Site icon Jamuna Television

কর্মী সংকটে ঝুঁকির মুখে মালয়েশিয়ার পাম চাষ

বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম পাম উৎপাদনকারী দেশ মালয়েশিয়া। হাজার হাজার একর এলাকাজুড়ে বিস্তৃত পাম বাগান। বরাবরই এ খাতের বড় চালিকাশক্তি প্রবাসী শ্রমিক। কিন্তু বর্তমানে কর্মী সংকটে ঝুঁকির মুখে পড়েছে দেশটির পাম চাষ। শ্রমিকের অভাবে উৎপাদনের তুলনায় ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ কমে গেছে ফসল সংগ্রহের পরিমাণ। যার প্রভাব পড়ছে দেশটির অর্থনীতিতেও। খবর উইয়ন টিভির।

চাষিরা বলছেন, জনবলের অভাবে আবাদ কমিয়ে আনার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিদেশি কর্মী নিয়োগে মালয়েশিয়া সরকারের ধীর নীতির কারণেই এমন সংকট। এই মুহূর্তে অন্তত ১২ লাখ কর্মী নিয়োগ দেয়া প্রয়োজন বলে পরামর্শ তাদের।

পাম চাষিদের মতে, দক্ষ জনবল সংকটে উৎপাদিত ফসল ঘরে তুলতে পারছেন না তারা। অতিরিক্ত বেতনেও মিলছে না কর্মী। মূলত, করোনা পরবর্তী সময়ে এই সংকট বেড়েছে।

পাম বাগান মালিক শাহারুল হাইজাম শাহাফি বলেন, আগে বাগান থেকে মাসে দুইবার ফসল তুলতাম। এখন মাসে একবার তুলতে পারি। বর্তমানে প্রতিবার ২ থেকে আড়াই’শ টন সংগ্রহ করছি। তবে পর্যাপ্ত কর্মী পেলে ৩’শ টন ছাড়িয়ে যেতো। তাই উৎপাদনের তুলনায় ফসল সংগ্রহের পরিমাণ ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ কম হচ্ছে।

দেশটিতে কাজ করা বিদেশি কর্মী আলি রহমান বলেন, করোনার আগে এখানে সকাল ৮টায় আসতাম আর বিকেল ৫টায় কাজ শেষ করে ফিরে যেতাম। কিন্তু এখন সকাল ৭টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কাজ করতে হচ্ছে। এই মুহূর্তে আমি ছাড়া দ্বিতীয় আর কোনো কর্মী নেই এখানে। বুঝতেই পারছেন কতোটা সংকট।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কর্মী সংকট সমাধানে জরুরি ভিত্তিতে বাংলাদেশ, ইন্দোনেশিয়ার মতো দেশ থেকে কমপক্ষে ১২ লাখ জনবল নিয়োগ দেয়া দরকার।

মালয়েশিয়ার বিশ্লেষক আরিনাহ নাজওয়া বলেন, মালয়েশিয়া পাম ওয়েল কাউন্সিল স্বীকার করেছে, এরইমধ্যে পাম চাষ থেকে আয় কমে গেছে ৫ থেকে ১০ শতাংশ। তাই সংকট আরও বাড়তে পারে, তা অনুমেয়। কারণ সারা বিশ্বেই চাহিদা বেড়েছে পাম তেলের। তবে সমাধান চাইলে দ্রুত বিদেশি কর্মী নিয়োগ দিতে এবং নিয়োগ প্রক্রিয়া শিথিল করতে হবে সরকারকে।

বিশ্ব ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, অভিবাসী বান্ধব হিসেবে পরিচিত মালয়েশিয়াতে বর্তমান বিদেশি কর্মী আছে ২৯ থেকে ৩২ লাখ। যার মধ্যে বাংলাদেশি আছেন অন্তত ৮ লাখ।

/এমএন

Exit mobile version