Site icon Jamuna Television

শখের নেশা থেকে মাদক ব্যবসায়ী, অতঃপর….

স্টাফ রিপোর্টার, মাদারীপুর

প্রতিষ্ঠিত পরিবারের সন্তান হয়েও শখের বশে নেশা শুরু করে শেষ পর্যন্ত মাদক ব্যবসায় জড়িয়ে পড়ে, অবশেষে বন্দুকযুদ্ধে জীবনহানির পরিনতি ঘটলো শিবচরের বাচ্চু খলিফার। ২০০৯ সালে প্রথম মাদক নিয়ে পুলিশের হাতে ধরা পড়ার আগ পর্যন্ত সবার কাছে মাদকসেবী হিসেবে পরিচিত ছিল বাচ্চু। কিন্তু এরপর পরিবারের পক্ষ থেকে দফায় দফায় চেষ্টা করেও ফেরানো যায়নি বাচ্চুকে। বারবার পুলিশ-র‌্যাবের হাতে ধরা পড়েও চালিয়েছেন এই ব্যবসা। তার বিরুদ্ধে শিবচর থানাই রয়েছে ১৩ টি মাদক মামলাসহ মোট ১৪টি মামলা।

সরেজমিনে নিহতের বাড়ি ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, শিবচর পৌর বাজার সংলগ্ন খলিফা পট্টিতেই বাচ্চুর পরিবারের ৩ তলা বিশিষ্ট বাড়ির নিচতলা মার্কেট। ২য় ও ৩য় তলা পরিবারের অন্যদের বসবাস। বাচ্চু ছাড়াও তার আরো ২ ভাই ও ১ বোন রয়েছে। বাবা প্রতিষ্ঠিত কাপড়ের ব্যবসায়ী, ভাইয়েরা প্রবাসী। গ্রামের বাড়িতেও পৈতৃক সূত্রে সম্পদশালী পরিবারটি। কিন্তু স্কুলের গণ্ডি না পেড়নো বাচ্চুর হাতে ছোট সময় থেকে সহজেই টাকা চলে আসায় মাদক সেবনে ঢুকে পড়ে।

প্রথম ২০০৯ সালের ৪ নভেম্বর ৫০ বোতল ফেনসিডিলসহ ধরা পড়ার পর বাচ্চুর মাদক ব্যবসায় জড়িয়ে পড়ার বিষয়টি সবার নজড়ে আসে। মাদক থেকে দূরে রাখতে তার মা বাবার চেষ্টা ছিল নিরন্তর। একাধিক বার পাঠিয়েছেন মাদক সংশোধনাগারেও । কিন্তু কিছুতেই দমেনি সে। বাচ্চুর প্রথম সংসারে ১ ছেলে ১ মেয়ে রেখে ২য় বিয়ে করার পর সে হয়ে পড়ে আরো বেপরোয়া। ২০১৩ সালে শিবচর ও মাদারীপুর সদরে ৪ বার মাদকের চালান নিয়ে ধরা পড়ে বাচ্চু। ২০১৪ সালে তার বাড়িতে পুলিশ সন্ধান পায় ইয়াবা প্যাকেজিং কারখানা। বাচ্চু সেসময় পালিয়ে গেলেও হাতেনাতে ধরা পড়ে তার ২য় স্ত্রী। মাদকের চালানসহ ধরা পড়ায় ২০১৫ সালে তার বিরুদ্ধে মামলা হয় ২টি, ২০১৬ সালে ২টি ও ২০১৭ সালে ৩টি মামলা হয় বাচ্চুর বিরুদ্ধে। প্রতিবারই তার কাছ থেকে পাওয়া যায় ইয়াবা,ফেনসিডিলসহ নানান ধরনের মাদক চালান। তার বিরুদ্ধে ২০১৫ সালে একটি হত্যা মামলাও রয়েছে। সবশেষ বুধবার মধ্যরাতে পুলিশের সাথে বন্দুকযুদ্ধে উপজেলার বাশকান্দি ইউনিয়নের শম্ভুক এলাকায় নিহত হয় বাচ্চু খলিফা। নিহত বাচ্চু শিবচর পৌর বাজারের খলিফা পট্টি এলাকার সফর খলিফার ছেলে।

এলাকাবাসি জানায়, বাচ্চুর পরিবার প্রতিষ্ঠিত। বাবা মাসহ পরিবারের সবাই ভালো। বাচ্চু প্রথম বন্ধুদের সাথে আড্ডা ও খেয়ালের বশে নেশা সেবনে জড়িয়ে পড়ে। পরে মাদক ব্যবসায়ী হয়। প্রথম থেকে সংশোধন হলে আজ এই পরিনতি হতো না। নেশা কতো ভয়ংকর হতে পারে বাচ্চুই তার প্রমাণ।

শিবচর থানার ওসি জাকির হোসেন বলেন, বাচ্চুর পরিবার প্রতিষ্ঠিত ও সামাজিক অবস্থান সম্পন্ন। তার বাবা বা পরিবার তাকে সংশোধনে অব্যাহত চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে ত্যাজ্য করে দেয়। তার বিরুদ্ধে ১৪ টি মামলা রয়েছে। লাশ ময়নাতদন্ত শেষে গ্রামের বাড়িতে দাফন হয়েছে। মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে ।

Exit mobile version