Site icon Jamuna Television

‘গণহত্যা’র প্রমাণ সংগ্রহ করেছে ইউক্রেন, তোলা হবে আন্তর্জাতিক বিচারিক আদালতে

রাশিয়ার বিরুদ্ধে ইউক্রেন যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ তুলে আসছে অনেক আগে থেকেই। তবে শুধু মৌখিক হুমকি দিয়েই থেমে নেই দেশটি, এবারে ‘গণহত্যা’র প্রমাণ হিসেবে যথাযথ সাক্ষ্য-আলামত সংগ্রহ করেছে ইউক্রেন। সংগ্রহ করা হয়েছে গণহত্যায় ব্যবহৃত হাতিয়ার। দেশটির খারকিভ অঞ্চলের গোপন স্থানে প্রায় ৫ হাজার রকেট, মিসাইলের ভাঙা অংশ, নিষ্ক্রিয় বোমা এবং ড্রোনের ভাঙা টুকরো রাখা হয়েছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে সেগুলো উপস্থাপন করাই মূল লক্ষ্য, এমনটা জানিয়েছেন ঘাঁটিটির দায়িত্বপ্রাপ্তরা। খবর এবিসি নিউজের।

এরই মধ্যে খারকিভ অঞ্চলে গোপন ঘাঁটির ছবিও প্রকাশ করেছে কিয়েভ। তবে সুরক্ষার স্বার্থেই অবলম্বন করা হচ্ছে কঠোর গোপনীয়তা। এ নিয়ে ইউক্রেনের বোমা নিষ্ক্রিয়করণ বিশেষজ্ঞ ইহর ওভশারুক বলেন, জনবহুল এলাকায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিসাধন করে ক্লাস্টার বা গুচ্ছ বোমা। কারণ বোমাটি লক্ষ্যবস্তুতে নিখুঁতভাবে আঘাত হানতে পারে না। তাই লক্ষ্যবস্তুর আশেপাশে থাকা অবকাঠামোগুলোতেও ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালায় এই বোমা। সে কারণেই, এটি নিষিদ্ধ। একটি রকেটের মধ্যেই থাকে ৩৭০ থেকে ৪০০টি ক্লাস্টার বোমা। রুশ সামরিক অভিযানের শুরুর দিকে খারকিভ অঞ্চলে হয়েছিল বোমা বৃষ্টি। সে সময় স্মার্চ রকেট সিস্টেমের মাধ্যমে ছোঁড়া হতো ক্লাস্টার।

ঘাঁটির রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তারা বলছেন, রাশিয়ার হামলা থেকে বাঁচিয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে সাক্ষ্য-প্রমাণগুলো তোলাই এখন তাদের মূল লক্ষ্য। ইহর ওভশারুক বলেন, আমরা শুধু ধ্বংসাবশেষ হিসাবে রেখেছি। নিষ্ক্রিয় করা বোমা বা রকেট সেই তালিকার বাইরে। এখানেই রয়েছে প্রায় ৫ হাজার রকেট, যেগুলো নিষ্ক্রিয় করা হয়েছে। যার মধ্যে, কালিবারের মতো রকেট কখনোই দেখেনি ইউক্রেন। এটা সাক্ষ্য-প্রমাণ জমা রাখার ঘাঁটি। আন্তর্জাতিক আদালতে এগুলো উপস্থাপন করা হবে।

বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন খারকিভের প্রকিকিউটর অফিসের মুখপাত্র দিমিত্রো শুবেনকো। তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরা খারকিভের এই ঘাঁটিতে এসে কাজ করতে পারেন। অথবা, তৃতীয় কোনো দেশে সরিয়ে নেয়া হতে পারে সাক্ষ্য-প্রমাণ। আমাদের প্রত্যাশা হলো, রুশ যুদ্ধাপরাধের এসব তথ্য লিপিবদ্ধ করার পর সেগুলো তোলা হবে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত আইসিসিতে।

এদিকে, রোববারই (২৩ অক্টোবর) রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধের ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে নতুন তথ্য প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ। হিসাব অনুসারে, আট মাসের সহিংসতায় প্রাণ গেছে ৬ হাজার ২৩৩ জন বেসামরিক ইউক্রেনীয়র। যার মধ্যে ৩৯৭ জনই শিশু। আহত হয়েছেন কমপক্ষে ৯ হাজার ৬৩৪ জন। তাছাড়া, বেআইনিভাবে বন্দি করা, নিযার্তন ও ধর্ষণের মতো মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগও উঠেছে রাশিয়ার বিরুদ্ধে।

এসজেড/

Exit mobile version