Site icon Jamuna Television

 নদীর ভাঙনে একদিনে ঘর হারালো ১০ পরিবার

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি 

কুড়িগ্রামে ধরলা নদীর করাল গ্রাসে একদিনে ১০টি পরিবার গৃহহীন হয়েছে। গৃহহীন পরিবারগুলো মাথা গোজার ঠাঁই না পেয়ে খোলা আকাশে অবস্থান করছে। গত এক সপ্তাহ ধরে ভারী বৃষ্টিপাত এবং উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলের কারণে ধরলা নদীর পানি হু-হু করে বৃদ্ধি পাচ্ছে। তীব্র স্রোতে ভাসিয়ে নিয়ে যাচ্ছে আবাদি জমি, গাছপালাসহ বাড়ী-ঘর।

বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় জেলা প্রশাসন মঙ্গলবার দুপুরে জিএ-এনজিও প্রতিনিধি ও সাংবাদিকদের নিয়ে জরুরী বৈঠকও করেছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের সূত্র মতে মঙ্গলবার সকাল ৬টায় ধরলা নদীর পানি বিপদসীমার ৬২ সে.মি. নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। এছাড়াও চিলমারী পয়েন্টে ব্রহ্মপূত্রের পানি ২২দশমিক ২২ (ডেঞ্জার লেভেল ২৩.৭০), নুনখাওয়া পয়েন্টে ২৪ দশমিক ২৭ সে.মি (ডেঞ্জার লেভেল ২৬.৫০), তিস্তার পানি কাউনিয়া পয়েন্টে ২৭ দশমিক ৮০ সে.মি (ডেঞ্জার লেভেল ২৯.২০) এবং ধরলা নদীর পানি ব্রিজ পয়েন্টে ২৫ দশমিক ৮৮ সে.মি (ডেঞ্জার লেভেল ২৬.৬০) প্রবাহিত হচ্ছে।

মঙ্গলবার সকালে সদর উপজেলার হলোখানা ইউনিয়নের চর সারডোব গ্রামে গিয়ে দেখা যায় ধরলা নদীর তীব্র ভাঙন। প্রায় দেড় কিলোমিটার পাকা সড়কের অর্ধেকাংশ নদীগর্ভে চলে গেছে। বাকীটা এখন হুমকির মুখে। নদী তীরবর্তী ভাঙন কবলিত পরিবারগুলো বাড়ীঘর সরাচ্ছে। চোখে মুখে হা-হুতাশ। চারদিকে বাড়ছে পানি কোথাও মাথা গোঁজার ঠাঁই নেই।

এদিকে কুড়িগ্রাম-ফুলবাড়ী সড়কের চর সারডোব ও ছাটকালুয়া এলাকায় পাকা সড়কটির অর্ধেকাংশ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। পুরো এলাকা ঘুরে দেখা গেছে নদী তীরবর্তী মানুষগুলোর আহাজারি! বাড়ি ভাঙলে কোথায় যাবে এনিয়ে রয়েছে দুশ্চিন্তায়। এ পর্যন্ত প্রায় ১৫টি বাড়ি সরিয়েছে। বেশিরভাগ লোকজন বাঁধে আশ্রয় নিয়েছে। গত বন্যায় বাঁধের তিনটি জায়গা ভেঙে যাওয়ায় সেদিক দিয়ে যেভাবে পানি ঢুকছে তাতে বাঁধে আশ্রয় নেয়াও নিরাপদ মনে হচ্ছে না।

চর সারডোব গ্রাসে মঙ্গলবার বাড়ি সরিয়েছে তবারক আলী (৮০), মালেকা (৩৫), লাভলী (৪০), মোর্শেদা (৩৬), এনদাল (৫০), আমির আলী (৪৮), রমজান (৫০). জাহিদুল (৪০), মকবুল (৬০) ও মজিদ (৬২)। এছাড়াও আরো অনেক পরিবার রয়েছে হুমকির মধ্যে।

এ ব্যাপারে কুড়িগ্রাম সদর উপজেরা নির্বাহী অফিসার আমিন আল পারভেজ জানান, ভাঙন কবলিতদের তালিকা করে তাদেরকে টিন সরবরাহ করার জন্য ইউপি চেয়ারম্যানকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

খবর পেয়ে জেলা প্রশাসক মোছা: সুলতানা পারভীন জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা টিমসহ ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেন। পরে দুপুরে জিও-এনজিও এবং সাংবাদিকদের নিয়ে এক মতবিনিময় সভায় তিনি জানান, জেলা প্রশাসন থেকে সর্বাত্মক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়াও ৭৫৯ মে.টন জিআর চাল, ৪ লাখ ১৭ হাজার টাকা এবং ২ হাজার শুকনো খাবার মজুদ করা আছে।

Exit mobile version