Site icon Jamuna Television

ভাড়া-লঞ্চ কমিয়েও যাত্রী নেই পটুয়াখালীর লঞ্চ ঘাটে

লঞ্চের সংখ্যা, ভাড়া কমিয়েও যাত্রী নেই পটুয়াখালী-ঢাকা রুটের লঞ্চে।

স্টাফ রিপোর্টার, পটুয়াখালী:

পদ্মা সেতু চালুর প্রভাব পড়েছে পটুয়াখালী-ঢাকা নৌ রুটে চলাচলরত লঞ্চগুলোতে। গত দুইদিন ধরে কাঙ্খিত যাত্রী পায়নি লঞ্চ কর্তৃপক্ষ। যাত্রী ধরে রাখার জন্য হঠাৎ করে ভাড়া কমিয়ে এমনকি রুটের লঞ্চের সংখ্যা কমিয়েও যাত্রী পাচ্ছেন না তারা। কয়েকদিন অপেক্ষার পর আগের মতোই যাত্রী পাবেন বলে প্রত্যাশা করছেন লঞ্চ কর্তৃপক্ষের।

লঞ্চের সুপারভাইজার, মাস্টার ও যাত্রীদের সাথে কথা বলে এসব বিষয় নিশ্চিত হওয়া গেছে।

মঙ্গলবার (২৮ জুন) বিকেলে পটুয়াখালী লঞ্চঘাটে গিয়ে দেখা গেছে পিনপতন নিরবতা। আগের মতো যাত্রীদের হই-হুল্লোড় নাই, নেই যাত্রীদের চাপও। কিছুক্ষণ পর পর একজন দুইজন যাত্রী আসলেও লঞ্চের স্টাফরা “তিনশো টাকা তিনশো” টাকা বলে যাত্রী উঠানোর চেষ্টা করছেন। দুইদিন আগেও যেখানে চারটি ডাবল ডেকারের দোতলা ও তিনতলা লঞ্চ ছিল, সেখানে মঙ্গলবার বিকেল সোয়া পাঁচটার দিকে মাত্র দুটি লঞ্চ দেখা গেছে। এরমধ্যে একটি দোতলা আরেকটি তিনতলা বিশিষ্ট লঞ্চ।

তিনতলা বিশিষ্ট সুন্দরবন-১৪ লঞ্চের পটুয়াখালী ঘাটের কেবিন ইনচার্জ মো. জাফর মিয়া জানান, তাদের লঞ্চে প্রথম শ্রেণীর যাত্রীদের জন্য সিঙ্গেল, ডাবল, ফ্যামিলি ও ভিআইপিসহ মোট কেবিনের সংখ্যা
১২৯টি। এর মধ্যে বিকেল সোয়া পাঁচটার মধ্যে ৯২টি কেবিন বুকিং হয়েছে, বাকী কেবিনগুলো খালি। এছাড়া ওই সময় পর্যন্ত নীচতলা আর দোতলার ডেকে সাধারণ যাত্রী উঠেছে সর্বমোট দুই থেকে আড়াইশ
জন।

তিনি আরও জানান, দুইদিন আগেসহ বছরের অধিকাংশ সময় আমাদের লঞ্চের কেবিন একদিন আগেই প্রায় সব অগ্রিম বুকিং থাকে, সেখানে আজকে এই অবস্থা। যাত্রীদের দিকে তাকিয়ে আমরা সাধারণ যাত্রীদের জন্য ভাড়া নির্ধারণ করেছি তিনশো টাকা। আর কেবিন ভাড়া সিঙ্গেল ১২শ টাকা, ডাবল কেবিন ২২শ টাকা। এছাড়া ভিআইপি কেবিন (বাথরুম সংযুক্ত) পাঁচ হাজার টাকা সেটাও আগের চেয়ে কমিয়েছি।

লঞ্চের ইনচার্জ মো. ইউনুস মিয়া জানান, সোমবার ঢাকা থেকে আমরা প্রায় একশ কেবিনে যাত্রী নিয়ে এসেছি। এছাড়া সদরঘাট আর ফতুল্লা ঘাট থেকে সবমিলিয়ে প্রায় আড়াইশ থেকে তিনশো সাধারণ যাত্রী ছিল ডেকে।

তিনি আরও জানান, লঞ্চের এই কম যাত্রীর উপস্থিতি বেশিদিন থাকবে না। আশা করি আগের মতোই যাত্রী পাবো আমরা। এখন হয়তো অনেকেই নতুন সেতু দেখতে গাড়িতে ঢাকা যাচ্ছেন বা ঢাকা থেকে পটুয়াখালী আসছেন।

তিনি আরও জানান, লঞ্চে স্বামী স্ত্রী এবং ছোট ছোট বাচ্চাদের নিয়ে যদি কেউ কেবিনে যায় তখন আমরা শুধু কেবিন ভাড়াই নিয়ে থাকি। কিন্তু তারা যদি বাসে ঢাকায় আসা যাওয়া করে তখন বাচ্চাদের জন্যও টিকিট কিনতে হবে। আবার সাধারণ যাত্রীরা মাত্র তিনশো টাকায় লঞ্চে ঘুমিয়ে আরামে আসা যাওয়া করতে পারবে কিন্তু তারা যদি বাসে আসা যাওয়া করে সেক্ষেত্রে প্রায় হাজার খানেক টাকা খরচ হবে।

ঘাটে অপেক্ষমান আওলাদ-৭ লঞ্চের পটুয়াখালী ঘাটের ইনচার্জ আবদুল আজিজ জানান, তার লঞ্চে প্রায় অর্ধেক ৪৫টির মতো কেবিন বুকিং হয়েছে। এছাড়া নীচতলা আর দোতলার ডেকে সাধারণ যাত্রী উঠেছে প্রায় দেড় থেকে দুইশ। লঞ্চের ভাড়া নিচ্ছে সাধারণ যাত্রীদের কাছ থেকে তিনশ টাকা আর সিঙ্গেল কেবিন ১হাজার এবং ডাবল কেবিন দুই হাজার টাকা।

আজিজ আরও জানান, কোরবানির আগেই আশা করি যাত্রী সংখ্যা আগের মতো পাবো আমরা। কারণ ঢাকার অনেক যাত্রীই মালামাল নিয়ে বাসে আসতে পারবেন না।

উল্লেখ্য, গত ২৫ তারিখ পর্যন্ত প্রতিদিন ঢাকা-পটুয়াখালী সরাসরি নৌ রুটে দোতলা আর তিনতলা বিশিষ্ট মোট চারটি লঞ্চ চলাচল করতো। এসব লঞ্চের কেবিনের চাহিদা ছিল সোনার হরিণের মতো। ডেকে ধারণ
ক্ষমতার চেয়ে বেশি যাত্রী নিয়ে প্রতিনিয়তই আসা যাওয়া করতো এসব লঞ্চ।

/এসএইচ

Exit mobile version