Site icon Jamuna Television

রাশিয়া-ইউক্রেনের পাল্টাপাল্টি হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত কয়েক হাজার সাধারণ মানুষ

একের পর এক রুশ ক্ষেপণাস্ত্র আর রকেট হামলায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে ইউক্রেনের বিভিন্ন অঞ্চল। বিদ্যুৎ, খাবার ও পানির তীব্র সংকটে টিকে থাকাই দায় হয়ে পড়েছে ইউক্রেনবাসীদের জন্য। এ অবস্থায় খেরসন-দোনেৎস্ক ছাড়ছেন সাধারণ মানুষ। হামলায় যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়ায় খারকিভের ১০টি শহরের হাজারো বাসিন্দা আটকা পড়েছেন। অন্যদিকে আত্মরক্ষার পাশাপাশি হামলা অব্যাহত রেখেছে ইউক্রেনও। দু’পক্ষের এ পাল্টাপাল্টি হামলায় প্রতিনিয়ত বলি হচ্ছে শতশত সাধারণ মানুষ, কোনো রকমে প্রাণে বেঁচে আছেন তারা।

মার্কিন সংবাদমাধ্যম রেডিও ফ্রি ইউরোপ/রেডিও লিবার্টির এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এ ভয়াবহ চিত্র। খারকিভের পেত্রোপাভলোভকা অঞ্চলের এক বাসিন্দা বলেন, কান পাতুন, প্রতিটি মিনিটে বিস্ফোরণের শব্দ শুনতে পাবেন। এলাকার কোনো বাড়ি, স্থাপনা কিছুই বাদ যায়নি রুশ ক্ষেপণাস্ত্র আর গোলার আঘাত থেকে। সবাই নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য এলাকা ছেড়েছে। আমাদের মতো দুই একটা পরিবার অবশিষ্ট আছে, আমরাও যেকোনো সময় চলে যাবো এখান থেকে।

খারকিভের মূল শহরের চিত্র আরও ভয়াবহ। রুশ হামলায় ধ্বংস হয়ে গেছে অঞ্চলটির বেশিরভাগ সেতু, বিধ্বস্ত হয়েছে রাস্তাঘাট। ফলে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজেও যেতে পারছেন না এখানকার বাসিন্দারা। প্রাণ হাতে নিয়েই খাবার, পানি ও বিদ্যুতের চরম সংকটের মধ্যেই আটকে থাকতে হচ্ছে তাদের।

দুর্বিষহ এ পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করে খারকিভের এক বাসিন্দা বলেন, টানা গোলাবর্ষণ চলছে। প্রায় সবাই বাংকারে আশ্রয় নিচ্ছি আমরা। ফলে খাবার ও পানির সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেছে। লোডশেডিং কোনো রকমে মানিয়ে নিতে পারলেও পানি এবং খাবারের সংকট সামাল দেয়া কঠিন হয়ে পড়েছে।

এদিকে, রুশ হামলার পাল্টা জবাব দিচ্ছে ইউক্রেনীয় বাহিনীও। রুশ অবস্থান লক্ষ্য করে চলছে গোলাবর্ষণ। ইউক্রেনের হামলা থেকে বাঁচতে খেরসন থেকে রুশ নিয়ন্ত্রিত ক্রাইমিয়ায় আশ্রয় নিচ্ছেন শত শত মানুষ। এসব গৃহহীনদের আশ্রয়ের ব্যবস্থা করছে রুশ কর্তৃপক্ষ। সেই অভিজ্ঞতা জানিয়ে এক নারী জানান, আমি এসেছি কাখোভকা থেকে। সেখানকার বাঁধ যেকোনো সময় উড়িয়ে দিতে পারে ইউক্রেনীয় বাহিনী। তাহলে ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়বো আমরা। তাই কোনো রকমে এলাকা ছেড়ে এসেছি।

রাশিয়ার বিরুদ্ধে গেরিলা হামলা অব্যাহত আছে উল্লেখ করে ইউক্রেনের এক সেনা কর্মকর্তা বলেন,আমরা গেরিলা হামলা অব্যাহত রেখেছি। এর পাশাপাশি রুশ সামরিক অবস্থান বিশেষ করে সেনা ক্যাম্পগুলো লক্ষ্য করে অব্যাহত আছে গোলাবর্ষণ। পশ্চিমা হইটজার এবং উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন ট্যাংক থেকেও হামলা চলছে।

বুধবার জাপোরিঝিয়া পাওয়ার প্ল্যান্ট সংলগ্ন এলাকাগুলোয় হামলা চালায় রাশিয়া। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে হাই ভোল্টেজ কেবল। এরপরই ইউক্রেনের জাতীয় গ্রিড থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির সংযোগ।

এসজেড/

Exit mobile version