Site icon Jamuna Television

‘ঠিকমতো’ হিজাব না পরায় পুলিশ হেফাজতে মৃত্যু, এখনও উত্তপ্ত ইরান

হিজাব ‘ঠিকমতো’ না পরায় আটক নারীর পুলিশি হেফাজতে মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে এখনও বিক্ষোভে উত্তাল ইরান। সেখানকার নিরাপত্তা বাহিনীও রয়েছে মারমুখী ভূমিকায়। রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, সহিংসতায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭ জনে। তবে গতকাল পর্যন্ত মাত্র একজনের মৃত্যুর কথা স্বীকার করেছে দেশটির প্রশাসন।

বুধবারও (২১ সেপ্টেম্বর) রাজধানী তেহরানসহ বিভিন্ন শহরে রাজপথে নামে হাজারও মানুষ। সরকারের বাধ্যতামূলক হিজাব আইনের প্রতিবাদ জানান তারা। নৈতিকতা পুলিশের হয়রানি বন্ধের দাবি জানান আন্দোলনকারীরা।

গত সপ্তাহে হিজাব আইনে আটক হন ২২ বছর বয়সী মাহশা আমিনি। থানায় নেয়ার পর হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ে যান মাহশা। তিনদিন কোমায় থাকার পর মৃত্যু হয় তার। পুলিশ স্বাভাবিক মৃত্যু বলে দাবি করলেও, পরিবার বলছে অসুস্থতার কোনো লক্ষণই ছিল না মাহশার। থানায় নেয়ার পথে তার মাথায় আঘাত করা হয় বলে দাবি মানবাধিকার সংস্থাগুলোর।

এ ঘটনায় আন্দোলন ছড়িয়েছে দেশের বাইরেও। বুধবার নিউইয়র্কে জাতিসংঘ কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ করেন ইরানিরা। মাহশার মৃত্যুর ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানিয়ে বিক্ষোভ হয়েছে তুরস্ক এবং নেদারল্যান্ডসেও। মাহশা আমিনির মৃত্যুর ঘটনায় তদন্তের দাবি জানিয়েছে জাতিসংঘ।

বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, পোশাকের স্বাধীনতার দাবিতে হিজাবে আগুন ধরিয়ে বিক্ষোভ করেছেন দেশটির অনেক নারী। এমনকি মাহশা আমিনির মৃত্যুর ঘটনায় নিজেদের চুল কেটে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন অনেকে। একাধিক শহরে নিরাপত্তা বাহিনীর সাথে সহিংসতার কথায় জানায় সংবাদমাধ্যমটি।

জাতিসংঘ মানবাধিকার সংস্থা ইউএনএইচসিআর এর মুখপাত্র রাভিনা শ্যামদাসানি বলেন, মাশার মাথায় লাঠি দিয়ে আঘাতের তথ্য পেয়েছি। জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থা এ ঘটনায় নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে। নির্যাতনের অভিযোগসহ পুরো বিষয়টি দ্রুত ও সুষ্ঠুভাবে খতিয়ে দেখা উচিত। তার পরিবার যেনো ন্যায়বিচার পায় তা নিশ্চিত করতে হবে।

প্রসঙ্গত, ১৯৭৯ সালে ইরানে সংঘটিত ইসলামি বিপ্লবের পর থেকেই দেশটিতে বাধ্যতামূলক করা হয় নারীদের হিজাব পরা। ইরানের নৈতিকতা বিষয়ক পুলিশ সরাসরি তদারকি করে বিষয়টি। ১৩ সেপ্টেম্বর হিজাব আইনের আওতায় আরও অনেকের সাথে আটক হন মাশা আমিনি। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, মোরাল পুলিশের সাথে বাকবিতণ্ডার একপর্যায়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে যান মাশা।

/এডব্লিউ

Exit mobile version