Site icon Jamuna Television

করোনাকালে পার্বত্য এলাকা ও কুমিল্লায় ৯০ শতাংশ পর্যন্ত শিখন ঘাটতি: গবেষণা

করোনাকালে প্রায় দুই বছর বন্ধ ছিল সশরীরে শিক্ষা কার্যক্রম। ২০২১ শিক্ষাবর্ষে অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল যারা, তারাই ২০২৪ সালে এসএসসি পরীক্ষা দেবে। তাদের শিখন ঘাটতি নিয়ে গবেষণা করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন বাংলাদেশ পরীক্ষা উন্নয়ন ইউনিট। তাতে দেখা গেছে অঙ্কে প্রায় ৩৯ শতাংশ, ইংরেজিতে ৩৮ শতাংশ আর বাংলায় ৩১ শতাংশ সর্বোচ্চ ঘাটতি নিয়ে অষ্টম শ্রেণি সম্পন্ন করেছে শিক্ষার্থীরা।

তবে, পার্বত্য এলাকা ও কুমিল্লার চিত্র সবচে খারাপ। সেখানকার শিক্ষার্থীদের ঘাটতি প্রায় ৯০ শতাংশ পর্যন্ত হয়েছে। ঘাটতি পূরণে ৪ দফা সুপারিশ করা হয়েছে।

আন্তঃশিক্ষাবোর্ডের সমন্বয়ক তপন কুমার সরকার বলেন, গবেষণায় উঠে এসেছে বিভাগীয় শহরে এক রকম শিক্ষা ঘাটতি হয়েছে, জেলা শহরে এক রকম হয়েছে। এগুলো কীভাবে কাটিয়ে উঠা যায়, বিশেষ করে বাংলা, ইংরেজি ও গণিত বিষয়ে; সেগুলো নিয়ে একটা পরিকল্পনা নেয়া হচ্ছে। শিগগিরই আমরা তা জানাতে পারবো।

করোনাকালে সকল শিক্ষার্থীর ক্ষতি হয়েছে। সেটি কাটাতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সাথে অভিভাবকরাও চেষ্টা করছেন। কোনো অভিভাবক জানান, ক্লাসে শিক্ষার্থীদের আরও সময় দেয়া দরকার। কেউ আবার বলছেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জানিয়েছে ওরা ঘাটতি পূরণ করে নেবে।

শিখন ঘাটতি কাটাতে অতিরিক্ত ক্লাস ও অ্যাসাইনমেন্টের পাশাপাশি দূরশিক্ষণের ব্যবস্থা করার পরামর্শ দিয়েছে বাংলাদেশ পরীক্ষা উন্নয়ন ইউনিট।

উদয়ন উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ জহুরা বেগম জানিয়েছেন, যে শিক্ষার্থী অষ্টম ও নবম শ্রেণির বিষয়গুলো না জেনে দশম শ্রেণিতে পড়ছে, সে যে কতোটা ঘাটতির মধ্যে রয়েছে তা স্পষ্ট হয়েছে অর্ধবার্ষিকী পরীক্ষায়। খাতা দেখে শিক্ষকরা বলছেন, আপা ব্যবস্থা করেন। ঘাটতি পূরণে তারা ক্লাস বাড়িয়ে দিয়েছে।

শিখন ঘাটতির গবেষণা আরও আগে সম্পন্ন হয়ে বাস্তবায়ন কাজ শুরু হলে ভালো হতো বলে মত গবেষকদের। সুপারিশ বাস্তবায়নে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ ও অভিভাবকদের সচেতন করতে বলেছেন তারা।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ মজিবুর রহমান বলেন, স্কুলে যায়নি, ঘরে বসে থাকলো, হয়তো কনটেন্ট শিখছে। সোশ্যালাইজেশনের জায়গায় একটা বড় গ্যাপ রয়ে গেলো। এ দুইটা বিষয় মাথায় রেখে পরিকল্পনাগুলো করা লাগবে। প্রথমত, শিক্ষকদের সচেতন করা; তাদের প্রশিক্ষিত করা। অভিভাকদের সচেতন করা। শিক্ষার্থীদের উদ্বুদ্ধ করা।

ক্লাস পরীক্ষার নামে শিক্ষার্থীরা যেন অতিরিক্ত চাপে না পড়ে সেদিকে খেয়াল রাখারও তাগিদ দিচ্ছেন গবেষকরা।

/এমএন

Exit mobile version