Site icon Jamuna Television

ফরিদপুরে প্রতারকের খপ্পরে অবসরপ্রাপ্ত বিজিবি সদস্য ও ২ ব্যবসায়ী

ফরিদপুর প্রতিনিধি:

প্রতারণার শিকার হয়ে সর্বস্ব খুয়িয়ে মিথ্যা মামলার আসামি হয়ে ঘুরছেন দুই ব্যবসায়ী ও অবসরপ্রাপ্ত এক বিজিবি সদস্য। সোমবার (৩ অক্টোবর) বেলা ১১টায় ফরিদপুর প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন করেন ব্যবসায়ী প্রদীপ কুমার সাহা ও মেহেদী হাসান মামুন এবং অবসরপ্রাপ্ত বিজিবি সদস্য আবুল কালাম তালুকদার। অভিযুক্ত ওই প্রতারকের নাম হাবিবুর রহমান ওরফে ডা. রাকিব হাসান শুভ। প্রতারণার মামলায় তিনি এখন জেল হাজতে রয়েছেন।

সংবাদ সম্মেলনের লিখিব বক্তব্যে আবুল কালাম তালুকদার জানান, রাকিব হাসান শুভ ওরফে হাবিবুর রহমান আমার বাসার পাশে ভাড়া থাকতেন। তিনি নিজেকে চিকিৎসক, বড় ঠিকাদার, পুলিশ ও জেলখানার রেশন সাপ্লাইয়ার পরিচয় দিতেন। অবসরপ্রাপ্ত এই বিজিবি সদস্য বলেন, রাকিব হাসান শুভ ওরফে হাবিবুর রহমান আমাকে তার ব্যবসার পরামর্শ দেন। অবসরে থাকায় আমিও তার কথায় রাজি হয়ে যাই। চুক্তিবদ্ধ হয়ে তাকে চেকের মাধ্যমে ৬৯ লক্ষ ৬৫ হাজার টাকাও দেন আবুল কালাম তালুকদার। তিনি বলেন, টাকা দেয়ার পরেই জানতে পারি সে একজন প্রতারক। তখন টাকা চাইলে ফেরত তো দেনই না বরং রাজবাড়ী আদালতে আমাদের নামে মিথ্যা মামলা দায়ের করেন। এই টাকাটা আমার জীবনের শেষ সম্বল ছিল। আমি এখন নিঃস্ব। খেয়ে না খেয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছি।

লিখিত বক্তব্যে জানানো হয়, পুলিশের রেশনে ডাল সাপ্লাই দেয়ার জন্য গীতা ফুড ইন্ডাস্ট্রিজের মালিক প্রদীপ কুমারের কাছ থেকে ১৮ লক্ষ টাকার ডাল বাকিতে নিয়ে কোনো টাকা পরিশোধ করেননি রাকিব হাসান শুভ। পরে তার কাছে আরও ডাল চাইলে তাকে তা দেয়া হয় না। এ নিয়ে তার বিরুদ্ধেও মিথ্যা মামলা দায়ের করেছেন তিনি। একইভাবে ব্যবসায়ী মেহেদী হাসান মামুনের কাছ থেকেও ব্যবসার কথা বলে মোট ৫০ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, রাকিব হাসান শুভর আসল নাম হাবিবুর রহমান। তিনি একসময় বাওনারা হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক ছিলেন। সেখানে স্কুল ফান্ড থেকে ২৩ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করায় তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়। পরে তিনি নাম পরিবর্তন করে ডা. রাকিব হাসান শুভ হন। চিকিৎসাবিদ্যায় কোনো পড়াশোনা না করেও নিজেকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক পরিচয় দিতেন তিনি। এমনটি তিনি চিকিৎসক পরিচয় দিয়ে ফরিদপুর সদর হাসপাতালের এক সেবিকাকে বিয়ে করেছেন বলে দাবি করেন তারা।

ভুক্তভোগী তিন জন বাদী হয়ে প্রতারক রাকিব হাসান শুভ ওরফে হাবিবুর রহমানের বিরুদ্ধে ফরিদপুর কোতয়ালী থানায় মামলা দায়ের করেছে। সেই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ পরিদর্শক মাহাবুবুল করীম জানান, প্রাথমিক তদন্তে রাকিব হাসান শুভর বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। গত শনিবার তাকে আটক করেছি, সে এখন জেলে রয়েছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সে একজন প্রতিষ্ঠিত প্রতারক, অনেকের কাছ থেকেই প্রতারণা করে টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন, এমনকি ও চিকিৎসক না হয়েও ভোটার আইডি কার্ডে নামের আগে ব্যবহার করেছেন। প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে বিয়ের কথাও জানেন এই পুলিশ কর্মকর্তা।

/এডব্লিউ

Exit mobile version