Site icon Jamuna Television

পদ্মা নদীতে বিশ্বকাপের উন্মাদনায় উৎসবমূখর পরিবেশ

প্রদ্যুৎ কুমার সরকার, মাদারীপুর

দেখলে মনে হবে রাশিয়ার কোন এক নদীতেই চলছে বিশ্বকাপ ফুটবলের উদযাপন। অতিথিদের নজর কাড়তে চলছে বিভিন্ন প্রদর্শনী। প্রতিটি নৌযানে উড়ছে বিভিন্ন দলের পতাকা। ভেসে যাচ্ছে নৌযান, যাত্রীরাও নিজ দলের পতাকা দেখে খুশি প্রকাশ করছে।  যে কোন একটি নৌযানে চোখ পড়লেই দেখা যাবে পতাকা আর পতাকা। শুধু নৌযানই নয় পুরো ঘাট এলাকাই সাজানো হয়েছে মনোরম সাজে।  শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ি নৌ ঘাটে গেলেই দেখতে পাবেন এমন বিশ্বকাপ উন্মাদনা।

মাঝ নদীতে চলমান এসব নৌযানের চূড়ায় প্রিয় দলের পতাকা টানিয়েছেন শ্রমিকরা। এমনকি দেখা গেছে  শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ি নৌরুটের  এক একটি নৌযানে একাধিক দলের পতাকাও রয়েছে। শুধু লঞ্চ, স্পীডবোটেই নয় ফেরিতেও টানানো হয়েছে প্রিয় দলের পতাকা। তবে প্রিয় দলের খেলা দেখতে পারছেন না অধিকাংশ নৌ শ্রমিকরা। ঈদের আগে পরে যাত্রী পরিবহন করতে গিয়ে ও নৌযানগুলোতে টিভি না থাকায় বঞ্চিত হচ্ছেন খেলা দেখা থেকে। তবুও তাদের প্রিয় দলের প্রতি সমর্থনের এ উম্মাদনা উৎসবমূখর পরিবেশের সৃষ্টি করেছে পদ্মা নদীজুড়ে।

বিশ্বকাপ উম্মাদনায় সারা বিশ্বই এখন বুদ হয়ে আছে। সমর্থকদের নানান কর্মকাণ্ডে চমকিত হচ্ছে মানুষ। কিন্তু খেলা দেখার সুযোগ বেশি একটা না পেয়েও সমর্থকদের উৎসব পালনের এ দৃশ্য আসলেই বুঝিয়ে দিচ্ছে ফুটবল বিশ্বকাপ কতটা বাঙ্গালীর হৃদস্পন্দন বাড়িয়ে দিয়েছে। এরই উৎকৃষ্ট উদাহরন হতে পারে ব্যস্ততম শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ি রুটের নৌযান ও শ্রমিকরা। এ রুটের চলমান ২০ টি ফেরি, ৮৭টি লঞ্চ ও দেড় শতাধিক স্পীডবোটের হাজারো কর্মকর্তা,কর্মচারী ও শ্রমিকরা ঈদের আগে- পরের যাত্রীদের পার করতে ব্যস্ত থাকায় টিভির সামনে যেতে তাদের সময় হচ্ছে না।  কিন্তু প্রিয় দলের খেলা দেখা হোক আর নাই হোক তাই বলে কি আর সমর্থনের কমতি আছে। খেলা না দেখতে পাওয়ার কষ্ট থেকে তাইতো প্রিয় দলকে সমর্থন করে পতাকা টানিয়েছেন নৌযানগুলোর চূড়ায়।

আর্জেন্টিনা, ব্রাজিলের পতাকার প্রাধান্য পেলেও রয়েছে অন্যান্য দলের পতাকাও। এক একটি নৌযানে একাধিক দলের পতাকাই প্রমাণ করে কতটা মুখিয়ে তারা খেলা নিয়ে। শুধু নৌযানই নয় পুরো ঘাট এলাকাই সাজানো হয়েছে মনোরম সাজে।

লঞ্চ শ্রমিক বেলাল হোসেন বলেন, আমাদের লঞ্চে কোন টিভি নেই। আর ঘাটে যাত্রীদের অনেক চাপ থাকায় ঠিকমত খেলাও দেখতে পারিনা। কিন্তু প্রিয় দলের সর্মথন করি। তাই যে যার প্রিয় দলের পতাকা টানিয়েছি। আর প্রিয় দল জিতলেই উল্লাস করি সকলে মিলে।

ফেরি স্টাফ নজরুল মিয়া বলেন, ফেরি সার্ভিসের জন্য চব্বিশ ঘণ্টাই নদীতে থাকতে হয়। তাই প্রিয় দল থাকলেও খেলা দেখার সুযোগ পাই না।

স্থানীয় রাসেল হোসেন বলেন, বিশ্বকাপ ফুটবল নিয়ে আমাদের এ নৌরুট যেন উৎসবের এক সাগরে রুপ নিয়েছে। ঘাট এলাকাসহ প্রতিটি ফেরি, লঞ্চ, স্পীডবোটে ব্রাজিল, আর্জেন্টিনাসহ বিভিন্ন দলের পতাকা টানিয়ে উল্লাসে প্রতিনিয়তই মাতেন সমর্থকরা।

বিআইডব্লিউটিসি কাঁঠালবাড়ি ঘাট ম্যানেজার আঃ সালাম বলেন, বিশ্বকাপ ফুটবল শুরু হওয়ার পর থেকে সারাদেশের ন্যায় আমাদের এই শিমুলীয়া কাঁঠালবাড়ি নৌরুটেও বিশ্বকাপ উন্মাদনা শুরু হয়েছে। এই নৌরুটের প্রতিটি ফেরি, লঞ্চ, স্পীডবোটসহ সকল নৌযানেই বিভিন্ন দলের পতাকা টানানো হয়েছে। পুরো পদ্মা নদী যেন বর্নিল সাজে সেজেছে।

কাঁঠালবাড়ি ঘাট ট্রাফিক ইন্সপেক্টর উত্তম শর্মা বলেন, বিশ্বকাপ শুরু হওয়ায় এ নৌরুটে যেন নতুন করে উৎসব শুরু হয়েছে। পুরো নৌরুটে ফুটবলপ্রেমীরা বিভিন্ন দেশের পতাকা টানিয়ে বর্নিল সাজে সাজিয়ে রেখেছে।

Exit mobile version