Site icon Jamuna Television

নির্বাচন কমিশন যেনো সাজানো নির্বাচন করতে পাঁয়তারা চালাচ্ছে: জিএম কাদের

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও বিরোধী দলীয় উপনেতা জনবন্ধু গোলাম মোহাম্মদ কাদের (ফাইল ছবি)।

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও বিরোধী দলীয় উপনেতা জনবন্ধু গোলাম মোহাম্মদ কাদের বলেছেন, নির্বাচন কমিশন যেনো সাজানো নির্বাচন করার পাঁয়তারা চালাচ্ছে। সংলাপে প্রায় সব রাজনৈতিক দলই ইভিএমের বিরোধীতা করেছে।

বুধবার (৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যানের বনানীর কার্যালয়ে উপস্থিত সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নে খোলামেলা কথা বলেন জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের।

এ সময় জিএম কাদের বলেন, জাতীয় পার্টিতে কোনো সংকট নেই। কোনো ভাঙনের মুখেও পড়বে না জাতীয় পার্টি। প্রতিপক্ষ হিসেবে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি বারবার জাতীয় পার্টির ক্ষতি করতে চেয়েছে। যারা পার্টি ছেড়ে গেছে তারা কেউ শক্তিশালী সংগঠন হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতে পারেনি। এভাবে কেউ চলে গেলেও জাতীয় পার্টি দুর্বল হবে না।

সাংবাদিকদের আরেক প্রশ্নের জবাবে জিএম কাদের বলেন, আমি জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হতে চাই না। জাতীয় পার্টি এখন ভালোভাবে চলছে। বেগম রওশন এরশাদ আমাদের অত্যন্ত শ্রদ্ধাভাজন। আমার অসুস্থতা বা দুর্ঘটনার সংবাদে তিনি বারবার ফোন করে খোঁজ খবর নিয়েছেন।

তিনি আরও বলেন, প্রধান পৃষ্ঠপোষক হিসেবে তিনি আমাদের পরামর্শ দিতে পারেন। কিন্তু তা বাস্তবায়ন করা বা না করা জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যানের এখতিয়ার।

তিনি আরও বলেন, জাতীয় পার্টির শীর্ষ পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ বেগম রওশন এরশাদের সাথে যোগাযোগ করেছেন। শীর্ষ পর্যায়ের নেতৃবৃন্দের মনে হয়েছে, তিনি কারো কথায় বা চাপে কাউন্সিল ঘোষণা করতে বাধ্য হয়েছেন। তার অসুস্থতার সুযোগ নিয়ে বাইরের কিছু মানুষ বেগম রওশন এরশাদের নাম ব্যবহার করে ভিন্ন অ্যাজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে চাচ্ছে। যারা জাতীয় পার্টির কেউ না, কেউ হয়তো ছিলো অনেক আগে। জাতীয় পার্টিতে সুর্নিদিষ্ট অভিযোগে কাউকে কাউকে পার্টি থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে, তারা বেগম রওশন এরশাদকে অপব্যবহার করতে অপচেষ্টা চালাচ্ছে।

সাংবাদিকদের অপর এক প্রশ্নের জবাবে জিএম কাদের বলেন, জাতীয় পার্টির সংসদীয় দল তাদের সিদ্ধান্ত লিখিতভাবে জাতীয় সংসদের স্পিকারকে জানিয়েছেন। এখন বিধি অনুযায়ী স্পিকার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন।

নির্বাচনী জোট গঠনের বিষয়ক এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নির্বাচনের পূর্ব মুহূর্তে দলীয় ফোরামে আলোচনা করে জোট গঠনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। তখনকার বাস্তবতা ও সাধারণ মানুষের প্রত্যাশার কথা বিবেচনা করে জোট গঠনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে জাতীয় পার্টি। তবে, এখন আমরা তিনশো আসনেই নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছি।

জিএম কাদের বলেন, ১৯৯০ সালের পর থেকে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি বারবার ক্ষমতায় গেলেও মানুষের প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ হয়েছে। দুটি দলের নীতি ও আদর্শে অনেক ভিন্নতা আছে কিন্তু চরিত্রগত কোনো অমিল নেই। আওয়ামী লীগের বিপরীতে বিএনপি ক্ষমতায় এলেও একই চিত্রই দেখা যাবে। দুর্নীতি, টেন্ডাবাজী ও দলবাজী শুরু হবে। দেশের মানুষের ভাগ্যের কোনো পরিবর্তন আসবে না।

তিনি বলেন, প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক শক্তিকে এখন শত্রু মনে করা হয়, এটা রাজনৈতিক সংস্কৃতি হতে পারে না। আমরা চাই, সবাই যার যার রাজনীতি করবে, কিন্তু দেশ ও জাতীয় স্বার্থে সবাই এক হয়ে কাজ করবে। আমরা দেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতির পরিবর্তন চাই।

তিনি বলেন, দেশে মেগা প্রকল্প চালু হচ্ছে ঠিকই কিন্তু একটিও সময়মতো শেষ হচ্ছে না। সময় বাড়াতে হচ্ছে, আবার ব্যয়ও বেড়ে যাচ্ছে কয়েক গুণ। একই সাথে যখন দেখা যায় শুধু সুইস ব্যাংকেই ৪ লাখ কোটি টাকা পাচার হচ্ছে বাংলাদেশ থেকে তখন দুর্নীতির বিষয়ে আর কোনো প্রশ্নের অবকাশ থাকে না। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলেই সবচেয়ে বেশি দুর্নীতি হয়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

/এসএইচ

Exit mobile version