Site icon Jamuna Television

আলোচিত রহিমা বেগমকে ছোট মেয়ে আদরির জিম্মায় হস্তান্তর

খুলনা ব্যুরো:

খুলনায় কয়েকদিন ধরে নিখোঁজ থাকা আলোচিত সেই রহিমা বেগমকে তার ছোট মেয়ে আদরির জিম্মায় হস্তান্তর করেছেন আদালত। রোববার (২৫ সেপ্টেম্বর) রাতে আদালতে জবানবন্দি শেষে চিফ মেট্রোপলিটন আদালত-৪ এর বিচারক সারোয়ার আহমেদ এ নির্দেশ দেন। এর আগে, সন্ধ্যা ৬টার দিকে খুলনার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-২ এর বিচারক আল আমিনের কাছে জবানবন্দি দেন রহিমা বেগম। সেখানে তিনি দাবি করেছেন, জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে তাকে অপহরণ করা হয়েছিল।

বাদী পক্ষের আইনজীবী আফরুজ্জামান টুটুল বলেন, ভিকটিম আদালতকে তার অপহরণের বিষয়ে বিস্তারিত বর্ণনা দিয়েছেন। জানিয়েছেন, জমিজমা নিয়ে যাদের সাথে বিরোধ ছিল, মূলত তারাই তাকে অপহরণ করে চট্টগ্রামে নিয়ে যায়। সেখান থেকে তিনি ফরিদপুরে আসেন। মামলায় যাদের নাম রয়েছে তাদের মধ্যে ৪-৫ জন অপহরণের সাথে জড়িত বলে আদালতকে বলেছেন তিনি।

এর আগে, ফরিদপুরের বোয়ালমারি থেকে শনিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) রাতে মরিয়ম মান্নানের মা রহিমা বেগমকে জীবিত উদ্ধার করে পুলিশ। গত ১৭ সেপ্টেম্বর থেকে তিনি ফরিদপুরের বোয়ালমারির কুদ্দুসের বাড়িতে অবস্থান করছিলেন। কুদ্দুস এক সময় খুলনার জুট মিলে চাকরি করতেন এবং রহিমা বেগমের বাড়িতে ভাড়াটিয়া হিসেবে ছিলেন।

উল্লেখ্য, গত ২৭ আগস্ট রাত সাড়ে ১০টার দিকে পানি আনতে বাড়ি থেকে নিচে নামেন রাহিমা বেগম। তারপর থেকেই তিনি আর বাসায় ফেরেননি বলে দাবি করেন তার সন্তানরা। তাদের দাবি, ওই দিন মায়ের খোঁজে সেখানে গিয়ে তার ব্যবহৃত স্যান্ডেল, গায়ের ওড়না ও কলস রাস্তার ওপর পড়ে থাকতে দেখেন তারা। রাতে সম্ভাব্য সব স্থানে সন্ধান নেয়ার পর মাকে পাননি তারা। এরপর সাধারণ ডায়েরি ও পরে কয়েকজনের নাম উল্লেখ করে দৌলতপুর থানায় মামলা দায়ের করেন।

এ মামলার তদন্তকালে পুলিশ ও র‍্যাব গত ১২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৬ জনকে গ্রেফতার করে। এরা হলেন খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) প্রধান প্রকৌশল কার্যালয়ের সহকারী প্রকৌশলী মো. গোলাম কিবরিয়া, নিখোঁজ থাকা গৃহবধূর দ্বিতীয় স্বামী হেলাল হাওলাদার, দৌলতপুর মহেশ্বরপশা বণিকপাড়া এলাকার মহিউদ্দিন, পলাশ ও জুয়েল এবং হেলাল শরীফ।

এ অবস্থায় বাদীর আবেদনের প্রেক্ষিতে ১৪ সেপ্টেম্বর আদালত মামলাটির তদন্তভার পিবিআইয়ে পাঠানোর আদেশ দেন। এরপর প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়ে নথিপত্র ১৭ সেপ্টেম্বর বুঝে নেয় পিবিআই খুলনা। এখন এ মামলার তদন্ত করছেন পিবিআই পরিদর্শক আব্দুল মান্নান।

এরইমধ্যে গত ২২ সেপ্টেম্বর রহিমার মেয়ে মরিয়ম আক্তার ওরফে মরিয়ম মান্নান দাবি করেন, তার মায়ের লাশ তিনি পেয়েছেন। সেখানে ১০ সেপ্টেম্বর উদ্ধার হওয়া অজ্ঞাত পরিচয় এক নারীর লাশকে নিজের মা বলে শনাক্ত করেন তিনি। তিনি ডিএনএ প্রোফাইল করার জন্যও সম্মত হন। আজ ২৫ সেপ্টেম্বর ময়মনসিংহের আদালতে ডিএনএ প্রোফাইল করার আবেদন করার কথা ছিল। মাকে ফিরে পাওয়ার আর্জি জানিয়ে নানা মহলের সহমর্মিতা পেয়েছিলেন মরিয়ম। কিন্তু মায়ের লাশ নিয়ে বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রদানসহ নানা অসঙ্গতিপূর্ণ আচরণের কারণে সমালোচনার মুখে পড়েছেন তিনি। তার বিরুদ্ধে অসদাচরণের অভিযোগও তুলেছেন অনেকে।

এসজেড/

Exit mobile version