Site icon Jamuna Television

দীর্ঘ রানখরা ও পিচ্ছিল হাতেই কি সমাপ্ত টি-টোয়েন্টিতে মুশির যাত্রা?

মুশফিকুর রহিম। ছবি: সংগৃহীত

আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন উইকেটরক্ষক-ব্যাটার মুশফিকুর রহিম। সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নিজেই। তবে ঘরোয়া টি-টোয়েন্টির পাশাপাশি ওয়ানডে ও টেস্ট খেলা চালিয়ে যাবেন মুশফিক। উইকেটের সামনে দীর্ঘ রানখরা ও পেছনে এক জোড়া পিচ্ছিল হাতই মূলত মুশফিকের ১৫ বছর ২৭৭ দিনের দীর্ঘ টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে ছেদ টানার পেছনে ভূমিকা রেখেছে।

৩ নভেম্বর ২০১৯, দিল্লির অরুন জেটলি স্টেডিয়ামে মুশফিকুর রহিমের অপরাজিত ৬০ রানের ইনিংসে ভারতের বিপক্ষে প্রথম টি-টোয়েন্টি জয় পায় বাংলাদেশ। কিন্তু এই ফরম্যাটে ৩ বছর আগে মুশির ব্যাটের সেই ঝলক যেন এখন সোনালি অতীত। ওই ম্যাচের পর মাত্র একটি ফিফটি পেয়েছেন মুশি। ছোট ফরম্যাটে ‘মিস্টার ডিপেন্ডেবল’ অনেকটা যেন বোঝা হয়ে গেছেন টিম ম্যানেজমেন্টের জন্য! সবশেষ ৫ ম্যাচে তার পারফরমেন্স বলছে সে কথাই। ৪, ১, ৩০, ১ ও ০-এই হলো মুশির ইনিংস। ৫ ম্যাচে তার নামের পাশে মাত্র ৩৬ রান। গড় সাতের ঘরে, আর স্ট্রাইকরেট ৯২.৩০।

ব্যর্থতার এশিয়া কাপেও হতাশ করেছেন এই উইকেটরক্ষক ব্যাটার। দুই ম্যাচে করেছেন মাত্র ৫ রান। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ফেলেছেন কুশল মেন্ডিসের গুরুত্বপূর্ণ ক্যাচও। এছাড়া উইকেটরক্ষক হিসেবে মুশফিকের সংগ্রামী পারফরমেন্স বেশ ক’বারই বিপদে ফেলেছে বাংলাদেশকে। এছাড়া, ২০১৯ বিশ্বকাপে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে বাঁচা-মরার ম্যাচের এক গুরুত্বপূর্ণ সময়ে কেন উইলিয়ামসনের রানআউট দৃষ্টিকটুভাবে মিস করেন মুশফিক। বিশ্বকাপে থেকে বাংলাদেশের বিদায় নেবার জন্য অনেকেই সেই রানআউট মিসকে এখনও দোষারোপ করেন।

টি-টোয়েন্টিতে ঘুরে দাঁড়াতে মরিয়া এখন বিসিবি। আর তাই, অক্টোবরে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ও নিউজিল্যান্ডের ট্রাই নেশন সিরিজের জন্য দলে বড় বদল আনছেন নির্বাচকরা। যেখানে ‘ব্যর্থ’ সিনিয়রদের ছেঁটে ফেলার গুঞ্জনও চলছিল বিসিবি পাড়ায়। ঠিক সেই মুহূর্তেই আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি থেকে অবসরের ঘোষণা দিলেন মুশফিকুর রহিম। রোববার (৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট দিয়ে নিজের সিদ্ধান্তের কথা জানান দেন মুশি। তবে ঘরোয়া টি-টোয়েন্টিতে তিনি খেলবেন বলে জানিয়েছেন।

ক্রিকেটের নবীনতম এই সংস্করণ থেকে অবসর নেয়ায় ২০২৩ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপ ও টেস্ট ক্রিকেটের প্রতি আরও মনোযোগী হতে পারবেন মুশফিক, এমনটাই আশা করা যাচ্ছে। টি-টোয়েন্টিতে টানা তিন বছরের ব্যর্থতার মাঝেও একই সময়ে অন্য দুই ফরম্যাটে দারুণ ধারাবাহিক ছিলেন মুশফিক। ২০১৯ সালের নভেম্বর থেকে একটি ডাবল সেঞ্চুরিসহ টেস্টে ৩টি সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন তিনি। ১৫ টেস্টে তার গড়ও বিশ্বমানের, ৫৪.৮১। ২০টি ওয়ানডেতে ৪২.১২ গড়ে রান তোলার সেই সাক্ষ্যই দেয়। মিস্টার ডিপেন্ডেবলের পরিকল্পনা সফল হবে, এমনটা ধারণা করতে তাই মোটেও কষ্ট হচ্ছে না। সেঞ্চুরি, ডাবল সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে এই দুই ফরম্যাটে বাংলাদেশের আস্থার প্রতীক হয়ে থাকুক তিনি, রইলো সেই শুভ কামনা।

আরও পড়ুন: মুশফিকের বিদায়ে কী বলছেন সতীর্থরা

/এম ই

Exit mobile version