Site icon Jamuna Television

মা হওয়ার গল্পটা সহজ ছিল না খর্বকায় মাসুরার

মাসুরা ও তার মেয়ে মরিয়ম।

উচ্চতা আটত্রিশ ইঞ্চি, ওজন সাড়ে ১২ কেজি। এমন বিশেষ শারীরিক অবস্থা নিয়েই মা হয়েছেন ৩৩ বছর বয়সী মাসুরা। তার গর্ভজাত সুস্থ ও স্বাভাবিক মেয়েটি এখন তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ে। চিকিৎসকরা বলছেন, এমন খর্বাকৃতির মা খুব বিরল। রাজশাহী মেডিকেলের গাইনোকলজি বিভাগের চিকিৎসক নূর এ আতিয়া লাভলী বলেন, এশিয়ায় মাসুরাই সবচেয়ে খর্বাকৃতির মা।

মাসুরার বাড়ি, রাজশাহীর পবা উপজেলার বজ্রাপুর গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, মাসুরা এবং তার মেয়ে মরিয়ম হাত ধরে হাঁটছেন। শিশু মরিয়ম বলছে, সে তার মায়ের সাথে লুডু খেলতে পছন্দ করে। মাঝে মাঝেই সে তার মাকে হারিয়ে দেয়। প্রথম দেখায় দুজনের সম্পর্ক নিয়ে এক মুহূর্তের জন্য বিভ্রান্তিতে পড়তে পারেন অনেকেই।

তবে মাতৃত্বের শুরুর গল্পটা এই পরিবারটির জন্য মোটেও সহজ ছিলো না। মাসুরা জানালেন, ২০১৩ সালে গর্ভবতী হওয়ার পর থেকেই নানা শারীরিক জটিলতা শুরু হয় তার। বিশেষ করে চলাফেরা বেশ কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ে তার। তার ওপর দারিদ্র্য তো আছেই। তবে গর্ভাবস্থায় চিকিৎসা নিয়ে সচেতন ছিলেন মাসুরা এবং তার স্বামী মনিরুল ইসলাম।

শারীরিক বিশেষত্ব থাকায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকরাও আলাদা গুরুত্ব দিয়ে চিকিৎসা করেন তার। রাজশাহী মেডিকেলের গাইনোকলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. নূর এ আতিয়া লাভলী জানালেন, তারা নিজেদের সর্বোচ্চ দিয়ে মাসুরার মেডিকেল সাপোর্ট দিয়েছেন। এছাড়া পরীক্ষা-নিরীক্ষাও বিনামূল্যে করার ব্যবস্থা করেছিলেন তারা।

এখন শিশু মরিয়ম সুস্থ ও স্বাভাবিক থাকলেও মাসুরা প্রায়ই অসুস্থ থাকেন। শারীরিক সীমাবদ্ধতা উপেক্ষা করেই সংসার সামলান। অবশ্য স্বামী এবং মেয়ের সাহায্য পান তিনি। মাসুরার স্বামী মনিরুল ইসলাম ভ্যান চালিয়ে দিনে ১০০ থেকে ৪০০ টাকা আয় করেন। তা দিয়েই সংসার চলে তাদের।

/এডব্লিউ

Exit mobile version