স্টাফ রিপোর্টার, পটুয়াখালী:
কুয়াকাটায় আগত পর্যটক দম্পতির ওপর হামলা চালানোর অভিযোগ উঠেছে বাস শ্রমিকদের বিরুদ্ধে। হামলার ঘটনা ভিডিও করার অপরাধে পর্যটকের হাতে থাকা মোবাইল ছিনিয়ে নিয়ে আছড়ে ভেঙে ফেলারও অভিযোগ উঠেছে তাদের বিরুদ্ধে। শনিবার (১৬ জুলাই) বিকাল ৩টার দিকে কুয়াকাটা সংলগ্ন তুলাতলি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে মহিপুর থানার ওসি আবুল খায়ের বলেন, ভিকটিম ও অভিযুক্তদের থানায় ডেকে আনা হয়েছিল। পরে ভুল স্বীকার করে ভিকটিম পর্যটককে জরিমানা দিয়েছেন মালিক। অন্যদিকে বিষয়টি দুঃখজনক স্বীকার করে ভিকটিমদের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন বাসের মালিক।
আহত পর্যটক মো. রুবেল, রিপন মাহমুদ ও মোসাম্মৎ হনুফা বেগম জানান, নরসিংদীর বাবুর হাট থেকে আগত ব্যবসায়ী রুবেল তার পরিবারের আট সদস্যকে নিয়ে বরিশাল থেকে বাসে কুয়াকাটা আসেন। পথিমধ্যে বাসের মধ্যে দাঁড়িয়ে থাকা নিয়ে প্রথমে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে বাসটি বিকাল ৩টার দিকে কুয়াকাটার তুলাতলি এলাকায় পৌঁছালে বাসের স্টাফরা বাস থেকে নামার সময় তাদের ওপর হামলা ও মারধর করেন। এসময় রেহাই পায়নি ওই পর্যটক পরিবারের নারী সদস্যরাও।
হামলার শিকার রুবেল জানান, বাসে রুবেলের সঙ্গে থাকা তার শিশু সন্তান অসুস্থ হয়ে পড়লে তার নির্ধারিত সিটে ওই শিশুকে শুইয়ে রেখে নিজে দাঁড়িয়ে থাকেন। এসময় বাসের কন্ডাক্টর এসে একজনের বাড়তি ভাড়া দাবি করে উচ্চবাচ্য করেন।
এ ঘটনার কিছু অংশ ভিডিও করেন রুবেল এবং পাশের সিটে বসা পর্যটক লক্ষ্মীপুর থেকে কুয়াকাটা ভ্রমণে আসা ওই বাসের যাত্রী রিপন মাহমুদ। কন্ডাক্টর মোবাইল ফোনে ভিডিও করায় হুমকি দিয়ে চুপ থাকেন। বিকেলে বাসটি কুয়াকাটায় এসে থামতেই বাস শ্রমিকরা সংঘবদ্ধভাবে পর্যটক পরিবারটির ওপর হামলে পড়ে। ভিডিও করার অপরাধে মারধর করা হয় পর্যটক রিপন মাহমুদকেও।
তাৎক্ষণিক ৯৯৯-এ ফোন করে এ ঘটনা জানালে মহিপুর থানার এসআই মোজাম্মেল ঘটনাস্থলে গিয়ে বাসের চালক মো. কামাল ও সুপারভাইজার জামালসহ ওই পর্যটকদের থানায় নিয়ে যান।
মহিপুর থানার ওসি মো. আবুল খায়ের জানান, পর্যটক পরিবারটি লিখিত অভিযোগ দিতে অস্বীকার করায় আইনগত পদক্ষেপ নেয়া যায়নি, তবে আলোচনা করে ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। লিখিত অভিযোগ না পেলেও আমরা পুরো ঘটনা উল্লেখ করে একটি সাধারণ ডায়রি লিপিবদ্ধ করেছি।
এদিকে স্থানীয়দের অভিযোগ, এর আগেও বাসের স্টাফরা একাধিক পর্যটককে হয়রানি করেছে। তবে মহিপুর থানার ওসি সবসময় স্টাফদের আপস-মীমাংসার মাধ্যমে ছেড়ে দিয়েছেন। আর এজন্যই এ ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটেছে বলেও অভিযোগ অনেকের।
অপরদিকে বাসটির মালিক মো. মিজানুর রহমান এ ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন। তিনি অভিযুক্ত চালক ও হেল্পারের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।
/এডব্লিউ

