Site icon Jamuna Television

সম্মুখ যুদ্ধে সুবিধা করতে না পেরে চোরাগুপ্তা হামলার কৌশল নিয়েছে ইউক্রেন

আলজাজিরা থেকে নেয়া ছবি।

ক্রাইমিয়ায় হঠাৎ-ই বেড়েছে রাশিয়ার সামরিক স্থাপনা ঘিরে বিস্ফোরণ। ঘটনাগুলোকে সরাসরি হামলা বলতে নারাজ রাশিয়া; দিচ্ছে নানা সাফাই। ইউক্রেনে রাশান সামরিক ঘাঁটিতে চলা এসব ধ্বংসযজ্ঞে বেশ খুশি হলেও কৌশলে এতে সংশ্লিষ্টতার দায় এড়িয়ে যাচ্ছে কিয়েভ।

সম্প্রতি ক্রাইমিয়ার সামরিক অস্ত্রাগারে চালানো হামলাকে স্যাবোটাজ বা নাশকতা হিসেবে আখ্যা দিয়েছে রাশিয়া। যদিও ঠিক কোন পদ্ধতিতে এ হামলা চালানো হয়েছে- তা স্পষ্ট করেনি মস্কো।

এদিকে, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলদেমির জেলেনস্কি বলেছেন, দখলদার বাহিনীর গাফিলতির কারণেই ক্রাইমিয়ায় ঘটছে সিরিজ বিস্ফোরণ। আর বিশ্লেষকদের অভিমত, রাশিয়ার সাথে সম্মুখ যুদ্ধে সুবিধা করতে পারছে না ইউক্রেন। সে কারণেই চোরাগুপ্তা হামলার কৌশল অবলম্বন করছে তারা।

আরও পড়ুন: ক্রাইমিয়ার অস্ত্রাগারে হামলার ঘটনাকে ‘স্যাবোটাজ’ আখ্যা দিলো রাশিয়া

মঙ্গলবার (১৬ আগস্ট) রুশ নিয়ন্ত্রিত ক্রাইমিয়ার একটি সামরিক অস্ত্রাগারে ঘটে ভয়াবহ বিস্ফোরণ। ক্ষতিগ্রস্ত হয় একটি বৈদ্যুতিক কেন্দ্র আর রেলওয়ে স্টেশন। এ ঘটনায় দুজন গুরুতর আহত হলেও, শোনা যায়নি কোনো প্রাণহানির খবর। তবে, নিরাপত্তার খাতিরে সরানো হয়েছে কয়েক হাজার বাসিন্দাকে।

ক্রাইমিয়ার গভর্নর সের্গেই আকসিওনভ বলেন, রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে- সামরিক অস্ত্রাগারে চালানো হয়েছে স্যাবোটাজ। ঝানকোই জেলা থেকে সরানো হয়েছে কমপক্ষে ৩ হাজার বাসিন্দাকে। কারণ, বিস্ফোরণ বেশ জোরালো ও শক্তিশালী ছিলো। সক্রিয় বোমা ও গোলাবারুদ ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়েছে গোটা অঞ্চলে। সেগুলো নিষ্ক্রিয় করা এখন আমাদের অন্যতম লক্ষ্য।

ক্রাইমিয়ার সামরিক অঞ্চলগুলো এড়িয়ে চলতে সতর্কতা জারি করেছেন ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট। তার দাবি- দখলদার বাহিনীর দায়িত্বে অবহেলার কারণেই ঘটছে বিস্ফোরণ।

জেলেনস্কি বলেন, দখলকৃত ক্রাইমিয়ায় বিস্ফোরণের কারণ ভিন্ন, একেবারেই ভিন্ন। বিশেষভাবে বললে- এটা সম্পূর্ণই দখলদার বাহিনীর গাফিলতি। অবশ্য, তাতে পরোক্ষভাবে আমরাই লাভবান হলাম। শত্রুপক্ষের সামরিক অস্ত্রাগার, যুদ্ধ সরঞ্জাম আর সেনা চৌকি ধ্বংসের মাধ্যমে বেঁচে গেলো ইউক্রেনের বেসামরিক মানুষ। ক্রাইমিয়ার বাসিন্দারাই বুঝতে পারছেন রুশ নিয়ন্ত্রণে থাকা তাদের জন্য কষ্টকর।

বিশ্লেষকরা অবশ্য কিছুটা ভিন্ন প্রেক্ষাপটে দেখছেন এ ঘটনাগুলোকে। তাদের অভিমত, সম্মুখযুদ্ধে রাশিয়ার সাথে সুবিধা করতে পারছে না ইউক্রেন। সে কারণেই, চোরাগুপ্তা হামলার মতো বিকল্প পন্থা অবলম্বন করছে তারা।

এদিকে, দীর্ঘ এ যুদ্ধের জন্য আবারও যুক্তরাষ্ট্রকে দায়ী করে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, সার্বভৌম রাষ্ট্রগুলোর অভ্যন্তরীণ ইস্যুতে নাক গলাতে পছন্দ করে যুক্তরাষ্ট্র আর পশ্চিমা এলিটরা। তারাই উস্কে দেয় সহিংসতা-গণ অভ্যুত্থান, বাঁধায় গৃহযুদ্ধ। চাপে ফেলে একটি স্বাধীন দেশকে মার্কিন নীতিমালার সামনে মাথা নত করতে বাধ্য করে। গেলো কয়েক শতক ধরে এটাই যুক্তরাষ্ট্রের কৌশল। তাদের একটাই লক্ষ্য- গোটা বিশ্বকে হাতের মুঠোয় রাখা।

প্রসঙ্গত, গত সপ্তাহেই ক্রাইমিয়ার স্যাকি বিমানঘাঁটি কেঁপে ওঠে ১২ দফা বিস্ফোরণে। স্যাটেলাইট ইমেজে দেখা যায় ৮টি যুদ্ধবিমান ভস্মীভূত হয়েছে। বিস্ফোরণের ধাক্কায় আরও ৫৬টি ঘরবাড়ি-স্থাপনা ক্ষয়ক্ষতির শিকার- এমনটাই জানিয়েছেন খোদ ক্রাইমিয়ার গভর্নর।

/এসএইচ

Exit mobile version