Site icon Jamuna Television

বাসা থেকে নিখোঁজ গৃহবধূ, মাকে খুঁজছে ৬ সন্তান

গত এক সপ্তাহ ধরে নিখোঁজ খুলনা নগরীর মহেশ্বরপাশা উত্তর বণিক পাড়ার রহিমা বেগম।

খুলনা নগরীর মহেশ্বরপাশা উত্তর বণিক পাড়ার নিজ বাসা থেকেই খোঁজ মিলছে না গৃহবধূ রহিমা বেগমের। ছয় সন্তান গত সাতদিন ধরে তাদের মাকে খুঁজছেন হন্যে হয়ে। করেছেন মাইকিং-সংবাদ সম্মেলন। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি ওঝা-ফকিরদেরও দারস্থ হচ্ছেন তারা, দায়ের হয়েছে মামলাও।

জানা গেছে, গত শনিবার (২৭ আগস্ট) রাত আনুমানিক দশটায় টিউবওয়েলের পানি আনতে দোতলা থেকে নিচে নামেন গৃহবধূ রহিমা বেগম। দীর্ঘসময় পরও তিনি ঘরে না ফেরায় শুরু হয় খোঁজাখুঁজি। এক পর্যায়ে নলকূপের পাশের ঝোঁপঝাড়ে রহিমা বেগমের ব্যবহ্নত ওড়না ও স্যান্ডেল দেখতে পান তার স্বামী ও ভাড়াটিয়ারা।

সেই রাতেই মাকে খুঁজতে আত্মীয়-স্বজন, আশপাশসহ সম্ভাব্য সব জায়গায় যান সন্তানরা। জিডি করা হয় নগরীর দৌলতপুর থানায়। কিন্তু মায়ের খোঁজ মেলেনি ছয়দিনেও।

নিখোঁজ রহিমা বেগমের মেজো মেয়ে মাহফুজা আক্তার বলেন, আমরা থানায় গেছি র‍্যাবের কাছেও গেছি। তারা সবাই আমাদেরকে আশ্বাস দিচ্ছেন যে-খোঁজা হচ্ছে। কিন্তু আমরা এখনও কোনো সন্ধান পাচ্ছি না।

জানা গেছে, ২০১৯ সালে রহিমা বেগমের পরিবারের কাছ থেকে চার দশমিক আট ছয় শতক জমি কেনেন স্থানীয় গোলাম কিবরিয়া ও হেলাল শরীফ। কিন্তু মালিকানা বুঝিয়ে দেয়া নিয়ে শুরু হয় দ্বন্দ্ব। মামলা-পাল্টা মামলা, হুমকি-ধামকির ঘটনা ঘটে, একাধিকবার। সন্তানদের অভিযোগ প্রতিবেশি গোলাম কিবরিয়া তার মায়ের ওপর হামলা চালালে এক বছর আগেই অন্যত্র চলে যান তারা।

নিখোঁজ রহিমা বেগমের সেজো মেয়ে মাহমুদা আক্তার বললেন, ঝামেলা হয়েছিল বলে আমরা মাকে নিয়ে অন্য বাসায় শিফট হয়ে গিয়েছিলাম।

তবে নিখোঁজের পরিবারের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন গোলাম কিবরিয়া ও হেলাল শরীফ।

হেলাল শরীফ বলেন, সিসিটিভি ক্যামেরায় দেখা গেছে যে রাত ৯টা ৪৯ মিনিটে রহিমা বেগম তার নিজ বাসার সামনের স্ল্যাবের ওপর এসে দাঁড়ান। সেখানে এক মিনিট অবস্থান করার পর তিনি তার বাসায় ঢোকেন। তারপরে তিনি আর সামনে আসেননি, আসলে তো সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ নিশ্চয়ই থাকতো।

গোলাম কিবরিয়া বলেন, আল্লাহর রহমতে আমাদেরকে এ পর্যন্ত বিপদে ফেলতে পারে নাই। এখন আমাদের ধারণা যে উনি নিজেই আত্মগোপন করেছেন।

এদিকে ঘটনার রাতের একটি ফুটেজ এসেছে যমুনা টেলিভিশনের কাছে। ফুটেজে দেখা যায় রাত ৯টা ৪৯ মিনিটের সময় রাস্তার সামনে কিছু সময় দাড়িয়ে থাকেন রহিমা বেগম। এরপর ভেতরে চলে যান তিনি। পরদিন সকাল পর্যন্ত তাকে আর দেখা যায়নি। তাহলে রহিমা বেগমকে কে বা কারা কোন স্থান থেকে নিয়ে গেছে? নাকি স্বেচ্ছায় গেছেন আত্মগোপনে? অনুসন্ধানে নেমেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

খুলনার দৌলতপুর থানার ওসি নজরুল ইসলাম ফোনে যমুনা নিউজকে বলেন, তাকে অপহরণ করা হতে পারে আবার তিনি নিজেও আতগোপনে যেতে পারেন। আমরা এখনও ব্যাপারটা ক্লিয়ার না, তাকে উদ্ধার করার আপ্রাণ চেষ্টা করছি। উদ্ধারের পর তার বক্তব্য শুনলে আমরা ব্যাপারটা সম্পর্কে পরিষ্কার ধারনা পাবো।

ঘটনা যা-ই হোক, দ্রুতই উদঘাটন হবে রহিমা বেগম অন্তর্ধানের রহস্য এমনটাই প্রত্যাশা এলাকাবাসীর।

/এসএইচ

Exit mobile version