Site icon Jamuna Television

নিয়ন্ত্রণে আসছে না ডলারের বাজার

কোনোভাবেই কমছে না ডলারের বাজারের অস্থিরতা। খোলা বাজারে বিক্রি বাড়িয়েও স্বাভাবিক করা যাচ্ছে না। ব্যাংকিং চ্যানেলে প্রতি ডলার লেনদেন হচ্ছে ৯৩ টাকা ৯৫ পয়সায়। আর খোলা বাজারে তা ১০০ টাকার কাছাকাছি।

ব্যাংকাররা বলছেন, চাহিদা-যোগানের মধ্যে ভারসাম্যহীনতার কারণেই এই অস্থিরতা। অর্থনীতিবিদদের মতে, বাজারে কারসাজি চলছে। ডলারের অস্থিরতা কমাতে বিলাস পণ্য আমদানিতে কড়াকড়ি আরোপ করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

মূলত, আমদানির সাথে সংঘতি রেখে বাড়ছে রফতানি। এ কারণে দেখা দিয়েছে বড় ধরনের বাণিজ্য ঘাটতি। সবশেষ হিসাব অনুযায়ী, বিদায়ী অর্থ বছরে বাণিজ্য ঘাটতির পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩০ বিলিয়ন ডলারের উপরে। ঘাটতি মোকাবেলায় বড় ধরনের সহায়তা করে প্রবাসী আয়। সেখানেও সুখবর নেই। সব মিলিয়ে টানাপোড়েন চলছে বৈদেশিক মুদ্রার বাজারে। যার প্রভাব পড়েছে ডলারের বিনিময় মূল্যে। তিন মাসে নয়বার বেড়েছে দাম। ব্যাংকাররা বলছেন, সরবরাহ সংকটই মূল কারণ। তবে কয়েক মাসের মধ্যেই এটি স্বাভাবিক হয়ে আসবে।

ঢাকা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এমরানুল হক বলেন, চাহিদা-যোগানের মধ্যে ভারসাম্যহীনতার কারণেই এ ঘটনা ঘটেছে।

অগ্রণী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ শামস উল ইসলাম বলেন, এটা দীর্ঘ সময়ের জন্য আমাদের চিন্তার বিষয় না। আমাদের রফতানি যখন আবার পরিপূর্ণভাবে শুরু হয়ে যাবে তখন ডলারের দামে স্থিতিশীলতা আসবে। আশা করছি, রেমিট্যান্সের পরিমাণ আরও বাড়বে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতির কারণেই সংকট তৈরি হয়েছে ডলারের। আন্তর্জাতিক পরিসরে পণ্যের দাম ও পরিবহন বৃদ্ধিও একটি বড় কারণ। যার ফলে প্রভাব পড়েছে দামে। তবে এর পেছনে দায় আছে ব্যাংকারদেরও।

বিআইবিএম এর সাবেক ডিজি ড. তৌফিক আহমেদ চৌধুরী বলেছেন, আসলে কিছু ব্যাংকও এর সাথে জড়িত। ব্যাংকগুলোই দামটাকে নিয়ন্ত্রণ করেছে, তাদের লাভ বাড়ানোর জন্য। ব্যাংকগুলো এক্সচেঞ্জ হাউসের মাধ্যমে কম দামে রেমিট্যান্স আনতেছে। তা আবার বেশি দামে আমদানিকারকদের কাছে বিক্রি করতেছে। ব্যাংক যদি অফিসিয়ালি বেশি দামে বিক্রি করে তাহলে খোলা বাজারে দর তো স্বাভাবিকভাবেই বেশি হবে। মনিটরিং যদি ঠিকমতো করা যায়, তাহলে খোলাবাজারে দাম বেশি হবে না।

বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, বাজার স্বাভাবিক করতে রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি করা হচ্ছে। বিলাস পণ্য আমদানি নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে। ঋণ সুবিধা বন্ধ করা হয়েছে এসব পণ্য আমদানিতে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক সিরাজুল ইসলাম বলেন, বিলাস পণ্য আমদানি বন্ধ করে দেয়া হলে আমাদের কোনো সমস্যা হবে না। তাই যেসব বিষয়ে হাত দেয়া যায়, দেশের স্বার্থে তা করতে হচ্ছে।

ডলারের সংকট নিরসনে রফতানি ও প্রবাসী আয় বাড়াতে হবে। সে জন্য বেশকিছু উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে বলেও জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

/এমএন

Exit mobile version