Site icon Jamuna Television

অদিতাকে বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা: প্রাইভেট শিক্ষক রনির স্বীকারোক্তি

নোয়াখালী প্রতিনিধি:

নোয়াখালীর জেলা শহর মাইজদীর লক্ষীনারায়ণপুরে অষ্টম শ্রেণির স্কুলছাত্রী তাসমিয়া হোসেন অদিতাকে বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে প্রাইভেট শিক্ষক আবদুর রহিম রনি।

শনিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ১৬৪ ধারায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয় আসামি। একই দিন সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে নোয়াখালী পুলিশ সুপার (এসপি) মো. শহীদুল ইসলাম নিজ কার্যালয়ে প্রেস কনফারেন্সে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।

এসপি নিজ কার্যালয়ে প্রেস কনফারেন্সে বলেন, রনি নামে এক যুবকের কাছে প্রাইভেট পড়তো নোয়াখালী সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী অদিতা। হঠাৎ করে অদিতা তার কাছে প্রাইভেট পড়তে অনীহা প্রকাশ করে এবং নতুন শিক্ষকের কাছে প্রাইভেট পড়তে শুরু করে। এতে রনি নাখোশ হয়। এ বিষয়সহ অদিতার ব্যাপারে আরও বিস্তারিত জানার জন্য তাৎক্ষণিক রনিকে প্রথমে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়। তখন তার থুতনি ও ঘাড়ে নখের আঁচড়ের তাজা দাগ দেখতে পায়। নখের আঁচড়ের বিষয়ে তাকে জিজ্ঞাসা করা হলে সে একেক সময় একেক তথ্য দিয়ে পুলিশকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করে। আঁচড়ের ব্যাপারে তার থেকে কোনো সদুত্তর না পেয়ে তার বিষয়ে আরও সন্দেহ জোড়ালো হয়। তখন তাকে এ মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে ঘটনার রহস্য উদঘাটনের লক্ষে আদালতে সোপর্দ করে ১০ দিনের রিমান্ড চাওয়া হয়। আদালত রিমান্ড আবেদনের প্রেক্ষিতে তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করলে গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় তাকে রিমান্ডে নেওয়া হয়। রিমান্ডে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে রনি ঘটনার সাথে নিজের সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেন।

এসপি আরও বলেন, গত বৃহস্পতিবার (২২ সেপ্টেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টা থেকে দুপুর ১২টার মধ্যে অদিতার বাসায় যায় সাবেক কোচিং শিক্ষক রনি। বাসায় গিয়ে বন্ধ দরজা নক করলে অদিতা বাসার দরজা খুলে দেয়। তখন সে বাসায় প্রবেশ করে অদিতার সঙ্গে গল্পগুজব করে। গল্পগুজবের একপর্যায়ে রনি অদিতাকে জড়িয়ে ধরে চুমু দেওয়ার চেষ্টা করে এবং বিভিন্ন কারণে ব্যর্থ হয়। এরপর রাগান্বিত হয়ে অদিতা বিষয়টি সবাইকে জানিয়ে দেওয়ার হুমকি দেয়। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার ভয়ে রনি অদিতাতে বালিশ চাপা দিয়ে হত্যা করে। পরবর্তীতে রান্না ঘর থেকে ছোরা এনে অদিতার বাম হাতের রগ এবং গলা কেটে মৃত্যু নিশ্চিত করে হাতের বাঁধন খুলে দেয়। এরপর আসামি রনি ঘটনাকে ভিন্নখাতে রূপ দিতে ঘরের আলমিরা ও ওয়ারড্রবের জামা-কাপড়, কাগজপত্র ছড়িয়ে ছিটিয়ে রুমের দরজা লক করে এবং মূল ঘরের দরজা বাহির থেকে তালা লাগিয়ে পালিয়ে যায়। শনিবার দুপুরে ১৬৪ ধারায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে আসামি রনি এসব কথা বলেন।

জেডআই/

Exit mobile version