Site icon Jamuna Television

বিষণ্নতা কি রোগ? কী করতে পারে বিষণ্নতা?

ডিপ্রেশন বা বিষণ্নতাকে রোগ হিসেবে দেখতেই নারাজ অনেকে। অথচ এটি নিতে পারে ভয়াবহ রূপ, রোগীকে ঠেলে দিতে পারে মৃত্যুর দিকে। চিকিৎসকরা বলছেন, মনের অসুখের চিকিৎসা ঠিকঠাক মতো না হলে মৃত্যুই অন্তিম পরিণতি। পরিসংখ্যানও বলছে, বিশ্বে প্রতি ৪০ সেকেন্ডে ১ জন আত্মহত্যা করেন এই বিষণ্নতা থেকেই।

নানা কারণেই মানুষের মানসিক স্বাস্থ্য আক্রান্ত হয় অবসাদ, হতাশা আর দুশ্চিন্তায়। উপায় খুঁজতে গিয়েও যখন মেলে না মুক্তির পথ, রোগী হয়ে ওঠে জীবনবিমুখ। এমনকি কেউ কেউ বেছে নেয় আত্মহত্যার পথ।

যে কেউ যখন তখন পড়ে যেতে পারেন বিষণ্নতার ফাঁদে। সমাজের নানা প্রতিবন্ধকতায় চিকিৎসা করাতেই পড়তে হয় বিপাকে। এই যেমন, সন্তানকে মানসিক হাসপাতালে চিকিৎসা করাচ্ছেন, অথচ পরিচয়টা গোপনই রাখতে হচ্ছে। কারণ বিষন্নতা এ সমাজে রোগের স্বীকৃতি পায় না, পেয়ে যায়, পাগলামির অপবাদ।

শিশু বয়সে বিয়ে হয়ে যায় এক কিশোরীর। ঐ বয়সেই নেয় তালাক। পরে কৈশোরে পড়ে এক সহপাঠীর প্রেমে। এক পর্যায়ে বাড়ি ছেড়ে লুকিয়ে বিয়ে করে তাকে। পরিবারের চাপে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয় ঐ ছেলে। তারপর দুইবার আত্মহননের চেষ্টা করে মেয়েটি। এখন তার ‘বিষণ্নতার’ রোগের চিকিৎসা চলছে মানসিক হাসপাতালে।

জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক ডা. হেলাল উদ্দিন আহমেদ বলছেন, তরুণ বয়সেই সবেচেয় বেশি লোক ডিপ্রেশনে আক্রান্ত হয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসেবে, বিশ্বে প্রতি ৪০ সেকেন্ডে একজন মারা যাচ্ছেন বিষাদগ্রস্ততায়। বাংলাদেশেও সংখ্যাটা কম নয়। ডিপ্রেশনে ভুগে দেশে প্রতি বছর কমপক্ষে ১০ হাজার মানুষ আত্মহননের পথে পা বাড়ান। বিষণ্নতায় ভোগা প্রতি ১শ জনে ৩ জনই আত্মহত্যাকেই মনে করেন মুক্তির একমাত্র পথ।

জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. জহির উদ্দিন, বিষণ্নতার এক পর্যায়ে গিয়ে রোগী নিজের এবং আশপাশের মানুষের ওপর আস্থা হারিয়ে ফেলে। তারা মনে করে, জীবনের কোনো অর্থ নেই। ‌ওই পর্যায়ে গিয়েই অনেকে আত্মহত্যর পথ বেছে নেয়।

চিকিৎসকরা বলেন, শরীরের মতো মনের যত্নও জরুরি। তবে সেটা অনেকেই করেন না। আর মনের অসুখ মানেই পাগলামি নয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, যে কোনো আত্মহত্যার পেছনেই বিষণ্নতার প্রভাব থাকে।

/এডব্লিউ

Exit mobile version