Site icon Jamuna Television

আফগান কোচিং সেশনে দর্শন বদলাবে টাইগারদের?

ছবি: সংগৃহীত

পরীক্ষা-নিরীক্ষা তো কম হলো না, তবু যেন টি-টোয়েন্টিটা কীভাবে খেলতে হয় সেটিই বুঝে উঠতে পারছে না বাংলাদেশ। মঙ্গলবার (৩০ আগস্ট) শারজায় আফগানিস্তান যেন এক কোচিং সেশনই নিলো সাকিব বাহিনীর। কীভাবে প্রতিপক্ষকে চাপে ফেলতে হয়, স্লগ ওভারে রান ঠেকাতে হয় সেটি যেমন দেখালো, তেমনি ধীর লয়ে শুরু করে আপাতদৃষ্টিতে চাপে পড়া ম্যাচ কীভাবে টি-টোয়েন্টি সুলভ ব্যাটিং করে অনায়াসে বের করে নেয়া যায় সেটিও চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিলো মোহাম্মদ নবর দল।

টস জিতে বাংলাদেশের দুই ওপেনার মাঠে নামার মিনিট পাঁচেক পরই যেন টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটের কথা ভুলে গেলো বাংলাদেশ। বাজেভাবে বোল্ড হয়ে ফিরে যাওয়া নাঈম শেখ করলেন ৮ বলে ৬। তাতেও হয়তো দর্শকরা অতটা অখুশি নন কারণ অপর ওপেনার এনামুল বিজয়ের ইনিংসটি যে ছিল নেহাতই টেস্ট সুলভ! ১৪ বলে ৫ রান করা বিজয় যখন ফিরলেন, দুই ওপেনার স্ট্রাইকরেটের গড় না করে যদি যোগও করা হয় সেটি টেনেটুনে ১০০ পার হয়!

এরপর সাকিব, মুশফিকের ফিরে যাওয়ার পর রিয়াদ, আফিফদের টিপিক্যাল ব্যাটিংয়ে ইনিংস মেরামত করা যায়নি, পাল্টা আক্রমণ তো চলে গিয়েছিল কল্পনার বাইরে! তবে ব্যতিক্রম ছিলেন মোসাদ্দেক হোসেন। দ্রুত লয়ে তুলতে থাকেন রান। তবে অর্ধশতকের হাতছানিতেই কিনা শেষ দু’ওভারে একটিও বাউন্ডারি হাঁকানোর চেষ্টা দেখা যায়নি এই অলরাউন্ডারের ব্যাটে। তাতে দলের সংগ্রহ যেমন লড়াইয়ের পুঁজি পায়নি, মোসাদ্দেকও পাননি ফিফটি।

আফগানদের শুরুটাও ছিল ধীর লয়ে। নবী যখন ফেরেন, ৪২ বলে আফগানিস্তানের প্রয়োজন ছিল ৬৬ রান। আপাতদৃষ্টিতে ম্যাচে তখন ফেভারিট ছিল বাংলাদেশই। তবে চিত্রটা বদলে দিলেন দুই জাদরান–নাজিবুল্লাহ ও ইব্রাহিম। বিশেষ করে নাজিবুল্লাহ। মাত্র ১৭ বলে ৪৩ রান করে অপরাজিত থাকলেন তিনি। ইব্রাহিমের সঙ্গে তার জুটি অবিচ্ছিন্ন ছিল ৩৩ বলে ৬৯ রানে। টি-টোয়েন্টির মারদাঙ্গা ব্যাটিংয়ের নিচে পিষে যাওয়ার পরও এ থেকে কবে শিক্ষা নেবে বাংলাদেশ?

গত বছরের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে এই মাঠেই দুই ম‍্যাচে সমালোচনায় পড়েছিল বাংলাদেশের একাদশ। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম ম‍্যাচে বাড়তি পেসার দরকার ছিল, দল নেমেছিল তিন স্পিনার নিয়ে। যেখানে চার পেসার খেলিয়ে সফল হয়েছিল শ্রীলঙ্কা। আবার ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তিন স্পিনার দরকার ছিল, সেই ম‍্যাচ খেলতে নেমেছিল দুই স্পিনার নিয়ে। এবারের একাদশও প্রশ্নবিদ্ধ হয়েই রইলো। বিশেষ করে নাসুমের অন্তর্ভুক্তি কতটা দরকার ছিল ব্যর্থ হয়ে সেটিই প্রমাণ করলো পেসাররা। সাকিব আল হাসানের সাথে মোসাদ্দেক ও মেহেদী হাসানের মিতব্যয়ী বোলিংয়ের বিপরীতে মোস্তাফিজ-তাসকিন-সাইফুদ্দিনদের বেধড়ক পিটুনি খাওয়া চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিলো শুধু পারফরমেন্সই নয়, পরিকল্পনায়ও ভুল ছিল টাইগারদের।

আফগানদের কোচিং সেশন লঙ্কানদের বিপরীতে কাজে লাগাতে না পারলে প্রথম রাউন্ডেই মিইয়ে যাবে হেডকোচ বিহীন টাইগারদের গর্জন, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।

আরও পড়ুন: ম্যাচ হারের পেছনে টপ অর্ডারের ব্যর্থতাকেই দায়ী করলেন সাকিব

Exit mobile version