Site icon Jamuna Television

ভাতা বন্ধ, চাকরি নেই ছেলেদের; পরের বাড়িতে দুঃসহ জীবনযাপন মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের

বরিশালে দুঃসহ জীবনযাপন করছেন মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রহমানের পরিবার। নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দামে ঊর্ধ্বগতি, আয়ের উৎস বন্ধ এবং সেই সাথে বাসস্থান হারিয়ে এখন দ্বারে দ্বারে ঘুরছে মুক্তিযোদ্ধা পরিবারটি। এর ওপর মুক্তিযোদ্ধা ভাতার বিপরীতের নেয়া ঋণের টাকার জন্য ব্যাংকের চাপ ও সুদের পরিমাণ বাড়ছে প্রতিনিয়ত। সব কিছু মিলিয়ে এখন দিশেহারা তারা।

জানা গেছে, ২০১২ সালে আব্দুর রহমানের মৃত্যুর পর মুক্তিযোদ্ধা ভাতা ও বড় ছেলে রফিকুল ইসলামের আয়ে রাজধানীর রায়ের বাজারে সুখেই দিন কাটছিল আসমা আক্তারের পাঁচ সদস্যের পরিবারটির। তবে হঠাৎই গেজেটে নাম না ওঠায় মুক্তিযোদ্ধা ভাতা বন্ধ হয়ে যায়। এদিকে, করোনাকালে রফিকুল চাকরি হারালে অসহায় হয়ে পড়ে পরিবারটি। পরে রাজধানী ছেড়ে বরিশালে আত্মীয়ের বাড়িতে আশ্রয় নেন তারা। এখন দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির বাজারে সেখানেও টিকে থাকা দায় হয়ে পড়েছে তাদের।

মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রহমানের স্ত্রী আছমা আক্তার বলেন, মুক্তিযোদ্ধা ভাতা বন্ধ হয়ে যায় ২০১৯ সালের শেষের দিকে। ছেলেদেরও গত ২ বছর কোনো চাকরি নেই। এখন আমরা এমন অবস্থায় এসে দাঁড়িয়েছি, যে আমার সামনে আর বাঁচার কোনো উপায় নেই। রফিকুল ইসলাম আক্ষেপ জানিয়ে বলেন, সংসারটা ভেঙে গেছে আমাদের। সংসার সেটাকেই বলে যেখানে আমরা সবাই একসাথে একটি বাসস্থানে থাকি। কিন্তু আমার পরিবার তো একসাথে থাকতে পারছি না।

পুনরায় ভাতা চালুর জন্য গত ৩ বছর ধরে মন্ত্রণালয় ও মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলে দৌঁড়ে বেড়াচ্ছে পরিবারটি। তবে ভাতার বিপরীতে ব্যাংক থেকে ৩ লাখ টাকা ঋণ নিয়ে ছোট ছেলে শফিকুল ইসলামকে মালয়েশিয়া পাঠানো হয়েছিল। তবে দালালের খপ্পড়ে পড়ে তাকে দেশে ফিরে আসতে হয়েছে। সেই ঋণের টাকাই এখন পরিবারের গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়াতে হয়েছে।

শফিকুল ইসলাম বলেন, যে কলেজের বিপরীতে স্টুডেন্ট ভিসা নিয়েছিলাম, সেটি ব্ল্যাক লিস্টেড ছিল। তাই আমাকে দেশে ফিরে আসতে হয়। এ কারণে লোনটিও আমরা শোধ করতে পারিনি।

তবু অনেক কষ্টে ঋণের ৩ লাখ টাকার মধ্যে দেড় লাখ শোধ করেছে পরিবারটি। তবে সুদ বেড়ে ব্যাংকের এখনো পাওনা রয়ে গেছে ২ লাখ টাকা। আছমা বেগমের প্রশ্ন, যেখানে দু’মুঠো ভাত যোগান দেয়ার সামর্থ নেই তাদের, সেখানে ঋণ শোধ করবেন কীভাবে? বেঁচে থাকার জন্য অন্তত ছেলেদের চাকরি আর মাথা গোঁজার একটি ঘরের জন্য আকুতি অসহায় পরিবারটির।

এসজেড/

Exit mobile version