Site icon Jamuna Television

ইরানে অস্থিরতা; হিজাব পুড়িয়ে প্রতিবাদ করছেন নারীরা

বিবিসি থেকে নেয়া হিজাব পোড়ানোর ছবি।

হিজাব না পরায় এক তরুণীকে আটক এবং পরে পুলিশি হেফাজতে তার মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত ইরানের রাজপথ। পোশাকের স্বাধীনতার দাবিতে, হিজাবে আগুন ধরিয়ে বিক্ষোভ করেছেন দেশটির অনেক নারী। এমনকি মাশা আমিনির মৃত্যুর ঘটনায় নিজেদের চুল কেটে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন অনেকেই। একাধিক শহরে নিরাপত্তা বাহিনীর সাথে সহিংসতাও হয়েছে। কমপক্ষে ৫ জনের মৃত্যুর খবর জানিয়েছে স্থানীয় গণমাধ্যম। আন্দোলন ছড়িয়েছে দেশের বাইরেও। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও চলছে নিন্দা-সমালোচনার ঝড়। খবর বিবিসির।

‘হিজাব আইন’ এ আটকের পর ইরানের নৈতিকতা পুলিশের হেফাওতে রহস্যজনক মৃত্যু হয় ২২ বছর বয়সী মাশা আমিনির। আর তাই আগুনে হিজাব ছুঁড়ে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন ইরানের নারীরা। পোশাকের স্বাধীনতার দাবি তাদের। এমনকি চুল কেটেও প্রতিবাদ জানাচ্ছেন অনেকেই। নিজেদের চুল কাটার ভিডিও প্রকাশ করছেন অনেকেই। শহর থেকে শহরে হাজারো মানুষের ভিড় প্রতীকী কর্মসূচিতে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও চলছে প্রতিবাদের ঝড়।

রাজধানী তেহরান ছাড়িয়ে বিক্ষোভ ছড়িয়েছে শহরে শহরে। ‘হিজাব আইন’ পরিবর্তনের দাবিতে সোচ্চার আন্দোলনকারীরা। নিরাপত্তা বাহিনীকেও দেখা গেছে মারমুখি ভূমিকায়। এলোপাতাড়ি গুলি চালানো হয় বলে দাবি বিক্ষুব্ধদের। তবে মাত্র একজনের মৃত্যুর কথা স্বীকার করেছে দেশটির প্রশাসন। বিক্ষোভকে কাজে লাগিয়ে দেশে অসন্তোষ ছড়ানোর চেষ্টা করছে স্বার্থান্বেষী মহল- এমন দাবিও করেছে তেহরান।

ব্যাপক বিক্ষোভ হয়েছে ইরানের বাইরেও। তুরস্ক, কানাডা, জার্মানিসহ অনেক স্থানে হয় প্রতিবাদ কর্মসূচি। এদিকে, মাহশা আমিনির মৃত্যুর ঘটনায় নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানিয়েছে জাতিসংঘ।

পুলিশ স্বাভাবিক মৃত্যু বলে দাবি করলেও, পরিবার বলছে অসুস্থতার কোনো লক্ষণই ছিল না মাহশার। থানায় নেয়ার পথে তার মাথায় আঘাত করা হয় বলে দাবি মানবাধিকার সংস্থাগুলোর।

জাতিসংঘ মানবাধিকার সংস্থা ইউএনএইচসিআর এর মুখপাত্র রাভিনা শ্যামদাসানি বলেন, মাশার মাথায় লাঠি দিয়ে আঘাতের তথ্য পেয়েছি। জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থা এ ঘটনায় নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে। নির্যাতনের অভিযোগসহ পুরো বিষয়টি দ্রুত ও সুষ্ঠুভাবে খতিয়ে দেখা উচিত। তার পরিবার যেনো ন্যায়বিচার পায় তা নিশ্চিত করতে হবে।

প্রসঙ্গত, ১৯৭৯ সালে ইরানে সংঘটিত ইসলামি বিপ্লবের পর থেকেই দেশটিতে বাধ্যতামূলক করা হয় নারীদের হিজাব পরা। ইরানের নৈতিকতা বিষয়ক পুলিশ সরাসরি তদারকি করে বিষয়টি। মঙ্গলবার (১৩ সেপ্টেম্বর) হিজাব আইনের আওতায় আরও অনেকের সাথে আটক হন মাশা আমিনি। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, মোরাল পুলিশের সাথে বাকবিতণ্ডার একপর্যায়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে যান মাশা। তিনদিন কোমায় থাকার পর হাসপাতালে মৃত্যু হয় তার।

/এসএইচ

Exit mobile version