Site icon Jamuna Television

ক্যালিফোর্নিয়ায় দাবানলে হুমকিতে ৩ হাজার বছর বয়সী সেকুইয়া গাছ

‘মহীরূহ’ বোধহয় একেই বলে। সময়ের পরিক্রমায় পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছে কতো সভ্যতা; অথচ তিন হাজার বছর ধরে প্রকৃতির নীরব সাক্ষী হয়ে ঠাঁয় দাঁড়িয়ে দৈত্যাকার সেকুইয়া গাছগুলো। সারা পৃথিবীতে কেবল ক্যালিফোর্নিয়ার সিয়েরা নেভাদা পর্বতমালায় আছে বিরল এসব বৃক্ষ।

যুক্তরাষ্ট্রের এ অঙ্গরাজ্যটিতে চলমান দাবানলে হুমকিতে পড়েছে আড়াই থেকে তিন হাজার বছর বয়সী দৈত্যাকার অনেকগুলো গাছ। জায়ান্ট সেকুইয়া নামে পরিচিত এসব গাছ আয়তন ও ওজনে পৃথিবীর অন্যতম বৃহত্তম। দাবানল থেকে হাজার বছরের সাক্ষী এসব গাছকে রক্ষায় তাই বিশেষ ব্যবস্থা নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের দমকল কর্মীরা। খবর রয়টার্সের।

আগুনের লেলিহান শিখা যেন স্পর্শ করতে না পারে এ জন্য কেটে ফেলা হচ্ছে আশপাশের ছোট গাছ, ছেটানো হচ্ছে পানি। এমনকি পরিকল্পিতভাবে অন্য জায়গায় আগুন লাগিয়ে দাবানলের গতিপথ পরিবর্তনের চেষ্টাও চলছে।

ক্যালিফোর্নিয়ার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের উপ-প্রধান ম্যাট আরহেন বলেন, দ্রুত গতিতে নতুন নতুন এলাকায় ছড়িয়ে পড়ছে আগুন। আমরা প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছি। বনাঞ্চলে বসানো হয়েছে আগুন নেভানোর অত্যাধুনিক সব যন্ত্র। বিশেষ করে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে ঐতিহ্যবাহী গাছগুলো রক্ষায়। কারণ এগুলো হাজার হাজার বছরের ইতিহাস বহন করে আসছে।

মার্কিন বন বিভাগ বলছে, দাবানলে পুড়ে যাওয়ার হুমকিতে রয়েছে জায়ান্ট সেকুইয়া জাতের কমপক্ষে ৫০০ গাছ। যেগুলোর গড় বয়স আড়াই হাজার বছর। এই মুহূর্তে পৃথিবীর বৃহত্তম গাছগুলোর গড় উচ্চতা আড়াইশ ফুটের বেশি; গুঁড়ির ব্যাস ৩৬ ফুটের মতো। বিশ্বে জীবিত থাকা সবচেয়ে পুরনো প্রাণ হিসেবেও বিবেচনা করা হয় এগুলোকে।

যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় উদ্যানের উদ্ভিদবিদ গ্যারেট ডিকম্যান বলেন, বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় গাছটি রক্ষায় সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছি আমরা। এর নিরাপত্তা নিশ্চিত না করে এখান থেকে যেতে চাই না।

অতিপ্রাচীন এ সেকুইয়া গাছগুলোকে কেন্দ্র করেই মূলত ন্যাশনাল পার্কের ধারণা গড়ে ওঠে যুক্তরাষ্ট্রে। এর সুরক্ষায় আঠারো শতকেই করা হয় আইন। প্রাকৃতিকভাবেই ছোটখাটো দাবানল সহ্য করার ক্ষমতা আছে সেকুইয়া গাছের। কিন্তু গত কয়েক বছরে ক্যালিফোর্নিয়ায় দাবানলের ভয়াবহতা বাড়ায় হুমকিতে গাছগুলো। গেলো বছরও দাবানলে ছাই হয়ে যায় বেশ কয়েকটি জায়ান্ট সেকুইয়া।

/এমএন

Exit mobile version