Site icon Jamuna Television

দক্ষিণ আফ্রিকায় লোডশেডিংয়ে বিপর্যস্ত জনজীবন; ক্ষতিগ্রস্ত অর্থনীতি

সন্ধ্যা নামার সাথে সাথেই চারদিক ঘুটঘুটে অন্ধকার। শহরের কোথাও নেই বিদ্যুৎ। কাঠ দিয়ে আগুন জ্বেলে সড়ক আলোকিত করা আর উষ্ণতা নেয়ার কাজ একসাথে সারছে বেশিরভাগ মানুষ। বিদ্যুৎ সংকটের এ দুর্দশার চিত্র দক্ষিণ আফ্রিকার।

বিদ্যুৎ উৎপাদন কমে যাওয়ায় চরম লোডশেডিংয়ে বিপর্যস্ত দেশটি। ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিদ্যুৎহীন জীবন কাটাচ্ছেন বাসিন্দারা। ভোগান্তির পাশাপাশি অর্থনৈতিকভাবেও চরম ক্ষতির শিকার তারা। কর্তৃপক্ষ বলছে, জ্বালানি সংকটের জেরে ব্যহত হচ্ছে বিদ্যুৎ উৎপাদন। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হচ্ছে না সহসাই। এমন অবস্থা অব্যাহত থাকলে শিল্প খাতে নেতিবাচক প্রভাবের শঙ্কা বিশেষজ্ঞদের। খবর রয়টার্সের।

এমনিতেই দেশটিতে চাহিদার তুলনায় বিদ্যুতের উৎপাদন কম। মরার ওপর খাড়ার ঘা হয়ে এসেছে, বিশ্বজুড়ে জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি। জ্বালানি সাশ্রয় করতে গিয়ে অনেক দেশের মতোই বিদ্যুৎ উৎপাদন কমাতে বাধ্য হয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। রাষ্ট্রীয় বিদ্যুৎ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ইসকম জানিয়েছে, উৎপাদন স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত আবাসিক এলাকা ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ৯ ঘণ্টা পর্যন্ত থাকবে লোডশেডিং। ফলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিদ্যুৎহীন থাকতে হচ্ছে মানুষকে। অনেককে ছুটতে হচ্ছে বিদ্যুতের বিকল্প উৎসের দিকে।

দেশটির এক জেনারেটর ব্যবসায়ী বলেন, লোডশেডিং এখন নিত্যদিনে ঘটনা। প্রত্যেকবার বিদ্যুৎ যাবার সাথে সাথে জেনারেটর চালুর জন্য দৌড়াতে হয়। একজনের বেশি গ্রাহককে সেবা দিতে পারি না।

আরেক স্বেচ্ছাসেবী বলেন, সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ৪০টি শিশুর দেখাশুনা করি আমরা। তাদের পুষ্টিকর খাবার দিতে হয়। তাদের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করতে হয়। এখন আবার বাড়তি ঝামেলা হয়ে এসেছে জেনারেটর চালানোর গ্যাস ও বিদ্যুৎ।

নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ না থাকায় মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে উৎপাদন খাত। অর্থনীতিবিদদের দাবি, লোডশেডিং-এ দৈনিক আর্থিক ক্ষতি অন্তত ৪ কোটি ডলারের। তাদের আশঙ্কা, দীর্ঘমেয়াদে এর মারাত্মক প্রভাব পড়তে পারে অর্থনীতিতে।

জ্বালানি বিশেষজ্ঞ হিল্টন ট্রলিপ বলেন, এই শীতে স্টেজ ফোর পর্যায়ের লোডশেডিং হবে বলে ধারণা করা হচ্ছিল। ইসকম বলছে, পর্যাপ্ত উৎপাদন চালু না হওয়া পর্যন্ত পরিস্থিতির উন্নতি হবে না। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, লোডশেডিং আরও কত তীব্র হতে পারে? এমন অবস্থা চলতে থাকলে দেশের অর্থনীতিও ঝুঁকির মুখে পড়বে।

সরকারি পরিসংখ্যান অনুসারেই চাহিদার তুলনায় এখন ৪ থেকে ৬ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কম উৎপাদন হচ্ছে দক্ষিণ আফ্রিকায়।

/এমএন

Exit mobile version