Site icon Jamuna Television

মায়ের ইচ্ছাপূরণ করতে ৫০ বছর সংসারের পর নতুন করে বিয়ে

৫০ বছর সংসার করার পর বিয়ের অনুষ্ঠান আয়োজন। বিয়েতে দাওয়াতে এসেছেন মেয়ে-জামাই, নাতি-নাতনি, বেয়াই-বেয়ানরা। আত্মীয়-স্বজনদের পাশাপাশি এলাকাবাসীও দাওয়াত পেয়েছেন বিয়েতে। ঢাক-ঢোল-বাঁশি বাঁজিয়ে ব্যান্ড পার্টি নিয়ে বর সেজে বিয়ে করতে যাচ্ছেন বৃদ্ধ, এ খবর ছড়িয়ে পড়লে গ্রামবাসী ভীড় জমায় তা দেখতে।

রোববার (১৭ জুলাই) সকালে ঘটনাটি ঘটেছে কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার কুর্শা ইউনিয়নের কুন্টিয়ারচর গ্রামে। বরর মৃত হোসেন মন্ডলের ছেলে ৭৫ বছর বয়সী নুরুল ইসলাম। কনে পার্শ্ববর্তী মহিষাদাড়ি এলাকার মোবারক হোসেনের মেয়ে জুলেহার খাতুন। তার বয়স এখন ৬৯। ৫ সন্তানের জনক-জননীর এমন বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা আনন্দ দিয়েছে দুই পরিবারের লোকজন ও গ্রামবাসীকে।

বর নুরুল ইসলাম জানান, ১৯৭১ সালে তড়িঘড়ি করে মহিষাদাড়ি এলাকার মোবারক হোসেনের মেয়ে জুলেহার খাতুনের সাথে আমার বিয়ে হয়। আমি যখন অনেক ছোট তখন আমার মা বলেছিলেন যে আমার ছেলেকে ঢোল পিটিয়ে, বাঁশি বাজিয়ে ১০০ বরযাত্রী দিয়ে বিয়ে করাবো। কিন্তু যুদ্ধের সময় এবং আর্থিক অস্বচ্ছলতার কারণে সেটা করা সম্ভব হয়নি।

২০০২ সালে আমার মা মারা যান। তবে মাঝে মাঝে স্বপ্নে দেখি বিয়ের। তাই মায়ের ইচ্ছার কথা বড় বোনরা জানায়, মায়ের ইচ্ছা পূরণের জন্য বলে, পরে ছেলে মেয়েরাও নতুন করে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতার কথা বলে। ছেলে-মেয়ে, নাতি-পুতিরাই এই আনুষ্ঠানিকতার আয়োজন করেছে। এতদিন পরে হলেও মায়ের ইচ্ছা পূরণে খুশি নুরুল ইসলাম।

নুরুল ইসলামের বড় বোন সুফিয়া খাতুন বলেন, মায়ের ইচ্ছা পূরণ করতেই এই বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা। এত বছর পরে ভাইয়ের বিয়ে খেলাম। আমরা সবাই অনেক খুশি।

নুরুল ইসলাম ও জুলেহার খাতুন দম্পতি তিন ছেলে ও দুই মেয়ের জনক-জননী। তাদের রয়েছে নাত-জামাইও। বিয়েতে এসেছিলেন তারা। শ্বশুরের বিয়েতে আনন্দিত নুরুল ইসলামের জামাতা জিয়ারুল ইসলামও।

বরের নাতনি রুমি খাতুন বলেন, আমরা অনেক খুঁশি। দাদা-দাদির বিয়ে খেলাম। অনেক মজা পেয়েছি। এই বয়সের বর-কনে দেখলাম। সবাই অনেক আনন্দ করেছে।

বর-কনের দুই ছেলের শাশুড়িও ছিলেন বরযাত্রীতে। তারা জানায়, বেয়াই-বেয়ানের বিয়ে খেতে এসেছিলাম। আমরা অনেক আনন্দ করে গোসল করিয়ে বর সাজিয়ে দিয়েছি।

/এডব্লিউ

Exit mobile version