Site icon Jamuna Television

দৃষ্টিশক্তি হারানোর আগেই সন্তানদের নিয়ে বিশ্বভ্রমণে কানাডিয়ান দম্পতি

ছবি: সংগৃহীত

দৃষ্টিশক্তি হারাচ্ছে সন্তানরা। আক্রান্ত বিরল জেনেটিক রোগে। তাই, চোখের দৃষ্টি থাকতে থাকতেই ছেলে-মেয়েদের বিশ্ব দেখাতে বের হয়ে পড়েছেন কানাডার এক দম্পতি। সন্তানদের ভবিষ্যৎ জীবনের প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবিলায় দক্ষ করে তুলতেই তাদের এই পরিকল্পনা। একই সাথে সুন্দরতম মুহূর্তগুলো দিয়ে সন্তানদের স্মৃতি পরিপূর্ণ রাখতে চান এডিথ লিমে ও সেবাস্তিয়ান পেলেতিয়ের।

সিএনএন’র এক প্রতিবেদনে বলা হয়, কানাডিয়ান দম্পতি এডিথ লিমে ও সেবাস্তিয়ান পেলেতিয়ের। চার সন্তানসহ পরিবারের ছয় সদস্য মিলে ঘুরে বেড়াচ্ছে বিশ্বের নানা প্রান্তে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ঘাটলেই নজর কাড়ে এই পরিবারের সেসব ছবি।

তাদের সেসব দেখে কোনোভাবেই বোঝার উপায় নেই আনন্দঘন এসব মুহূর্তের পেছনে রয়েছে বিষাদময় এক বাস্তবতা। বিরল জেনেটিক ডিজঅর্ডার রেটিনাইটিস পিগমেন্টোসায় আক্রান্ত তাদের তিন সন্তান। যার ফলে ধীরে ধীরে কমবে তাদের দৃষ্টিশক্তি। মাঝবয়স নাগাদ বরণ করবে অন্ধত্ব। এখনো এই রোগের কোনো চিকিৎসা ব্যবস্থা বের হয়নি।

বড় মেয়ে মিয়ার তিন বছর বয়সের সময় তার চোখে সমস্যার বিষয়টি খেয়াল করেন এডিথ-সেবাস্তিয়ান। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের কাছে নিলে জানা যায় বিরল এই রোগের কথা। পরবর্তীতে তাদের জন্ম নেয়া তিন সন্তানের মধ্যে দু’জনই জেনেটিক এই রোগে আক্রান্ত হয়।

চিকিৎসকরা পরামর্শ দেন, শিশুরা অন্ধ হয়ে যাওয়ার আগে যতটা সম্ভব তাদের স্মৃতিতে আশপাশের বিষয়বস্তু গেঁথে দিতে, যাতে চোখে না দেখলেও কল্পনায় সেসবের মাঝে নিজেকে আবিষ্কার করতে পারে। তখন থেকেই সন্তানদের দক্ষ করে তুলতে মনোযোগী হন এই দম্পতি। ছবি কিংবা টেলিভিশন স্ক্রিনে দেখানোর চেয়ে বাস্তব অভিজ্ঞতাকেই বেছে নেন তারা। সিদ্ধান্ত নেন বিশ্ব ভ্রমণের।

আর্থিক প্রতিকূলতাসহ নানা বাধা পেরিয়ে চার সন্তানকে নিয়ে দেশ ভ্রমণ করে বেড়াচ্ছেন এডিথ-সেবাস্তিয়ান। চলতি বছরের মার্চ থেকে শুরু করে এরইমধ্যে ঘুরে ফেলেছেন নামিবিয়া, তানজানিয়া, জাম্বিয়া, তুরস্ক, মঙ্গোলিয়া ও ইন্দোনেশিয়ায়।

কঠোর বাস্তবতার মাঝেও অলৌলিক কোনো সুখবরের আশা ছাড়েননি এই দম্পতি; মনে সুপ্ত বাসনা করুণ পরিণতি থেকে মুক্তি পাবে সন্তানরা।

/এনএএস

Exit mobile version