Site icon Jamuna Television

প্রবেশপত্র না পাওয়ায় আলিম পরীক্ষা অনিশ্চিত মনিরার, কর্তৃপক্ষের গাফিলতির অভিযোগ

প্রবেশপত্র না পাওয়ায় রোববার (৬ নভেম্বর) অনুষ্ঠিতব্য আলিম পরীক্ষা দেয়া অনিশ্চিত রংপুরের কাউনিয়ার বাহাগিলী কেরামতিয়া সিনিয়র আলিম মাদ্রাসার শিক্ষার্থী মনিরা আক্তারের। ফরম পূরণের টাকা প্রদান এবং ফরম পূরণ করেও ক্লাসের সেরা এই শিক্ষার্থী বসতে পারছে না পরীক্ষায়। এনিয়ে পুরো পরিবারের পাশাপাশি মনিরা মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন।

মনিরা বেগম শুক্রবার (৪ নভেম্বর) বিকেলে জানান, আমি কাউনিয়ার সিংগারকুড়া আহমাদিয়া বালিকা দাখিল মাদরাসা থেকে মানবিক বিভাগে দাখিল পরীক্ষায় জিপিএ ৪.১৩ পেয়ে উত্তীর্ণ হই। এরপর বাহাগিলী কেরামতিয়া সিনিয়র আলিম মানবিক বিভাগে ভর্তি হয়ে প্রথম বর্ষ, দ্বিতীয় বর্ষে সর্বোচ্চ নম্বর পেয়ে মাদরাসায় ১ নম্বর অবস্থান অর্জন করি। এবং টেস্ট পরীক্ষায় সর্বোচ্চ নম্বর পেয়ে চূড়ান্ত পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। দুই মাস আগে মাদরাসায় গিয়ে ফরম পূরণ করি এবং ফরম পূরণ বাবদ ২০০০ টাকা প্রদান করি। বিদায় অনুষ্ঠানের জন্য ৪০০ টাকা প্রদান করি। এরমধ্যে ৬ দিন আগে প্রবেশ পত্র আসলে আমি অধ্যক্ষের কাছে গিয়ে প্রবেশপত্র দেখতে চাই। কিন্তু তিনি ৪০০ টাকা দাবি করেন। যথাসময়ে টাকা জোগাড় করতে না পারায় আমি আগে প্রবেশপত্র নিতে পারি নাই। বৃহস্পতিবার (৪ নভেম্বর) ৪০০ টাকা নিয়ে যাই মাদরাসায় যাই। এবং প্রবেশপত্র নিতে চাই। অধ্যক্ষ টাকা নিয়ে দেখেন আমার প্রবেশপত্র নাই। অনেক খোঁজাখুঁজি করে অধ্যক্ষ আমাকে জানান, আমার প্রবেশপত্র আসেনি।’

মনিরা জানান, আমি এখন কীভাবে রোববার থেকে পরীক্ষা দিবো। অধ্যক্ষ আমার জীবন নষ্ট করে দিয়েছেন। আমি পরীক্ষায় বসতে চাই। এজন্য যেমন করেই হোক আমার প্রবেশপত্র দেয়া হোক।

মনিরা ছোটবেলা থেকে কুর্শা ইউনিয়নের গোপাল গ্রামে নানা আলী আকবরের বাড়িতে থেকে পড়ালেখা করতো। মায়ের সাথে পিতার ডিভোর্স এবং মায়ের অন্যত্র বিয়ে হওয়ার কারণেই নানার বাড়িতেই থাকতো মনিরা।

মনিরার নানা আলী আকবর জানান, নাতনি প্রবেশপত্র না পাওয়ার খবর শুনে আমি মাদরাসায় যাই। তখন অধ্যক্ষ আমার হাত ধরে মাফ চান। কিন্তু তিনি মাফ চাইলেই তো হবে না। আমার নাতনীর পরীক্ষার ব্যবস্থা করতে না পারলে সে নিজের বড় ধরনের ক্ষতি করতে পারে। আমার নাতনি খুব ভেঙে পড়েছে।

কুর্শা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল মজিদ জানান, এ ঘটনা জানার পর ওই শিক্ষার্থীর ও তার নানাকে ডেকে তাদের কথা শুনেছি। পরে আমি পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ও উপ-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক এর সাথে কথা বললে তারা জানিয়েছে, যদি ফরম পূরণ করা হয় তাহলে প্রবেশপত্র পাবে। আর যদি না করে থাকে তাহলে এখন কিছুই করার নেই । এ ঘটনায় দায়ীদের বিরুদ্ধে সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেয়ার আহ্বান জানান তিনি ।

মাদরাসার প্রিন্সিপাল রফিকুল ইসলাম বলেন, আমি ঢাকায় বোর্ডে যাচ্ছি। পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের সাথে কথা বলে বিশেষ ব্যবস্থায় পরীক্ষায় বসানো যায় কিনা সেই চেষ্টা করবো।

একই ধরনের ঘটনার তথ্য পাওয়া গেছে বদরগঞ্জের মধুপুর ময়নাকুড়ি টেকনিক্যাল ইন্সটিটিউটের শিক্ষার্থী পলাশ চন্দ্রও পাননি প্রবেশ পত্র। তারও রোববার থেকে অনুষ্ঠিতব্য উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ অনিশ্চিত। বিষয়টি জানিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবু সাঈদকে লিখিত অভিযোগ করেছেন পিতা পবিত্র চন্দ্র। এ ব্যপারে প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ এলাহী বকসের সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করেও তাকে পাওয়া যায়নি। তবে পলাশের অভিযোগ ফরম পূরণ এবং টাকা দেয়া স্বত্বেও অধ্যক্ষের দোষেই তার প্রবেশপত্র আসেনি।

/এনএএস

Exit mobile version