Site icon Jamuna Television

‘স্বপ্নসারথিদের জন্য আমরা জিততে চাই’

সাফ নারী ফুটবল প্রতিযোগিতায় প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়ন হওয়ার লক্ষ্য নিয়ে সোমবার (১৯ সেপ্টেম্বর) মাঠে নামছে বাংলাদেশ ও নেপাল। নেপালের দশরথ স্টেডিয়ামে এদিন বিকেল সোয়া পাঁচটায় মুখোমুখি হবে দুই দল।

আসরে উড়ন্ত পারফরমেন্স বাংলাদেশের। এখন পর্যন্ত চার ম্যাচে গোল দিয়েছে ২০টি। বিপরীতে অক্ষত আছে গোলপোস্ট। জমাট রক্ষণের সাথে তীব্র আক্রমণের ফায়দা তুলে হারিয়েছে শক্তিশালী ভারতকেও। এবার নেপালকে হারিয়ে অধরা শিরোপা জয়ের হুঙ্কার অধিনায়ক সাবিনার।

ফেসবুকে দেয়া এক স্ট্যাটাসে সাবিনা আক্তার লেখেন, ২য় বারের মতো সাফ উইমেনস চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে বাংলাদেশ। প্রথমবার ফাইনাল খেলেছি ২০১৬ সালে। সেবার ভারতের বিপক্ষে আমরা হেরে যাই। পাঁচবার সাফের মঞ্চে এসে একবার রানার্সআপ, তিনবার সেমিফাইনাল এবং একবার গ্রুপপর্ব থেকে বিদায় নিয়েছি আমরা।

স্ট্যাটাসে লেখেন, আলহামদুলিল্লাহ, এবার মাঠে দারুণ ছন্দে রয়েছি। ফাইনালে প্রতিপক্ষ স্বাগতিক নেপাল। স্বাগতিক হিসেবে ফাইনাল খেলা কিংবা স্বাগতিক দলের বিপক্ষে ফাইনাল খেলা সবসময় রোমাঞ্চকর। এছাড়াও এবারের ফাইনাল ম্যাচটি কিছুটা ভিন্ন। বহুদিন পর সাফ পাবে নতুন কোনো চ্যাম্পিয়ন দেশ। আর তাই এবার রোমাঞ্চকর একটি ফাইনাল ম্যাচ হতে যাচ্ছে, এতে কোনো সন্দেহ নেই।

এই ফুটবলার আরও লেখেন, বাংলাদেশ পুরুষ জাতীয় ফুটবল দলের হাত ধরে ২০০৩ সালে দক্ষিণ এশিয়ার শ্রেষ্ঠত্ব পেয়েছিল বাংলাদেশ। এখনো আমরা সেই গল্প শুনি। বাংলাদেশ ফুটবলের বড় সাফল্যের মহাকাব্যে সেটি উজ্জ্বলতম অংশ হিসেবে বিবেচিত হয়। এবার আমাদের জেতার সময় এসেছে। আমাদের দলের প্রতিটি সদস্য এটি জিততে মুখিয়ে আছে।

আবেগগণ ভাষায় সাবিনা বলেন, যারা আমাদের এই স্বপ্নকে আলিঙ্গন করতে উৎসুক হয়ে আছেন, সেই সকল স্বপ্নসারথিদের জন্য এটি আমরা জিততে চাই। নিরঙ্কুশ সমর্থনের প্রতিদান আমরা দিতে চাই। ছাদখোলা চ্যাম্পিয়ন বাসে ট্রফি নিয়ে না দাঁড়ালেও চলবে, সমাজের টিপ্পনীকে একপাশে রেখে যে মানুষগুলো আমাদের সবুজ ঘাস ছোঁয়াতে সাহায্য করেছে, তাদের জন্য এটি জিততে চাই। আমাদের এই সাফল্য হয়তো আরো নতুন কিছু সাবিনা, কৃষ্ণা, মারিয়া পেতে সাহায্য করবে। অনুজদের বন্ধুর এই রাস্তাটুকু কিছু হলেও সহজ করে দিয়ে যেতে চাই।

পাহাড়ের কাছাকাছি স্থানে তার বাড়ি উল্লেখ করে সাবিনা লেখেন, পাহাড়ি ভাইবোনদের লড়াকু মানসিকতা, গ্রাম বাংলার দারিদ্র ও খেটে খাওয়া মানুষদের হার না মানা জীবনের প্রতিটি পরত খুব কাছাকাছি থেকে দেখা আমার। ফাইনালে আমরা একজন ফুটবলারের চরিত্রে মাঠে লড়বো এমন নয়, এগারো জনের যোদ্ধাদল মাঠে থাকবে, যে দলের অনেকে এই পর্যন্ত এসেছে বাবাকে হারিয়ে, মায়ের শেষ সম্বল নিয়ে, বোনের অলংকার বিক্রি করে, অনেকে পরিবারের একমাত্র আয়ের অবলম্বন হয়ে।
আমরা জীবনযুদ্ধেই লড়ে অভ্যস্ত। দক্ষিণ এশিয়ার শ্রেষ্ঠত্বের জন্য শেষ মিনিট পর্যন্ত লড়ে যাবো। জয়-পরাজয় আল্লাহর হাতে। তবে বিশ্বাস রাখুন, আমরা আমাদের চেষ্ঠায় কোনো ত্রুটি রাখবো না ইনশাআল্লাহ। দোয়া করবেন আমাদের জন্য।

/এমএন

Exit mobile version