্ষা দিতে এসে গচ্ছিত রাখা মোবাইল ফেরত আনতে গিয়ে নেজারত ডেপুটি কালেকটর কিশোর কুমার দাশের কক্ষে নির্যাতনের শিকার হন কাজী মোশারফ হোসেন ও আরেক চাকুরীপ্রার্থী। তাদেরকে ওই এনডিসি ও দুই পিয়ন দফায় দফায় লাঠিপেটা করেন। এতে গুরুতর আহত হন মোশারফ। এ অবস্থাতে সাদা কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে  মোবাইল ফেরত দেয়া হয় তাকে। পরে তিনি ৯৯৯-এ কল দিলে সদর মডেল থানা পুলিশ ডিসি অফিসে গিয়ে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানা উপ-পরিদর্শক আতিক উল্লাহ জানান উদ্ধারের সময় তার অবস্থা মুমুর্ষ ছিল।

এদিকে, রোববার দুপুরে নানা ভয়ভীতি দেখিয়ে মোশারফকে হাসপাতাল ত্যাগে বাধ্য করা হয় বলে জানা গেছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. মামুন মোহর তাকে ছাড়পত্র দেন বলে খবর পাওয়া গেছে।

/এসএইচ

Exit mobile version