
ধর্ষণে অভিযুক্ত বিজন মন্ডল।
খুলনা ব্যুরো:
খুলনার ডুমুরিয়ায় স্কুলছাত্রী ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তবুও ন্যায্য বিচার পাওয়া নিয়ে সংশয়ে পরিবার। অভিযুক্ত ইউপি চেয়ারম্যানের ঘনিষ্ঠ হওয়ায় তার বিরুদ্ধে মামল নিতে পুলিশের অনীহা ও ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগও করছেন ভুক্তভোগী পরিবার। এদিকে, লজ্জায়-অপমানে ঘরের ভেতর নিজেকে বন্দি রেখেছে নির্যাতিত স্কুল ছাত্রী।
গত ৯ আগস্ট প্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে ডুমুরিয়ার মাগুরখালীর এটি দোকানে যায় তপোবন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভুক্তভোগী এই ছাত্রী। এ সময় তাকে ধর্ষণে অভিযোগ আনা হয়েছে দোকানী বিজন মন্ডলের (৫৫) বিরুদ্ধে। এক পর্যায়ে ঐ ছাত্রী চিৎকার করলে সেখান থেকে পালিয়ে যায় বিজন।
পরিবারের অভিযোগ, ১৯ আগস্ট থানায় মামলা করতে গেলে রাত পর্যন্ত বসিয়ে রাখা হয় তাদের। বিভিন্নভাবে ভয়ভীতিও দেখানো হয়। শেষ পর্যন্ত মামলা হয়েছে জানিয়ে থানা থেকে বের করে দেয়ারও অভিযোগ আনা হয়েছে পুলিশের বিরুদ্ধে।
নির্যাতিত ছাত্রীর দাদা বলেন, আমরা দুপুর ১২টায় থানায় যাই। তবে আমাদের সন্ধ্যা পর্যন্ত বসিয়ে রেখে বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখানো হয়। আমাকে বলা হয়, তোমাকে আটকে দেবো। এর বিরুদ্ধে কেস দিতে পারবে না। এক পর্যায়ে আমাকে বলা হয়, মামলা হয়ে গেছে, আপনারা বাড়িতে চলে যান। বাড়িতে গিয়ে চুপচাপ বসে থাকেন। মামলায় কী লেখা হলো বা না হলো আমরা কিছুই বলতে পারবো না।
এদিকে, আসামি গ্রেফতার না হওয়ায় পরিবারের সন্দেহ হলে গত ২৪ আগস্ট থানায় গিয়ে জানা যায়, মামলা আদৌ রেকর্ডই করেনি পুলিশ। এরপর মামলা রেকর্ড হলে আদালতে নির্যাতিত ছাত্রীর জবানবন্দি গ্রহণ ও মেডিকেল পরীক্ষা করানো হয়। তবে আলামত পাওয়া নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করে খুমেকের ওসিসি সমন্বয়ক অঞ্জন চক্রবর্তী বলেন, দেরি হওয়াতে আমরা আলামত নাও পেতে পারি। তবে যদি ঘটনার দিনের কাপড়চোপড় সংরক্ষণ করে রাখে বা কোনো নির্যাতিতার কোনো ক্ষত হয়, সেক্ষেত্রে একটা সম্ভাবনা আছে।
এদিকে, অভিযুক্ত বিজন মন্ডল মাগুরখালি ইউপি চেয়ারম্যান বিমল কৃষ্ণ সানার ঘনিষ্ঠ বলে জানায় ভুক্তভোগী পরিবারটি। ঘটনাটি আপোষ করতে অর্থের প্রস্তাবও দেয়া হয় তাদের। তবে আইনের পথে এগোনোর কথা সাফ জানিয়ে দিয়েছে পরিবারটি।
বিজন ইউপি চেয়ারম্যানের কাছের লোক হওয়ায় ভয়ে মুখ খুলতে চান না গ্রামবাসীও। তাদের দাবি, ঘটনাটি যখন মিটে যাবে, তখন যারা কথা বলেছে তাদের ওপরই চাপ সৃষ্টি হবে। এদিকে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ঘটনার সাথে নিজের সংশ্লিষ্টতার কথা অস্বীকার করেছেন। শুরুতে মামলা রেকর্ড না করা এবং ভুক্তভোগী পরিবারকে হুমকির বিষয়েও কথা বলতে রাজি হননি ডুমুরিয়া থানার ওসি।
এসজেড/



Leave a reply