Site icon Jamuna Television

পরমাণু নিরস্ত্রীকরণের জন্য নোবেল পেতে পারেন ট্রাম্প-কিম?

ঐতিহাসিক সিঙ্গাপুর সম্মেলনের জন্য কি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং উত্তর কোরীয় নেতা কিম জং উন নোবেল শান্তি পুরস্কার পেতে পারেন? মঙ্গলবার দুই নেতার মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষরের পর এই প্রশ্ন আলোচিত হচ্ছে। চুক্তি অনুযায়ী, কোরিয়া উপদ্বীপকে পর্যায়ক্রমে পূর্ণভাবে পরমাণু নিরস্ত্রীকরণে রাজি হয়েছে উত্তর কোরিয়া। বাস্তবে এই প্রতিশ্রুতি পালিত হলে তা হবে সাম্প্রতিক সময়ে আন্তর্জাতিক কূটনীতিতে বড় ধরনের অর্জন।

ট্রাম্প-কিমের নোবেল পাওয়ার সম্ভাবনা নিয়ে বিশেষজ্ঞরা অবশ্য এ বিষয়ে এখনও নিশ্চিত করে কিছু বলতে নারাজ। কারণ, দুই নেতারই অতীত রেকর্ড ‘শান্তি’র সাথে সাংঘর্ষিক। ফলে একটি চুক্তির মাধ্যমেই তাদের আগের সব কর্মকাণ্ড আড়াল হয়ে যাবে না।

কিছু রাজনীতিক এবং বিশেষজ্ঞ মনে করেন, এই উদ্যোগের জন্য কিম এবং ট্রাম্প উভয়েরই শান্তিতে নোবেল পাওয়া উচিত। দক্ষিণ কোরীয় কূটনীতিক এবং জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব বান কী মুন, মার্কিন সাবেক প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টার এবং ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বরিস জনসনের মতো ব্যক্তি এ তালিকায় রয়েছেন।

বিশ্লেষকদের মতে, নিজের দেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের দীর্ঘ ইতিহাস কিমের শান্তি পুরস্কার পাওয়া ক্ষেত্রে বড় বাধা। আর ট্রাম্প সম্প্রতি ইরানের সাথে করা ছয় জাতির চুক্তি থেকে তার দেশকে বের করে নেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। মধ্যপ্রাচ্য সংকট নিরসন করে শান্তি প্রতিষ্ঠায় এটি একটি বড় বাধা বলে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় মনে করে। মার্কিন প্রেসিডেন্টের এই পদক্ষেপ তাকে শান্তিতে কোনো পুরস্কার পাওয়া ক্ষেত্রে একদম পিছিয়ে দিয়েছে।

কিন্তু এসবের পরও যদি দেখা যায় কোরিয়ার সাথে করা পরমাণু নিরস্ত্রীরকরণ চুক্তি দীর্ঘ মেয়াদে সফলতার মুখ দেখে তাহলে টাম্প ও কিম নোবেলে কমিটির জন্য একটি বিব্রতকর অবস্থা তৈরি করে ফেলবেন!

নোবেল পুরস্কারের ইতিহাসের ওপর বিশেষজ্ঞ ইতিহাসবিদ অ্যসলে স্ভিন এএফপিকে বলেছেন, ‘এ বিষয়ে এখনই কোনো ভবিষ্যদ্বাণী করা ঠিক হবে না। কিন্তু যদি বাস্তবে এই চুক্তির মাধ্যমে কোরীয় উপদ্বীপ পরমাণু অস্ত্রমুক্ত হয়ে যায়, তাহলে তাদের দুইজনকে নোবেল শান্তি পুরস্কার না দেয়া কঠিন হয়ে যাবে।’

ট্রাম্প ও কিমের অতীত ‘সহিংস’ ইতিহাস মাথায় রেখে অ্যাসলে বলেন, ‘তখন নোবেলে কমিটির জন্য একটা অদ্ভুত পরিস্থিতি তৈরি হবে। তবে অতীতে এমনটি হয়েছে। বেশ মারাদাঙ্গা ব্যক্তিত্বরাও (তাদের নির্দিষ্ট কোনো পদক্ষেপের কারণে) শান্তিতে নোবেল পেয়েছেন।’

নিকট অতীতে বেশ কয়েকজনকে শান্তি পুরস্কার দেয়ার পর সমালোচিত হয়েছিল নোবেল কমিটি। এরমধ্যে বারাক ওবামার নোবেল পুরস্কারটি অন্যতম। অনেক বিশেষজ্ঞই ওই পুরস্কার প্রদানের সিদ্ধান্তকে ‘অপরিপক্ষ’ বলেছিলেন। এমন সমালোচনার মুখে ভবিষ্যতে যাতে না পড়তে হয়, ট্রাম্প-কিমের ব্যাপারে তেমন সতর্কতা অবলম্বন করবে সুইডিশ কমিটি। এমনটাই মনে করেন স্টকহোম পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউটের প্রধান ড্যান স্মিথ। ফলে খুব শিগগিরই নোবেল শান্তি পুরস্কার জুটছে না ট্রাম্প-কিমের জন্য।

Exit mobile version