Site icon Jamuna Television

বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢল কমলেও সুনামগঞ্জের বানভাসিদের বেড়েছে দুর্ভোগ

মানবেতর দিনযাপন করছে সুনামগঞ্জের বানভাসিরা

বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢল কমলেও সিলেট-সুনামগঞ্জে এখনও লাখ লাখ বানভাসির দুর্ভোগ চরমে। দুর্গত এলাকায় দেখা দিয়েছে খাবার ও বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকট। মৃতদেহ সৎকারের জন্য নেই কোনো শুকনো মাটি।

ঢলের পানি কিছুটা কমেছে সিলেটে। তবে অব্যাহত আছে বৃষ্টি। সড়ক-বাসাবাড়ি এখনও জলমগ্ন। গোয়াইনঘাট ও কোম্পানিগঞ্জে পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত আছে কানাইঘাট, বিশ্বনাথ ও সদর উপজেলায়। আশ্রয়কেন্দ্র থেকে বাড়িঘরে ফেরার মতো পরিস্থিতি এখনো তৈরি হয়নি। কুশিয়ারা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় জকিগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। খাবার ও বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকট আছে। সুনামগঞ্জেও বন্যার একই চিত্র। সেখানকার সবকটি উপজেলা প্লাবিত। খাবার আর বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকট চারিদিকে। প্লাবিত হচ্ছে হবিগঞ্জের আজমিরিগঞ্জ, নবীগঞ্জ ও লাখাই উপজেলার নিম্নাঞ্চল। বন্যা মোকাবেলায় সেনা ও নৌবাহিনীর পাশাপাশি কাজ করছে বিজিবি সদস্যরা।

বানভাসি মানুষেরা জানান, কেউ ৪-৫ দিন ধরে আশ্রয়কেন্দ্রে আছেন, কেউ আছেন মাথার ওপর ছাদ ছাড়াই। তাদের শঙ্কা, এত বেশি পানি নামতেও লেগে যাবে সপ্তাহখানেক। কারণ, যেদিকেই তাকানো হয়, শুধু থইথই পানি। তবে গতকালে চেয়ে আজ (২০ জুন) পানি কিছুটা নেমেছে।

কোম্পানীগঞ্জেও পানি কিছুটা কমেছে। কিন্তু এমন প্রলয়ংকারী বন্যার পানি কিছুটা নেমে যাওয়ার পরও বিশাল এলাকা এখনো প্লাবিত। তাই পানি কমে যাওয়ার ইতিবাচক প্রভাব এখনো পড়েনি বানভাসিদের জীবনে। কোম্পানীগঞ্জের বন্যাকবলিতরা জানিয়েছে, ২০০৪ সালের পর এত বেশি পানি তারা কখনোই দেখেনি। এই পানি নামতেও অন্তত ৭-১০ দিন সময় লেগে যাবে বলে ধারণা করছেন স্থানীয়রা। তাছাড়া, সিলেটের সাথে বেশ কয়েকটি নদী সংযুক্ত। সুরমা ও কুশিয়ারা এখানে প্রধান দুই নদী। এখানে একটিতে পানি কমে গেলে আরেকটিতে বেড়ে যাচ্ছে।

রান্না করা ও শুকনো খাবার, পানি, জরুরি ঔষধসহ ত্রাণসামগ্রী নিয়ে সেনাবাহিনীর একটি ইউনিট কোম্পানীগঞ্জের পথে রওনা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, কোম্পানীগঞ্জের দুর্গম অঞ্চলের বানভাসিদের অন্তত ৩-৪ দিনের খাবারের চাহিদা মেটানো যাবে।

গোয়াইনঘাটে সোমবার (২০ জুন) সকাল থেকে বৃষ্টিপাত তেমন হয়নি। তাই পাহাড়ি ঢলের মাত্রাও কম। দুইদিনে পানিও কমেছে প্রায় ২ ফুট। ধনী-গরিবকে যেন এক কাতারে নিয়ে ফেলেছে এই বন্যা। পাকা ঘরেও রয়েছে প্রায় হাঁটুপানি। আসবাবপত্র, জামাকাপড় সবই ভিজে গেছে বানের জলে।

সিলেট শহরে কমেছে বন্যার পানি। যেসব এলাকা এখনো জলমগ্ন, সেখানে বিদ্যুতের সংযোগ বিচ্ছিন্ন। তাই সেসব এলাকায় বিশুদ্ধ পানির সরবরাহও নেই। শহরবাসী জানিয়েছে, পানি যতই নামছে ততই বাড়ছে দুর্ভোগ। চর্মরোগের প্রাদুর্ভাবের শঙ্কা রয়েছে।

/এম ই

Exit mobile version