জনপ্রতিনিধি হয়েও চা বিক্রেতা সুমন

|

ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হলে সাধারণত নিজস্ব পেশা ছেড়ে দিয়ে ইউনিয়ন পরিষদ অফিসকে আঁকড়েই জীবন
নির্বাহ করতে চান নির্বাচিতরা। কিন্তু কখনও কখনও এর ব্যাতিক্রমও ঘটে। তেমনি একজন সিরাজগঞ্জের সয়দাবাদ
ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য সুমন বাবু। যিনি জীবনের শুরু থেকে চা বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করতেন, নির্বাচিত হবার পরও
তাই করছেন। সুমন বাবু জানান, পরিষদের স্বল্প সম্মানীতে সংসার চলে না। তাই পুরনো পেশাকেই আঁকড়ে আছেন তিনি। আর ইউপি চেয়ারম্যান জানালেন, এমন সদস্য পেয়ে গর্বিত তিনি।

সিরাজগঞ্জের সয়দাবাদ ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের নির্বাচিত সদস্য সুমন বাবু। পেশায় চা বিক্রেতা। সংসারের চাকা
ঘোরাতে ১০ বছর আগে কড্ডার মোড়ে পুলিশ ফাঁড়ির পাশে চায়ের দোকান দেন। চা সরবরাহ আর নিজের ব্যবহারে স্থানীয়
মানুষদের মুগ্ধ করেন তিনি। আর তাই বিগত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বাবুকে নিজেদের প্রতিনিধি ঘোষণা করে মাঠে নেমে পড়েন স্থানীয়রা। প্রতিদ্বন্দী প্রার্থীরা জাদরেল হলেও সবাইকে পেছনে ফেলে সুমন বাবুর গলায়ই জয়ের মালা ওঠে।

তবে এখন সুমন বাবুর সকালের শুরুটা হয় একটু ভিন্নভাবে। সকালে বাড়িতে বসে স্থানীয় মানুষের সমস্যা শুনে সমাধানের চেষ্টা। এরপর ইউনিয়ন পরিষদ। তারপর সোজা চায়ের দোকান। দিনভর চলে চা বিক্রি। কিন্তু জন প্রতিনিধি হবার পর সুমন বুঝে ফেলেন, স্বল্প আয়ের সম্মানীতে সংসারের চাকা ঘুরবে না। তাই এখনও চা বিক্রি করেই চলে তার সংসার। সুমন বাবু জানালেন, নিজের পেশাকে সম্মানের চোখেই দেখেন তিনি।

সুমনের স্ত্রী জানান, আগের চাইতে তাদের ব্যাস্ততা বেড়েছে। সংসারের খরচও বেড়েছে। তাই তিনি নিজেও সংসারের
কাজের পাশাপাশি বাড়তি আয়ের জন্য অন্য কাজ করেন।

স্থানীয়রা জানায়, সুমন বাবুর সততা আর নিষ্ঠা দেখেই তারা তার পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। স্থানীয়দের কোনো সমস্যা হলে
বাবুকে সবসময় পাওয়া যায়। তার কোনো বাড়তি চাহিদাও নেই। জনগণের সেবাই তার নেশা বলেও জানান প্রতিবেশীরা।

সয়দাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নবীদুল ইসলাম জানালেন, এমন সদস্য পেয়ে গর্বিত তিনি। সুমন বাবুকে দেখে অনেক কিছু শেখার আছে বলেও মনে করেন তিনি।

জনপ্রতিনিধি মানে জনগণের সেবক। তেমনটাই হয়ে ওঠার চেষ্টা সুমন বাবুর। আর তার মতো মতো জনপ্রতিনিধির সংখ্যা
দেশে আরও হোক এমনটাই প্রত্যাশা স্থানীয়দের।

/এডব্লিউ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply