Site icon Jamuna Television

ছেলে ও বাবাকে কান ধরিয়ে ওঠবস, টাকা নিয়েও ভিডিও ফাঁস করলেন আ. লীগ নেতা

লালমনিরহাট প্রতিনিধি:

লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার সরকারেরহাটে বাল্যবিয়ের অভিযোগ তুলে ঘটক, বর ও তার বাবাকে প্রকাশ্যে কান ধরিয়ে ওঠবস করানোর ভিডিও ভাইরাল করার অভিযোগ উঠেছে রাকিবুল হাসান আশরাফী সোহেল নামের স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে।

সোমবার (১৯ সেপ্টেম্বর) এ ঘটনার বিচার চেয়ে লালমনিরহাটের পাটগ্রাম থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী। অভিযুক্ত রাকিবুল হাসান পাটগ্রাম উপজেলার জোংড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, গত ১৬ সেপ্টেম্বর (শুক্রবার) বিয়ের চূড়ান্ত দিনে কনে অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় দুই পরিবারের মধ্যে আলোচনা হয়, মেয়ে প্রাপ্তবয়স্ক হলে তাদের বিয়ে সম্পন্ন করা হবে। তবে রাকিবুল হাসান আশরাফী সোহেল সেখানে গিয়ে বরসহ সবাইকে আটক করেন। সেখানে গিয়ে বর, বরের বাবা ও ঘটককে কান ধরিয়ে ওঠবস করান সোহেল। সেই দৃশ্য তিনি নিজের ফোনেও ভিডিও করে রাখেন।

পরে তাদের কান করিয়ে ওঠবস করার ভিডিও ছড়িয়ে দেয়রা কথা বলে হুমকি দিয়ে ৩০ হাজার টাকা দাবি করেন সোহেল। সম্মান বাঁচাতে শনিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বাধ্য হয়ে সোহেলকে ৩০ হাজার টাকা দেন বরের বাবা। কিন্তু টাকা নেয়ার পরও তিনি ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেন। মুহূর্তেই ভাইরাল হয়ে যায় সেটি।

এ ঘটনায় বিচার চেয়ে ১৯ সেপ্টেম্বর রাকিবুল হাসান আশরাফী সোহেলকে অভিযুক্ত করে পাটগ্রাম থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন বরের বাবা।

বাদী বলেন, ক্ষমতার জোরে আমাদের আটক করে সোহেল অনেক অপমান করেছেন। এক পর্যায়ে তিনি সবার সামনে আমাদের কান ধরিয়ে ওঠবস করিয়েছেন। পরে সেই ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার কথা বলে টাকাও নিয়েছন। এর পরেও তিনি সেটি ভাইরাল করে দেন। এখন সবাই ভিডিওটি দেখে আমাদের বাজে কথা বলছেন। এতে আমাদের মাসহানি হয়েছে। তাই থানায় অভিযোগ দিয়েছি।

তবে অভিযুক্ত রাকিবুল হাসান আশরাফী সোহেল বলেন, ছেলে ও মেয়ে দুজনের বয়স কম। বাল্যবিয়ে থেকে রক্ষার জন্য বর ও কনে পক্ষের মুরব্বিদের সঙ্গে কথা বলে বর পক্ষের বিরুদ্ধে আইনের আশ্রয় নেওয়ার কথা বলেছি। এসময় তারা ভয়ে নিজেরাই কান ধরে ওসবস করতে থাকেন। তখন আমি তাদের ভিডিও করেছি এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছেড়ে দিয়েছি। তবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছেড়ে দেয়ার ব্যাপারটি তার অনুচিত হয়েছে বলে স্বীকার করেন তিনি।

এ বিষয়ে অভিযোগপ্রাপ্তির কথা স্বীকরা করে পাটগ্রাম থানার ওসি ওমর ফারুক বলেন, অভিযোগ তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পাটগ্রাম উপজেলা নিবাহী অফিসার নাজমুল হক সুমন বলেন, ১৬ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ১২টার দিকে সোহেল নামের একজন আমাকে মোবাইল করেছিল বাল্য বিয়ের বিষয়ে। তাকে থানায় আইনের আশ্রয় নিতে বলেছি। এরপর আর কথা হয়নি। তিনি যদি বর, বরের বাবা ও ঘটককে কান ধরে ওঠবস করান এবং সেটি ভিডিও করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেড়ে দিয়ে থাকেন, সেটি ঠিক করেননি।

/এডব্লিউ

Exit mobile version