আবারও সহিংসতার আগুনে জ্বলছে ইরাক। শিয়া নেতা মুক্তাদা আল সাদরের রাজনীতি ছাড়ার ঘোষণায় অস্থিতিশীল পুরো দেশ। সাদরের সমর্থকদের সাথে নিরাপত্তা বাহিনীর সংঘর্ষে রণক্ষেত্রে পরিণত হয় বাগদাদের সুরক্ষিত গ্রিন জোন। সরকারি ভবনগুলোতেও চড়াও হয় বিক্ষোভকারীরা। এখন পর্যন্ত সংঘাতে নিহত হয়েছেন কমপক্ষে ৩০ জন ইরাকি, আহত কমপক্ষে ৭’শ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে জারি করা হয়েছে কারফিউ। সব পক্ষকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ।
গত কয়েক বছরের মধ্যে সবচেয়ে বড় সংঘাত দেখলো ইরাকের রাজধানী বাগদাদ। সুরক্ষিত গ্রিন জোনে ভারি অস্ত্রের আওয়াজ। মুহুর্মুহু গোলাগুলি দু’পক্ষে। শিয়া নেতা মুক্তাদা আল সাদর রাজনীতি ছাড়ার ঘোষণা দিলে নতুন করে ছড়ায় উত্তেজনা।
সোমবার (২৯ আগস্ট) এক টুইটবার্তায় তিনি জানান, রাজনৈতিক অচলাবস্থার অবসান না হওয়ায় সিদ্ধান্ত নিয়েছেন অবসরের।
নেতার বিদায়ের খবরে রাজপথে নেমে আসেন তার সমর্থকরা। সাদরের সমর্থকরা বলছেন, আমাদের নেতা রাজনীতি থেকে পুরোপুরি সরে দাঁড়িয়েছেন। তিনি চান জনগণ নেতৃত্ব গ্রহণ করুক। আমরা রাজপথ ছাড়বো না। প্রয়োজনে এখানেই মরবো, কারণ আমাদের হারানোর কিছু নেই। এজন্য আমরা জায়নামাজ হাতে বিক্ষোভে নেমেছি। আর তারা (শিয়াপন্থীরা) আমাদের উদ্দেশে বুলেট ছুঁড়লো আমাদের ঠেকাতে। আমাদের দাবি পার্লামেন্ট বিলুপ্ত করা। আর দুর্নীতিবাজদেরও বিচারের আওতায় আনার। কোনো পক্ষের হয়ে নয়, আমরা রাজপথে নেমেছি ইরাকের হয়ে। এটা জনতার বিপ্লব।
কয়েক সপ্তাহ ধরে পার্লামেন্ট ভবন দখল করে রাখা সাদরের অনুসারীরা এবার চড়াও হয় প্রেসিডেন্ট প্রাসাদে। ভবনের ভেতর ঢুকে পড়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন অনেকে। নেমে যান সুইমিং পুলেও। বাইরে ইরাকি মিলিটারির সাথে তীব্র লড়াই হয় সাদর অনুসারী পিস ব্রিগেডের সাথে। রাতভর চলে সংঘাত। রক্তক্ষয়ী সহিংসতায় হতাহতের সংখ্যাও বহু। বসরা শহরেও রাস্তা অবরোধ করে হয় বিক্ষোভ, অগ্নিসংযোগ। কারফিউ দিয়েও শান্ত করা যায়নি বিক্ষুব্ধদের।
এদিকে, জনগণকে আইন-শৃংখলা মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছেন তত্ত্বাবধায়ক প্রধানমন্ত্রী মুস্তাফা আল খাদিমি। আর, সহিংসতা বন্ধ ও সমর্থকদের ওপর অস্ত্রের ব্যবহার বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত অনশনের ঘোষণা দিয়েছেন ৪৮ বছর বয়সী সাদর।
প্রসঙ্গত, অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে ইরাকের সাথে সীমান্ত বন্ধ করে দিয়েছে ইরান। আর নিজ দেশের নাগরিকদের ইরাক ছাড়ার নির্দেশনা দিয়েছে কুয়েত।
উল্লেখ্য, ইরাকের রাজনীতিতে যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের প্রভাবের বিরোধিতার জন্য ব্যাপক জনপ্রিয় মুক্তাদা আল সাদর। গত অক্টোবরের নির্বাচনে সর্বোচ্চ আসন পায় তার দল। তবে অন্য শিয়া দলগুলোর সাথে বিরোধের জেরে সম্ভব হয়নি সরকার গঠন।
/এসএইচ

